somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভুতুড়ে বাড়ি এবং আমি.........

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




বন্ধু তার মামার বিয়েতে যাওয়ার জন্য বলেছিল অনেক আগেই। আমিও তখন সায় দিয়েছিলাম যাবো। কিন্তু পরে আর মনে নেই। গত ১/১১/১৬ তারিখ সকালে ওর ফোন-

- কিরে রেডি হইছিস?

- আমি ঘুম ঘুম ভাব নিয়েই বললাম। কেন? একদম ভুলে গেছিলাম বিয়ের কথা।

- রেগে বললো মনে নাই তোর?! ভালো চাইলে তাড়াতাড়ি আয়। নইলে তুর সাথে সব শেষ।

এখন যেতে বাধ্য। কিন্তু ইচ্ছা হচ্ছিলনা যাওয়ার। কারণ তখনো ঘুম রইছে চোখে। তবুও বিছানা থেকে উঠে তাড়াহুড়ো করে গোসল করে রেডি হলাম। তারপর হাল্কা নাস্তা করেই গেলাম তার নানাবাড়ি। সন্দেহ ছিল বরযাত্রী পাবো কিনা। যদি যাওয়ার প্রস্তুতি থাকতো তাহলে আরো আগেই বের হতাম।

ভাগ্য আমার প্রসন্ন। গিয়ে পেয়ে গেলাম তাদের। যাত্রা শুরু। কনের বাড়ি অনেক দূর। গ্রাম এলাকা। যদিও হবিগঞ্জ জেলার ভিতরে কিন্তু সেদিকে কখনোও যাওয়া হয়নি। শহর থেকে বের হয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এতো সুন্দর পরিবেশ! আহা আল্লাহর কি অপরুপ সৃষ্টি । যতো সামনে আগাচ্ছে ততোই মুগ্ধ হচ্ছি।

যাইহোক এক সময় পৌছে গেলাম কনের বাড়িতে। খাওয়া দাওয়াও শেষ। আমার প্রথম ভাগে খাওয়ায় ফ্রিই ছিলাম। তখন বন্ধু বললো, তুই তো শর্ট ফিল্ম করার জন্য একটা ভয়ংকর জায়গা খুঁজছিস। আয় একটা জায়গা দেখাই তুরে।

আমিও ভাবলাম ফ্রি যেহেতু তাহলে এই গ্যাঞ্জামে না থেকে একটু ঘুরেই আসি। তাছাড়া এমনিতেও বিয়ে শাদীর জামেলা আমার ভালো লাগেনা। তো গেলাম ওর সাথে।

আমাকে নিয়ে গেল একটা পুরাতন বাড়িতে। গিয়ে দেখি শুনশান নিরব এলাকা। বাহির থেকেই কেমন যেন ভয় ভয় করছে। প্রথমে দূর থেকেই দেখলাম কিছু সময়। হঠাৎ একজন মহিলা আর একটা ছেলেকে দেখলাম আসছে। ভাবলাম কিছু জানা দরকার এদের থেকে। আর মহিলাকেও দেখা যাচ্ছে বৃদ্ধা। ভালোই জানা যাবে।

আমি কিছু বলার আগেই মহিলা আমাদের সাথে কথা বলতে শুরু করলো। কিছু কথোপকথন তুলে দরলাম-

বৃদ্ধা- বাবারা কোথায় থেকে আইছো?

আমি- জ্বী আমরা শহর থেকে এসেছি বিয়ে বাড়িতে।

বৃদ্ধা- ও... তা এখানে কিতা করো?

আমি- এই তো আপনাদের গ্রামটা দেখতে বের হলাম। তা এই বাড়িটা কতো পুরনো?

বৃদ্ধা- এইটা তো আমিও সঠিক কইতে পারবোনা। তবে শুনেছি কয়েকশ বছর আগের। এটা একটা হিন্দু বাড়ী ছিল। এরাম আরো কয়েকটা বাড়ি আছে এই গ্রামে।

আমি- হুম। তা এইখানে তো কেউ থাকেনা। কেউ এটার দায়িত্বে নাই?

বৃদ্ধা- এই ভূত আর সাপের বাড়ির দায়িত্ব কে নিত? এই ঘরে দিনের বেলায়ই কেউ ঢুকতে ভয় পায়।

আমি- ও। আচ্ছা যান।



বৃদ্ধার সাথে কথা শেষ করে পা বাড়ালাম দুজনে বাড়ির দিকে । অনেকগুলি দরজা। সবগুলিই একদম খোলা। বাহির থেকেই বুঝা যাচ্ছে এটা একটা পরিত্যক্ত বাড়ি। কিছু না ভেবে "বিসমিল্লাহ" বলে ঢুকে গেলাম ভিতরে। ভিতর একদম অন্ধকার। ঘা শিউরে উঠার মতো। মোবাইলেত ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে দেখলাম ঘুরে ঘুরে প্রতিটা রুমই।

একসময় উপরে উঠার সিঁড়িও পেলাম। কিন্তু সাহস হয়নি উঠার। বাড়ির পিছন দিক দিয়ে গিয়ে বের হলাম। পিছন থেকে আরো ভয়ংকর দেখা যাচ্ছে বাড়িটা। তখন দুজনে মিলে কিছু ছবি তুললাম একে অপরের।

তখন আমার ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দিলাম, পুরনো বাড়ির সন্ধান পেয়েছি। একজন কমেন্ট করলো লাইভ এ আসতে। ভাবলাম মন্দ না। লাইভ এ যাওয়া হলো আর ভিডিওও করা হলো। ফেসবুক লাইভ এখানে

লাইভ দেখাতে দেখাতে আরেকটা সিঁড়ির সন্ধান পেলাম ছাদে উঠার। সাহস করে উঠতে শুরু করলাম। ছাদে পা রাখার আগেই মাথার উপর "ফুস ফুস " শব্দ শুনতে পেলাম ক্লিয়ার। লাইভ অফ করে এক দৌড়ে নিচে গেলাম। নিচে নেমে এসে বন্ধুকে নিয়ে একটু দূরে সড়ে গেলাম বাড়ির। তারপর বাড়ির দিকে চেয়ে দেখলাম আমি যেদিকে উঠেছিলাম সেদিকে সিড়ির দরজার ঠিক উপরের ছোট একটা গুম্বজ। আর তার নিচে লতাপাতা।

তবে ছাদের উপরটা ঠিকই দেখতে পেয়েছিলাম। নিচ থেকে উপর আরো ভয়ংকর। বুঝাই যায় কেউ উঠেনা। জংগল লেগে আছে।

তখন আরেক ব্যক্তিকে পেলাম, তার কাছ থেকে জানতে পারলাম রাতে এদিকে কখনো কেউ আসেনা। আর কয়েক বছর আগে এই বাড়ির ছাদে এক ছেলে সাপের কামড়ে মারা গেছে । এমনিতেই ভয় আর এই ব্যক্তির কথা শুনে ভয় আরো বেড়ে গেলো। এখান থেকে চলে গেলাম সামনে। একটু দূর গিয়েই পেলাম আরেকটা দু তলা পুরনো বাড়ি। মেবি কোন জমিদারের হাবেলি ছিল। এটার আর ভিতরে ঢুকার সাহস হয়নি। বাহির থেকেই কয়েকটা পিক তুলে চলে আসলাম।

ভয়টা তখনও ছিল। সন্ধ্যার আগে বাসায় এসেই বিছানায় পড়লাম। মাগরিবের আজান পড়লো। কিন্তু উঠতে গিয়ে মনে হলো কে যেন টেনে ধরে রেখেছে। চেস্টা করেও উঠতে পারলাম না। ভয়ংকর জ্বর এসেছে। লেপ দিয়ে ঝাপ দিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। ৮টা পর্যন্ত আর কিছু মনে নেই। এখনো কানে বাজতেছে সেই ফুস..... ফুসসসসসস........

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০৫
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এতো কাঁদাও কেনো=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৬




আয়না হতে চেয়েছিলে আমার। মেনে নিয়ে কথা, তোমায় আয়না ভেবে বসি, দেখতে চাই তোমাতে আমি আর আমার সুখ দু:খ আনন্দ বেদনা। রোদ্দুরের আলোয় কিংবা রাতের আঁধারে আলোয় আলোকিত মনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। পৃথিবীকে ঠান্ডা করতে ছিটানো হবে ৫০ লাখ টন হীরার গুঁড়ো

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০২




জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে বেড়েছে তাপমাত্রা। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তাই উত্তপ্ত এই পৃথিবীকে শীতল করার জন্য বায়ুমণ্ডলে ছড়ানো হতে পারে ৫০ লাখ টন হীরার ধূলিকণা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×