গত ২৬শে মার্চ, মহান বিজয় দিবসে আমার ক্ষুদ্র জীবনে ঘটে যাওয়া এক স্মরনীয় ঘটনা অন্যদের সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছে করছে। সেটার জন্য ব্লগের চেয়ে ভাল মাধ্যম আর কি হতে পারে? আমার জানা নেই, তাই আপনাদের একটু বিরক্ত করা..
দিনটার শুরুটা আমার জন্য অবশ্য খুব একটা সুখকর ছিল না। ছুটির দিন একটু লম্বা সময় ঘুমের ইচ্ছা নিয়ে বিছানায় গড়াগড়িটা ভালই উপভোগই করছিলাম। কিন্তু মোবাইলের কল্যানে তা আর হল না। অন্যঘরে চার্জে দেয়া নোকিয়াটা ছোটবোন যখন বিরক্তির সাথে আমাকে ধরিয়ে দিয়ে গেল, স্ক্রিনে ততক্ষণে মিসকলের সংখ্যা ১১টা। যেতে হবে মগবাজার। নাস্তার পিছনে বিনিয়োগ করার মত সময় এ্যাকাউন্টে নেই। কোনভাবে জামাকাপড় পড়ে মুখটা ধুয়ে বেড়িয়ে এলাম রাস্তায়। মনে মনে হিসাব করছি উত্তরা থেকে মগবাজার যেতে কতটা সময় লাগতে পারে। চিন্তার ফাঁকেই আনমনে হাত তুলে ইশারায় ডাকলাম চলন্ত একটা খালি রিকশাকে।
আমার সামনে এসে রিকশা ব্রেক কষার আগেই যা আমার নজর কাড়লো তা হলো- প্রৌঢ় রিকশাচালকের জাঁদরেল গোঁফ। মোটা ঘন গোঁফজোড়া পাখা মেলে আছে দুই জুলফির কাছাকাছি পর্যন্ত। চালকের পরনে সবুজ পিরান টাইপের একটা পোষাক (বিটিভির প্রাচীন নাটকগুলোর গ্রাম্য চরিত্রদের পরনে ছাড়া এ বস্তু অন্য কোথাও দেখার সুযোগ হয়নি)। বুকের কাছে লাল বৃত্তের ভিতরে হলুদ মানচিত্রটাও চোখে পড়ল। মনে মনে রিকশাচালকের ফ্যাশন সচেভনতার তারিফ না করে পারলাম না। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজের মডেলদের দেখেছি ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে এরকম টি-শার্ট পড়ে পত্রিকার পাতায় হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে/বসে থাকতে, কিন্তু নিজে সাহস করে কেনা হয় নি। ২৬শে মার্চে এর চেয়ে চালু স্টাইল আর কিই বা হতে পারে? মনে মনে হাসতে হাসতে উঠে পরলাম রিকশায়, বললাম- "চাচা আজমপুর বাসস্ট্যান্ড চলেন।"
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০০৮ রাত ২:৫৫