১) ল্যাবরেটরীতে কৃত্রিম জীবনের সৃষ্টি
২) আসেন ভাই দুইটা মিনিট মরনের চিন্তা করি
কোনো একদিন সকালে উঠিয়া ভাবিতেছিলাম যে এই যে এত মুরগী গরু ছাগল খাইলাম, সব যদি রোজ কেয়ামতে আমার পিছে আইসা ডাকা শুরু করে তাইলে এক মুরগীর ডাকে পাগল হইয়া যাইতাম। কপাল ভালো শাক সব্জী ডাল ভাত ডাকে না, নাইলে এতচালের বস্তা আর বাইতে পারতাম না।
কবে জানি একজন জিগাইছিলো আদম হাওয়াই যদি আদি পিতা হয় তাইলে এত সাদা কালা নাটা ল্যাংড়া কইথ্থে আইলো? আরও প্রশ্ন উকি দেয়। এই যে মহাদেশের মাঝখানে মাঝখানে পুকুরের মতো এত বড্ডা বড্ডা মহাসাগর তো তারা সাতরাইলো কেমনে? এক কলম্বাসের আমেরিকা আবিস্কারের গল্প পরীক্ষার খাতায় লেখতে লেখতে পাগল হইয়া গেলো, তারা গেলো কই?
প্রথমে শুনলে মনে হইবো কথায় মারাত্মক যুক্তি বিদ্যমান। তখন স্মৃতি হাতড়াইয়া বেশ কিছু উত্তরও পাইলাম। বেশ যুক্তিসিদ্ধ কাহিনী বাইড়াইলো। যাই হোউক, পোস্টের উদ্দেশ্য ঐখান নিয়া। মাঝে মাঝে ভাবি দুনিয়ায় প্রানের স্পন্দন কেমনে হইলো? বিজ্ঞান কি কয়?
যদিও ধর্মে যা বলছে তা অনেকটা পুচকা কালের রূপ কথার মতোই মনে হয়। রূপকথা অবিশ্বাসের কোনো কারন দেখি না। যেহেতু বর্তমান হাসিনার সরকার দুর্নীতিতে রুপকথারেও হার মানায় সেহেতু ইদানিং রাক্ষস খোক্ষস দৈত্য দানোও বিশ্বাস করবার লাগছি।
দুনিয়াতে প্রানের স্পন্দন নিয়া ৭ খান মোটামোটি টপ চার্টের থিওরী আছে যেগুলান প্রতিষ্ঠিত। তার আগে মিলার নামের এক ভদ্রলোকের কাহিনী বলি।
৫০ এরআগে এই ইস্যু নিয়া কারো কোনো মাথা ব্যথা আছিলো না কারন মাথাই নাই, তাইলে থাকবো কেমনে। তো মিলার সাব আমাদের ভাষা আন্দোলনের বছর ১৯৫২ তে একটা গো+এষনা করলেন:
একটা কাঁচের ডা্ব্বায় মিথেন, জলীয় বাস্প, হাইড্রোজেন আর এমোনিয়া গ্যাস ভইরা এক সপ্তাহ ভইরা তার মধ্যে তড়িৎ চালনা করলো। এক সপ্তাহ পর দেখলো যে কাচের ডাব্বার গায়ে লাল লাল কি যেনো লাইগা আছে। পরে কাচের ডা্ব্বা থিকা সেই লাল জিনিস নিয়া পরীক্ষা কইরা দেখলো যে উহার মধ্যে ১১ প্রকারের এমাইনো এসিড নাচানাচি করতেছে। জীবন্ত কোষ বাচিয়া থাকবার জন্য মোটামোটি ২০ রকমের এমাইনো এসিডের দরকার। তো ঐখানে ১১ প্রকার বিদ্যমান।
এই এক্সপেরিম্যান্ট দুনিয়ার মেলা লোক নানা ভাবে করিয়া যখন একই রকম ফলাফল পাইলো তখন দুনিয়াতে জীবন পয়দা হইলো সেইটা নিয়া ভয়াবহ মাথা ব্যাথা শুরু কইরা দিলো। অনেকেই ভরা ময়দানে ওয়াজের টিকিট কাইটা হলরুমে ঢুইকা বয়ান দিতে গেলো দুনিয়া যখন পয়দা হইলো তখন এর বাতাসে কার্বন নাইট্রোজেন আর পানি হুড়াহুড়ি করতো আর তাগো উপ্রে দিনে দুপুরে ঠাডা পইরা এত গরু ছাগল হাস মুরগী কাহিনী শুরু হইলো।
যাই হোউক, এই গেলো মিলার মিয়ার মাথা ব্যথা কেমনে শুরু হইলো সেই কাহিনী, এখন শুনি সেই ৭ খান তত্ব যেইটার উপর ভিত্তি কইরা বিজ্ঞানীরা ধারনা দিবার পারছে যে জীবনে উৎপত্তির কেমনে দুনিয়াতে ব্যুৎপত্তি হইলো।
১) কারেন্টের ঠাডা
ভাষা আন্দোলনের বছরে মিলার মিয়ার এই কাহিনীর ১বছর পর যখন আমাগো ঢাকা শহর পুরাই উত্তাল, চারিদিকে আমার ভাইয়ের রক্ত নিয়া গান গাওয়া শুরু ঠিক সেই সময়ই মিলার সাহেব বইলা বসলেন, সব কিছুর মূলে এই ঠাডা। দুনিয়া তৈরী হবার পর যখন সে অস্হির আছিলো তখন তার বায়ুমন্ডলে এমোনিয়া মিথেন পানি ঘুর ঘুর করতো আর তখন ঘন্টায় ঘন্টায় ঠাডা পইড়া এই এমিনো এসিড আর তা থিকা আরও জটিল প্রোটিনের ব্লক পয়দা হইয়া জীবনের সৃ্ষ্টি করছে।
যদিও দুনিয়া বিশেষজ্ঞ জ্যোতির্বিদরা কইছে দুনিয়া যখন অস্হির আছিলো তখন বায়ুমন্ডলে হাইড্রোজেন দিয়া ভরা আছিলো, গবেষনায় তাই দেখা যায়। তয় আগ্নেগিরীর অগ্ন্যৎপাতের ফলে এইসব গ্যাস পয়দা হয় আর তার উপর ঠাডা যুগ করলে এইটা ইম্পসিবল না।
২) ক্যাদার গুষ্ঠী
প্যাক ক্যাদা আমি ডাজ নট লাইক। বৃষ্টি পড়লে ঘরের সামনে প্যাক ক্যাদা হয়, জুতার ভিত্রে পানি ঢুইকা মুজায় এমুন বাস বাইর হয় যে হেই বাস নিজের নাকে ঢুকলেই মাথা ঘুরে। কিন্তু সৃষ্টির রহস্য যে এই প্যাক ক্যাদার মধ্যেও আছে এইটা তো আর অস্বীকার করবার পারি না।
গ্লাসগো ইউনির অর্গানিক ক্যামিস্টের প্রফেসর গো+এষনা করে দেখছে যে এই প্যাক ক্যাদা, এর মধ্যেই জীবনের জন্য প্রথম মলিউকুল খানা তৈরী হইছে।এই প্যাক ক্যাদা মাটির উপরিপৃষ্ঠে এইসব জৈবিক পদার্থ সমূহকে একত্রিত কইরা প্রোটিনের ব্লক তৈরীতে স হায়তা করছে যা পরে ডিএনএর রূপ নিতে পারে। এইসব ডিএনএ গুলা পরে আরও জৈবিক পদার্থ সমূহরে একত্রিত কইরা নিজেদেরকে আরও সুসজ্জিত করে।
৩) গভীর সাগরের তলদেশ
এই তত্ব মতে সাগরের তলদেশে যেইখানে মাঝে মাঝে দুনিয়ার পেটের ভেতর থিকা হুট কইরা লাভা ছুইটা আসে, সেই লাভার মাল ম্যাটেরিয়ালের সাথে সাগরের তলদেশের সংমিশ্রনে হাইড্রোজেন-সমৃদ্ধ মলিউক্যুলের অবতারনা ঘটায়। পরে এই মলিউক্যলগুলা পাথুরে পরিবেশের খনিজ সমৃদ্ধ এলাকায় আর ক্রিয়া-বিক্রিয়া-খেলাধূলা-মারামারি করিয়া আদিম কোষের সৃষ্টি করে যার থেকে জীবনের উৎপত্তী ঘটে। ইদানিংকার বেশ কিছু গবেষনায় সাগরের গভীরতম তলদেশে এরকম খালি লাভার উপর বাস্তুসংস্হান নিয়া পুরা একটা আলাদা জগতের খোজ পাওয়া গেছে।
৪) ঠান্ডা-ঠান্ডা কুল-কুল
আইজ থিকা প্রায় ৩ বিলিয়ন বছর আগে সূর্য্যের এত চোটপাট আছিলো। এখনকার আলোর ৩ ভাগের ১ ভাগ আলো আছিলো, পুরা দুনিয়া বরফের তলে আছিলো। এই বরফের স্তরের দৈর্ঘ্য আছিলো ধরেন কয়েকশ ফুট। এই কয়েকশ ফুটের মোটা বরফের চাই তার নীচে থাকা পানিতে বিদ্যমান জৈবিক পদার্থ সমূহ সূর্য্যের আলোর অতিবেগুনী রশ্মী আর মহাজাগতিক গোলযোগ থিকা রক্ষা কইরা গেছে। এই ঠান্ডা পরিবেশ সম্ভবত এইসব জৈবিক পদার্থকে আরও বেশী সময় বাচায় রাখতে স হায়তা করছে এবং যার ফলে প্রয়োজনীয় ক্রিয়া বিক্রিয়া হইতে সাহায্য করছে।
৫) আরএনএ এর দুনিয়া
আরএনএ হইলো রাইবো নিউক্লিক এসিড। ভয় নাই, এই এসিডে হাত পুড়বো না, এইটা আপনের আমার দেহেই আছে।জেনেটিক ইন্জ্ঞিনিয়ারিং করতে গিয়া একখান জিনিস চোখে পড়ে যে ডিএনএ তৈরী করনের লিগা প্রোটিনের দরকার আবার এই প্রোটিন তৈরীর লিগা ডিএনএ এর দরকার। অনেকটা মুরগী ছাড়া আন্ডা হয় না, মুরগ ছাড়া মুরগী আন্ডাও দেয় না, আবার আন্ডা একলা একলাও পয়দা হয় না। সব কিছুর জন্য আগে দরকার একটা মোরগ।
তো এই তত্বের উপর ভিত্তি কইরা ডিএনএ আর প্রোটিনের লটকালটকি প্যাচ ছুটানোর জন্য আনা হইলো আরএনএ। এই আরএনএ এর ভিত্রে ডিএনএ এবং প্রোটিন গঠনের সব তথ্যই এনজাইম আকারে বিদ্যমান তাই এইটা দিয়া ডিএনএ আর প্রোটিন দুইটাই পয়দা করন যায়। পরে যখন ডিএনএ আর প্রোটিন পয়দা হইয়া যায় তখন আর আরএনএ এর দুনিয়ার দরকার নাই।এই আরএনএ আমাদের অনেক জীনের মধ্যে অনেকটা সুইচের মতো করে কাজ করে। এই ধরেন জীনের কোনোটা বন্ধ বা চালু করতে হইলে এই আরএনএ সেইটা করবার পারে। এখন তাইলে কুশ্চেন হইলো এই আরএনএ আইলো কইথ্থন?
অনেকেই বলছে এইটা আদিম পৃথিবীতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তৈয়ার হইছে আবার কেউ কেউ বলে এর জন্য পিএনএ বা টিএনএ তৈরি হইছে।
তয় কিছু দিন আগে নাস্তিকগো দেশের একটা ইউনিভার্সিটির কিছু আন্ডারগ্রাজুয়েট পুলাপান গ্রুপে ভাগ হইয়া সবাই আলাদা আলাদা প্রোটিন তৈরী করে ক্যামিকেল দিয়া। পরে সেই সেই প্রোটিন জোড়া দিয়া ঈষ্টের ডিএনএ তৈরী করে যেইটা পরে একটা মৃত ডিএন বিহীন কোষে ঢুকাইলে সেই মৃত কোষ আবার জীবন্ত রূপে বংশবৃদ্ধি শুরু করছে।
৬) অতি সাধারন সূচনা
আরএনএ এর ধারনা বড়ই ক্যাচালাযুক্ত। কিছু কিছু গবেষক কিছু কিছু গবেষনা কইরা বললো জীবনের শুরু হইছে কিছু কিছু ছোট ছোট মলিউকুল নিজেদের মধ্যে ক্রিয়া বিক্রিয়া প্রতিক্রিয়া করনের মাধ্যমে।এইটা হইতে পারে ক্যাপসুল সদৃশ্য কোনো একটা কোষের আদি রূপের মাধ্যমে যেটা কোষের মেমব্রেনের মাধ্যমে আবদ্ধ অবস্হায় ছিলো। পরে এই সব ছোট ছোট মলি্উকুল মিলে আরও জটিলতর মলিউকুল সৃষ্টি করলো তখন প্রথমে মেটাবলিজম তত্বের উদ্ভব ঘটলো। এই তত্ব অনুসারে আগে জীন পরে কোষ এটার দরকার নাই।
৭) মহাজাগতিক বা প্যান্সপারমিয়া
হইতে পারে দুনিয়াতে জীবনে উদ্ভব প্রথমে হয় নাই। মহাকাশের অন্য স্হান থিকা এইটা নাচতে নাচতে আসছে। এইটাই প্যান্সপারমিয়া।অনেকে বলে মঙ্গল গ্রহ থিকা গ্রহানু দুনিয়া আইসা পড়লে তার সাথে কিছু কিছু ফ্রি মাইক্রোবস আসে। পরে সেইখান থিকাই জীবনের উদ্ভব ঘটে।অনেকে বলে জীবনের উদ্ভব হয়তো মহাবিশ্বের অন্য কোনো সৌর জগৎ থিকা পরে সেইটা উড়তে উড়তে আইসা পড়ছে।
সর্বশেষ নাসা গত বছর এপ্রিলে একটা জার্নাল প্রকাশ করে যেখানে লেখা আছে শনি গ্রহের টাইটান নামক উপগ্রহের বর্তমান বায়ুমন্ডলের ঠিক এরকমই আদিম জটিল মলিউকুলের ভর্তি।
এখন অনেকেই হয়তো কইতে পারেন যে জীবন মানুষের পক্ষে তৈয়ার করা সম্ভব না, তাইলে কইতে হয় চোখ কান বন রাখলেই সত্যরে অস্বীকার করন যায় না। জ্ঞানের আলোয় আসেন নাইলে দোতারা বাজান। ইদানিং তো দেখছেন তেব্র নাস্তিম বিরোধী শফী কুকুরও রেলের জায়গা শেখ হায়েনার কাছ থিকা ঘুষ নিয়া এখন তারা হইছে লীগের সেরা বন্ধু! কই যাই!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:১১