বাড়ির চার বছরের ছেলেটার জন্য
একটা গ্লুকোজ বিস্কুটের প্যাকেট
আর কন্যার জন্য তিলের নাড়ু,
দরজায় কড়া নাড়তেই
ভুল বুঝতে পারি,
দরজাটা অন্য,
৪৮/১ নম্বর বলে কোন বাড়ি নেই
বিস্মিত লন্ড্রী কর্মচারী বললো,
"মায়াবাজার? এ নামে তো কোন জায়গা আছে বলে শুনি নি!"
এই যে ভাই, আপনি কি এখানেই থাকেন?
মোড়ে না একটা অশত্থগাছ ছিল?
সাদা ধবধবে চুলের
নরেন, ষাটোর্ধ আলাপী যে মানুষটা বিকেলে ছাতা হাতে
হাটতে বের হয়,
তার বড় ছেলে ননীদাস স্বর্ণকার
ঐ যে নকুলদের চালের দোকানের পাশে যে বসে
বিয়ে করেছে যদু মাস্টারের ছোট মেয়েকে
কি যেন নাম...ভারী রূপবতী
পূজামন্ডপের নিখুঁত প্রতিমা ফেলে
যে বউটাকে সবাই অপলক দৃষ্টিতে দেখে
এবার নিশ্চয়ই চিনবেন
চুনী, বাড়ির মেজো ছেলেটা, যে গিরিবাজ পায়রা পোষে
পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে চিলাঘুড়ি ওড়ায়
তার বোন সবিতার মিষ্টি গানের গলা
বাড়ির দোতলা থেকে
প্রতিদিন ভোরে গলা সাধার শব্দ শোনা যায়
আর কেউ না হোক তার বাজখাই পিসিমার
কন্ঠটাতো ভুলে যাবার কথা না।
মানুষ বদলালে বোধ হয় এমন হয়
চেনাতে খুব কষ্ট করতে হয়
কারো কথা না শুনে
সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে আসি
কড়া নাড়ি, দরজাটা ধাক্কা দেই
প্রতিধ্বনি শুনি
তারপর চুপচাপ
যেন কোথাও কোন মানুষ নেই
দোতলায় উঠতে ভারী সিঁড়ি ছিল, সিঁড়িটা নেই
পায়রার খোপ চোখে পড়তো, সেটা নেই
দেয়াল নেই,
দরজা নেই,
নেমপ্লেট নেই
এমন কি সেই বাড়িটাও নেই
----
ড্রাফট ১.০
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ২:০৬