৩.
পর্ব ১. Click This Link
পর্ব ২ঃ Click This Link
হলে এসেই শুনেছিলাম মদন আপার কথা। ‘’পথের প্যাঁচালী’’ নামের অনুষ্ঠানে নাকি এই হলেরই একজনকে মদন বানানো হয়েছিল। আমি তো সুমনা আপুকে হলে আসার দিন থেকেই জ্বালিয়ে মারছি, প্যাঁচালী মদনকে দেখব বলে। দেখাও পেয়ে গেলাম, ২য় দিনেই, ডাইনিঙ্গে খেতে গিয়ে। সেই রকমই মিষ্টি করে হাসছেন, টিভিতে যেমন দেখেছিলাম। মার্কেটে স্যান্ডেল কিনতে গিয়েছিলেন এই আপু। বিশাল সাইজের এক স্যান্ডেল দেখিয়ে মদন বানানো হয় উনাকে। আপুর সাথে টুকটাক কথা হল।
হলটাকে প্রথম দিন থেকেই আপন ভাবতে পেরেছিলাম। কারণ আপুরাই অনেক আপন করে নিয়েছিলেন আমাকে। লাল ইটের দূর্গের মত হল। আমি সব দিক হারিয়ে দিগবিদিক হয়ে যেতাম চার মাথার সিঁড়িতে যেয়ে। কোনদিক দিয়ে গেলে যে কী হবে কিছুতেই ঠাহর করতে পারতাম না। সবচেয়ে ভাল লাগত, সিঁড়ির মোড়ে মোড়ে বড় বড় আয়নাগুলো। আপুরা বাইরে যাবার সময় ওখানে নজেকে বারবার দেখে নিতেন।
স্বাধীনভাবে মেয়েদের চলাফেরা আমাকে অবাক করে দিত। আমি যে, ফার্মের মুরগী! ঘর হইতে আঙ্গিনা আমার বৈদেশ। মেয়েরা রাতে ব্যাডমিন্টন খেলত। আমারও খুব খেলতে ইচ্ছে হত।
মেয়েদের হলে কল দেবার ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ মজা লাগত। চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে রুমের নাম ধরে ডাকা হচ্ছে। ঢাবিতে পড়ার সময় একদিন জরুরি কাজে শা.না. হলে যাচ্ছি। এমন সময় এক ভাইয়া এগিয়ে দেন স্লিপ, কল দেবার জন্য। খেয়ে দেয়ে আমার কাজ নেই! নিজের কাজ বাদ দিয়ে এখন আমি উনার কল দেই আর কি! বিরক্ত হই আমি। ‘’আমি তো হলে থাকি না’’—এই বলে সেই ভাইয়াটাকে এড়িয়ে যাই আমি। একটু হতাশ হয়ে ভাইয়াটা দাঁড়িয়ে থাকে। হয়ত তাকে আরো অনেকক্ষণ এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে, কল দিতে না পারলে। আজ ভাবি, এখন আর এইভাবে কাউকে কল দেবার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। একটা মিসকল দিলেই যথেষ্ট।