somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাপানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের আদ্যোপান্ত

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




জাপানে উচ্চ শিক্ষার জন্য অর্থাৎ ব্যাচেলর্স ডিগ্রি, মাস্টার্স ডিগ্রি ও ডক্টরেট করার জন্য যেতে পারেন। জাপানে সাধারণত দু’টি সেমিস্টারে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রথম সেমিস্টার এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ও দ্বিতীয় সেমিস্টার অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত। গ্রাজুয়েট পর্যায়ে পড়ালেখার জন্য সরকারী বেসরকারী সব বিশ্ববিদ্যালয়েই আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায়। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত বৃত্তির ব্যবস্থা। জাপানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণেচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য জাপানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের আদ্যোপান্ত তুলে ধরা হলো :

ভর্তির যোগ্যতা

জাপানে পড়াশোনা করতে হলে আপনাকে জাপানি ভাষা অবশ্যই জানতে হবে। এজন্য আপনি জাপানি ভাষার উপর কমপক্ষে ৬ মাসের কোর্স সম্পন্ন করতে পারেন। এর বাইরেও কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য আপনার টোফেল সিবিটি স্কোর ১৫০ এর বেশী অথবা টোফেল আইবিটি স্কোর ৫২ এর বেশী থাকতে হবে। ভাষাগত যোগ্যতা প্রমাণের জন্য আন্তর্জাতিক ছাত্র হিসেবে আপনাকে জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হবে।
আপনি যদি এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তবে ব্যাচেলর্স ডিগ্রিতে এবং ব্যাচেলর্স ডিগ্রিতে উত্তীর্ণ হলে মাস্টার্সে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারেন। এসোসিয়েটেড ডিগ্রি, ব্যাচেলর্স ডিগ্রি, মাস্টার্স ডিগ্রি ও ডক্টরেট প্রোগ্রামে পড়াশোনা ও গবেষণার জন্য আপনি জাপানে যেতে পারেন।

সেমিস্টার পদ্ধতি

সাধারণত দু’টি সেমিস্টারে জাপানে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রথম সেমিস্টার এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ও দ্বিতীয় সেমিস্টার অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত। কিছু প্রতিষ্ঠানে সেপ্টেম্বর অথবা অক্টোবর ফল সেমিস্টার শুরু হয়।

যেসব বিষয়ে ব্যাচেলর্স ও মাস্টার্স করতে পারেন

আপনি জাপানে যেসব বিষয়ে ব্যাচেলর্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করতে পারবেন সেই সব বিষয়াবলী তুলে ধরা হলো : হিউম্যান স্ট্যাডিজ, লিঙ্গুইস্টিক স্টাডিজ, হিস্টোরিকেল স্টাডিজ, হিউম্যান সায়েন্স, এডুকেশনাল সায়েন্স, ল এন্ড সোসাইটি, পাবলিক ল এন্ড পলিসি, ইকনোমিক্স, ম্যানেজমেন্ট, একাউন্ট্যান্সি, ফিজিক্স, এস্ট্রোনমি, জিওফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, আর্থ সায়েন্স, মেডিক্যাল সায়েন্স, ডিজেবিলিটি সায়েন্স, ডেন্টিস্ট্রি, ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি, বায়োফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্স, লাইফ সায়েন্স, মেকানিক্যাল সিস্টেমস এন্ড ডিজাইন, ন্যানোম্যাকানিক্স, এ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং, কোয়ান্টাম সায়েন্স এন্ড এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, এপ্লাইড ফিজিক্স, এপ্লাইড কেমিস্ট্রি, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োসলিকিউলার ইঞ্জিনিয়ারিং, মেটেরিয়াল সায়েন্স, মেটেরিয়ালস প্রসেসিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার এন্ড বিল্ডিং সায়েন্স, ম্যানেজমেন্ট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, বায়োইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড রোবটিক্স, বায়োলজিক্যাল রিসোর্সেস সায়েন্স, বায়োসায়েন্স এন্ড বায়োটেকনোলজি, এরিয়া স্টাডিজ, ইন্টারকালচারাল রিলেশন্স, কম্পিউটার এন্ড ম্যাথমেটিকেল সায়েন্স, সিস্টেম ইনফরমেশন সায়েন্স ও এডুকেশনাল ইনফরমেটিক্সসহ ইত্যাদি বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য আপনি জাপানে যেতে পারেন।

কোর্সের মেয়াদ

এসোসিয়েট ডিগ্রি দুই থেকে তিন বছর মেয়াদী । ব্যাচেলর্স ডিগ্রি বেশীর ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই চার বছর মেয়াদী। মাস্টার্স ডিগ্রি দুই বছর মেয়াদী। তবে মেডিক্যাল সায়েন্সের ডক্টরেট প্রোগ্রাম চার থেকে পাঁচ বছর মেয়াদী।

যেভাবে আবেদন করবেন

আপনি আবেদনের বিস্তারিত তথ্য জানতে ও আবেদন পত্রের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তি অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনার হাতের কাছে যদি ইন্টারনেট থাকে তবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইট থেকেও আবেদনপত্র ডাউনলোড করে নিতে পারেন। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেগুলোতে ইন্টারনেটের মাধ্যমেই আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়। আর আপনি যদি ভর্তি অফিসে যোগাযোগ করেন তবে তারাই জানিয়ে দেবে আপনার কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন হবে এবং কিভাবে আপনাকে আবেদন করতে হবে। আপনি যদি ভর্তি হবার এক বছর আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন, তবে আপনার জন্য ভর্তি প্রক্রিয়া সহজ থেকে সহজতর হবে। প্রস্তুতি গ্রহণের প্রথমেই আবেদনের জন্য শেষ তারিখ থাকলে তা জেনে নেওয়া আপনার জন্য অত্যাবশ্যক।
জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছয় থেকে আট মাস আগে ভর্তির বিষয়ে ঘোষণা দিয়ে থাকে। ভর্তির আবেদনের জন্য যথাযথভাবে পূরণকৃত আবেদনপত্রের সঙ্গে আপনার সব একাডেমিক সনদের ইংরেজি ভার্সন, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ছাড়পত্র, অর্থ পরিশোধের কাগজপত্র, ভাষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র এবং পাসপোর্টের ফটোকপি সংযুক্ত করতে হবে।

ক্রেডিট স্থানান্তর প্রক্রিয়া

জাপানে ক্রেডিট স্থানান্তরের সুযোগ আছে। তবে কোর্সের অর্ধেকের বেশী ক্রেডিট স্থানান্তর করা যায় না। ক্রেডিট স্থানান্তর করতে হলে ন্যূনতম ‘বি’ গ্রেড থাকতে হয়। ক্রেডিট স্থানান্তর করতে হলে ট্রান্সক্রিপ্ট, আপনি যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়ন করছেন সেই প্রতিষ্ঠানের অনুমতি পত্র, কোর্সের বিস্তারিত তথ্য, গ্রেডিং সিস্টেম ইত্যাদি উল্লেখ করে আপনাকে আবেদন করতে হবে।

খরচ

জাপানের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি এক রকম নয়। আপনি যদি জাতীয় পর্যায়ের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান তবে প্রতি বছর আপনাকে ৯ লাখ ৪০ হাজার ইয়েনের বেশী খরচ করতে হবে। আবার আপনি যদি স্থানীয় পর্যায়ে কোন সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান তবে আপনাকে প্রতি বছর খরচ করতে হবে ১০ লাখ ৭০ হাজার ইয়েন। আর যদি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান তবে প্রতি বছর আপনাকে খচর করতে হবে সাড়ে ৭ লাখ থেকে ৫৮ লাখ ইয়েন। খাবার যাতায়াত ইত্যাদির জন্য আপনাকে বছরে সোয়া এক লাখ থেকে পৌনে দুই লাখ ইয়েন খরচ করতে হবে। গ্রাজুয়েট পর্যায়ে পড়াশোনার জন্য সরকারী বেসরকারী সব বিশ্ববিদ্যালয়েই আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায়। ছয়জন থাকা যায় এমন রুমের জন্য ৪৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার ইয়েন খরচ পড়ে। বিদেশী ছাত্রদের স্বাস্থ্য বীমা থাকা বাধ্যতামূলক। স্বাস্থ্য বীমার জন্য বছরে ন্যূনতম ১৮ হাজার ইয়েন প্রয়োজন হয়। এছাড়া ট্রাভেল ইন্সুরেন্স করে যাওয়া ভাল।

জাপানে শিক্ষা ক্ষেত্রে বৃত্তি

জাপানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রচুর বৃত্তি দিয়ে থাকে। এশিয়ান ইয়ুথ ফেলোশিপ, হিউম্যান রিসোর্সেস স্কলারশিপ ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও স্কলারশিপ ফাউন্ডেশন বিদেশী ছাত্রদের বৃত্তি দিয়ে থাকে। জাপান সরকারের ওয়েবসাইট থেকে আপনি বৃত্তির তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×