(পূর্বপ্রকাশের পর)
বাসার সামনে থেকে বাসস্ট্যান্ডের ৫মিনিটের দুরত্ব। রিকশার সিটে বসে সামনে তাকিয়ে থমকে গেলাম; চালকের জামার পিঠে হলুদ অক্ষরে লেখা- "মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রাম পরিষদ"। দুই কাঁধে এ্যাপুলেটে সস্তা লাল প্লাস্টিকের ব্যাজে সোনালি খোদাই- "মুক্তিযোদ্ধা"। গ্লানিতে ভরে গেল মন কিছুক্ষণ আগের নিজের ভাবনার কথা মনে করে। কি করা উচিত ভেবে পাচ্ছিলাম না। কেবলই মনে হচ্ছিল ক্ষমার অযোগ্য একটা কাজ করে ফেললাম। বাংলাদেশের বিজয়ের ৩৬তম বর্ষপুর্তিতে দেশের শ্রেষ্ঠতম সন্তানদের একজনের পিঠে সওয়ার হয়ে বসে আছে আমার তেল-ঘি খাওয়া নধর দেহ!! ৫ মিনিটের পথ এতো দীর্ঘ মনে হয় নাই আগে কখনো।
নিজের অপরাধবোধটা কমানোর জন্য কি করা যায় তাই ভাবছিলাম প্রাণপণে। কি করলে কমবে মনের গ্লানি? একবার ভাবলাম রিকশা ভাড়া ১০টা টাকা বেশী দিয়ে দিব। পরক্ষণেই মনে হল, এতো আরো চরম অপমানকর ব্যপার। ১০ টাকা দিয়ে কি আমি একজন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান(!!) দেখান কথা চিন্তা করছি?!! ছি: ছি: ছি:
ততক্ষণে রিকশা এসে দাড়িয়েছে বাসস্ট্যান্ডের পাশে। রিকশা থেকে নেমে শ্লথ হাতে মানিব্যাগের টাকা ঘাটতে ঘাটতে মনটাকে কিছুতেই সান্ত্বনা দিতে পারছিলাম না। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল আর সংবাদপত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের কথা আর সাক্ষাৎকার দেখে/পড়ে এসেছি আজীবন। মন থেকে তাদের বসিয়েছি অনেক উঁচু সন্মানের স্থানে। আজ, এমন এক বিশেষ দিনে এতো কাছ থেকে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে দেখে কি যে করা উচিত তাই ভেবে পেলাম না! এই প্রজন্মের একজন প্রতিনিধি আমি। এতোটা মানসিক দৈন্যতা পেলাম কবে? কিভাবে?
মানিব্যাগ থেকে চোখ না তুলেই প্রশ্ন করলাম- "চাচা আপনি কি মুক্তিযোদ্ধা?"। প্রত্যুত্তর এলো একটামাত্র শব্দে, "জ্বী"। ৫টাকার নোটটা তার হাতে দিয়ে ঘুরে দাঁড়ালাম। মাথানত, দাঁড়িয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ। পা দুটো পাথরের মত লাগছিল। কি মনে করে যেন আবার ঘুরে দাঁড়ালাম, হাতটা বাড়িয়ে দিলাম লাল-সবুজের দিকে। হাত বাড়িয়ে আমার হাতটা ধরলেন প্রৌঢ় মুক্তিযোদ্ধা। ছোট, খসখসে চামড়ার পরিশ্রমী হাত। আমি কিছু চাইনি তার কাছে, কিছু বলিও নাই। কিন্তু তিনি বললেন। বললেন "দোয়া করি।" আমি মাথা নিচু করে ছিলাম শুরু থেকে শেষ পর্য়ন্ত। চোখ তুলে তাকাতে পারি নাই।
ঘুরে দাঁড়িয়ে যখন আমি বাসস্ট্যান্ডের দিয়ে পা বাড়লাম, চোখ ফেটে পানি আসছিল কেন জানি না। গলার কাছে দলা পাকিয়ে আটকে রেখেছিলাম কান্নাটাকে অনেক কষ্টে। কারণ বাসস্ট্যান্ডের অনেককেই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখছিলাম আমার মুখের দিকে। কান্না চাপতে গিয়ে কুঁচকে ওঠা চেহারা দেখে তারা অবাক হতেই পারে। কারণ আমার হাতে সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধার হাতের স্পর্শটা তাদের চোখে পড়েনি।
পড়ার কথাও নয়।
আলোচিত ব্লগ
বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !
"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমিত্ব বিসর্জন
আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।
"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?
স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন