বাঙ্গালীদের ঘর কুনো স্বভাবের একটা পরিচয় প্রায় সবাই জানে, তাই তো ফেলুদা, কাকাবাবুদের এদেশ সেদেশে অভিযান শুধু গল্পেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে বাঙ্গালীদের মধ্যে খুব কম মানুষই অভিযাত্রী বা যুগশ্রষ্ঠা হিসেবে নিজেদের পরিচয়কে উদ্ভাসিত করতে পেরেছেন। তাইতো আমাদেরকে যুগশ্রষ্ঠা কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার ‘সংকল্প’ কবিতায় লিখেছেনঃ
"রইব না কো বদ্ধ খাঁচায়, দেখব এ-সব ভুবন ঘুরে-
আকাশ-বাতাস চন্দ্র-তারায় সাগর-জলে পাহাড়-চুঁড়ে।
আমার সীমার বাঁধন টুটে
দশ দিকেতে পড়ব লুটে;
পাতাল ফেড়ে নামব নীচে, ওঠব আবার আকাশ ফুঁড়ে;
বিশ্ব- জগৎ দেখবো আমি আপন হাতের মুঠোয় পুরে।"
আসলে বাঙ্গালীদের স্বভাব না বলে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথা বলা যায়, যা আমাদের যুগশ্রষ্ঠা অভিযাত্রী হতে পদে পদে বাধা দিয়ে যাচ্ছে, এর মধ্যে প্রধানতম সমস্যা হচ্ছে অর্থনৈতিক এবং এর পরেরটা হচ্ছে ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা। উচ্চ আয়ের দেশগুলি কেন জানি সব বাঙ্গালীদের পথ আগলিয়ে বসে আছে। তবে কিছু কিছু ব্যতিক্রম তো আছেই, যেমন অষ্ট্রেলিয়া।
অষ্ট্রেলিয়া আজকের পৃথিবীতে একটি অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসাবে সর্বজন বিদিত। অষ্ট্রেলিয়া পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃহত্তম দেশ, কিন্তু অপর্যাপ্ত জনসংখ্যা একে অনেক বেশী অভিবাসী নির্ভর একটি দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে তুলেছে। অভিবাসীদের কাছেও অষ্ট্রেলিয়া একটি স্বপ্নের নাম। কারন এখানে আছে উন্নত ও নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা, যানযট মুক্ত খোলামেলা ও নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশসহ একটা শহরে থাকার অভিজ্ঞতা, উচ্চতর (ইউরোপ ও আমেরিকা থেকেও অনেক বেশী) বেতন কাঠামো এবং সর্বোপরি নিজের ও পরিবারের জন্য উন্নত একটা ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা।
অষ্ট্রেলিয়াতে যাওয়ার জন্য বেশ কিছু ভিসার সুযোগ বাংলাদেশীরা খুব সহজেই নিতে পারেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেঃ
অভিবাসন (মাইগ্রেশন) ভিসা
ছাত্র (ষ্টুডেন্ট) ভিসা
ট্রাভেল ভিসা
ওয়ার্ক এন্ড হলিডে ভিসা
ও অন্যান্য
আজকে এখানে আলোচনা করব আমরা ‘ওয়ার্ক এন্ড হলিডে ভিসা’ নিয়ে, সামনে সুযোগ আসলে অভিবাসন ও ছাত্র ভিসা নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করব।
অষ্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যাক্তিদের ওয়ার্ক এন্ড হলিডে ভিসা প্রদান করা হয়।
ওয়ার্ক এন্ড হলিডে ভিসা – এক বছরের জন্য প্রদান করা হয়
এই ভিসার আওতায় ভিসা প্রাপ্ত ব্যাক্তি অষ্ট্রেলিয়াতে বৈধ ভাবে কাজ করতে ও যে কোন যায়গায় ভ্রমণ করতে পারেন
এই ভিসা আবেদন করার জন্য প্রাথমিক শর্ত সমূহ হচ্ছেঃ
আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১৮-৩০ বছরের মধ্যে
আবেদনকারীকে অবশ্যই ব্যাচেলর (পাশ কোর্স অন্তর্ভুক্ত) ডিগ্রীধারী হতে হবে
পুরুষ ও মহিলা যে কেউ আবেদন করতে পারবেন
আবেদনকারীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে
আবেদনকারীর অবশ্যই IELTS এ ৫.৫ স্কোর থাকতে হবে এবং তা কমপক্ষে আগামী এক বছর মেয়াদ থাকতে হবে
আবেদনকারী অথবা তার অভিভাবকের অবশ্যই ব্যাঙ্ক একাউন্টে ৫ লাখ টাকা থাকতে হবে এবং এ সংক্রান্ত ৬ মাসের ব্যাঙ্ক ষ্টেটম্যান্ট প্রদান করতে হবে
এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য অষ্ট্রেলিয়া সরকারের ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইট দেখতে পারেন (http://www.immi.gov.au) অথবা ব্যক্তিগত পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন ০১৭৮৯-০০০০১৮ এই ফোন নাম্বারে।