৬ মাস আগে আহমদ আর ফারিয়ার আক্দ হয়েছে। ফারিয়া এখনো তার নিজের বাড়িতে থাকে । আহমদ কদিন পর পর এসে থাকে ফারিয়াদের বাড়িতে। আহমদের পরিবারের মনে বড় অনুষ্টান করে বউ নিবে । ফারিয়ার বাবা বিদেশ থাকেন তাই তার জন্য অপেক্ষা করছে তারা। তিনি আসার পরই জাঁকজমক করে অনুষ্টান করা হবে।
সেদিন রাতে খাওয়া দাওয়া করার পর আহমদ আর ফারিয়া বেড রুমে আসলো। দুজনে বসে গল্প করছিলো। তখন ফারিয়া বললো তোমাকে একটা কথা বলবো।
আহমদ বললো, হ্যাঁ বলো।
ফারিয়াঃ- আজ ডাক্তারে গেছিলাম মাকে নিয়ে। ডাক্তার জানালো আমি প্রেগন্যান্ট।
আহমদঃ- ওহ বলো কি!!
ফারিয়াঃ- হ্যাঁ। এখন তো চিন্তায় পরে গেছি। এতো তাড়াতাড়ি বাচ্চা নিব! আর তাছাড়া এখনো আমাদের বিয়ের অনুষ্টানই হয়নি। ওইদিকে আব্বুরও আকামা প্রব্লেমের কারণে আসতে আরেকটু লেট হবে।
আহমদঃ- হুম। অনুষ্টানের আগেই বাচ্চা হলে লোকে কি বলবে! বাচ্চাকে কোলে নিয়ে অনুষ্টান করবো নাকি! আর বিয়ের তো মাত্র কদিন হলো এখনই বাচ্চা! কয়েক বছর যাক। এক কাজ করো, এভুর্শন করে ফেল।
ফারিয়াঃ- হ্যাঁ আমিও তাই ভাবছি। এতো তাড়াতাড়ি বাচ্চা নিলে শরীরও নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু প্রব্লেম হলো আম্মু না করছেন। তিনি তোমার আম্মুকেও জানিয়েছেন তিনি তো শুনে খুশিতে আত্মহারা যে তিনি অচিরেই দাদু হবেন।
আহমদঃ- বলো কি! তারা যাই বলুক। আমরা এসব শোনার দরকার নেই। কালই ডাক্তারে যাবো।
পরদিন -
আহমদ ফারিয়াকে নিয়ে ডাক্তারে যাওয়ার জন্য বেরুচ্ছে। ফারিয়ার মা জিজ্ঞেস করলেন কোথায় যাচ্ছ? ফারিয়া বললো ডাক্তারে যাচ্ছি এভুর্শন করাতে।
ফারিয়ার মা আহমদকে উদ্দেশ্য করে বললেন, বাবা তুমিও রাজী হয়ে গেলে! কি দরকার এমন করার! এটা পাপ। এসব করোনা। অন্তত তোমার বুঝা উচিত এটা। এসব চিন্তা বাদ দাও।
আহমদ বললো, আম্মা! আমরা তো বাচ্চা নিবই। আরো কয়েকটা বছর যাক। সমস্যা নেই। এসব বলে উলটো শাশুড়িকে হেনতেন বুঝাতে শুরু করলো আহমদ।
ফারিয়ার মা ফোন দিলেন আহমদের মাকে। বললেন এসব। আহমদের মা বললেন ওর কাছে দিন তো ফোনটা।
আহমদ ফোন নিল। হ্যালু বলতেই তার মা কাঁন্না শুরু করে বললেন তুই এসব কি করছিস বাবা? আমি আর তোর বাপ কতো খুশি এ খবরটা শোনার পর থেকে আর এখন তোরা এসব কি বলছিস!!
আহমদ তার মাকেও ওসব বলে ফোন কেঁটে দিল।
তারপর ফারিয়াকে নিয়ে বেড়িয়ে গেল তাদের মায়েদের আনন্দকে বলি দিয়ে। দুজনেই পৌছালো ডাক্তারের কাছে। কিছুক্ষণ পর ডাক্তারও রেডি।
এখন একটা আগত প্রাণকে বলি দিবে তারা। ফুটন্ত আর বাড়তে থাকা একটা শিশুকে ক্ষতবিক্ষত করবে তার মায়ের গর্ভেই। অথচ মা হলো পৃথীবির সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় স্থল।
শিশুটি হয়তো বলছে কি অপরাধে আমাকে হত্যা করছো মা? আমাকে দুনিয়ার আলোটাও দেখতে দিবেনা মা? কিভাবে পারছো তুমি এমন করতে? আমি তো তোমাদের পাপের বা অবৈধ সন্তানও নই! তাহলে কেন আমাকে নির্মমভাবে হত্যা করছো?
শিশুটি হয়তো আকুতি নিয়ে বলছে,
আমাকে মেরো না মা। আমাকে দুনিয়াটা দেখতে দাও। তোমার মুখটা দেখতে দাও মা। আমি তোমাকে "মা" বলে ডাকতে চাই গো মা। মেরোনা আমাকে মা....... !
কিন্তু কে শুনে এই বাচ্চার আকুতি!! গর্ভেই শেষ হয়ে গেল সে। খুন হলো সে তার মায়ের গর্ভেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:১১