আমাদের জীবনে কতকিছু ঘটে থাকে।সবগুলোর অভিজ্ঞতার ভালো হয় না।কোন কোনটার অনুভূতি হয় খারাপ,কোনটার হয় বাজে আবার কোনটার হয় বেশ মজার।আজ আমি কিছু তেমন মজার ঘটনার কথা বলব।আশা করি সবার কাছে ভালো লাগবে।
ঘটনা ১ : আমার মেজ খালু তখন নতুন মোবাইল সেট কিনেছেন।মডেল Nokia 1660.সে সময় সেটটা নতুন বের হয়েছিল।তিনি সেটা নকিয়া সেন্টার থেকে না কিনে ডিলার থেকে কিনেন।আসল জায়গা থেকে না কেনাতে তার পরিবারের সবাই কিছুটা বিরক্ত হয়েছিল,কিন্তু বাসায় প্রথম সেট আসাতে পাশাপাশি খুশিও হয়েছিল।
যাই হোক,খালু কোথা থেকে জানি শুনে এসেছিলেন যে নকিয়া সেট বেশ টেকসই হয়ে থাকে।তাই তিনি বেছে বেছে নকিয়ার সেট কিনেন।কিন্তু কেনার পরেও তার মন খচখচ করতে থাকে এই ভেবে যে নকিয়ার সেট সত্যিই টেকসই নাকি।একদিন তাই সকালের নাস্তা খেতে গিয়ে ঠিক করলেন যে তিনি নিজে এর একটা পরীক্ষা করে দেখবেন।এ চিন্তার পর তিনি তার ছেলেকে দিয়ে সেটটা আনান।এরপর সবার সামনে ডিক্লেয়ার দেন, “শুনেছি নকিয়ার সেট নাকি ভালো হয়।আজকে তার একটা টেষ্ট করব।”এ কথা শুনে তার মেয়ে বলে, “তুমি কি করবে?”তখন তিনি বলেন, “আমি এখন এটা হাত থেকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দিব।”বলার সাথে সাথেই তিনি হাত থেকে সেটটা খালি মেঝেতে ফেলে দেন।সেটটা মাটিতে লেগে একবার বাউন্স করে,এরপর পড়ে থাকে।দেখা যায় সেটের কিছুই হয়নি।খালু যখন আনন্দের সাথে সেটা কুড়াতে যায়,তখন খালা চিৎকার করে উঠেন, “আরে কুত্তার বাস্সা (সঠিক শব্দ ‘বাচ্চা’,কিন্তু তিনি উচ্চারণ করেন Bassa বলে),তুই এটা কি করলি?”
বি দ্র : খালা খালুকে এভাবে প্রায়ই বকা দিয়ে থাকেন।তাই খালু সেদিন কিছু বলেননি।কারণ তিনি এর সাথে ভালোভাবেই পরিচিত।আমরাও পরিচিত,কিন্তু তবুও তার এসব মজার গালাগালি দেখে হেসে ফেলি।এভাবে স্ত্রীরা স্বামীদের বকা দিতে পারে!আমার বিশ্বাস হয় না।
ঘটনা ২ : আমার বড় মামা ছোটবেলা থেকেই বেশ মজা করে থাকে।সে অনেক পিকুলিয়ার কান্ড করে আমাদের বহুবার হাসিয়েছে।এখন বিয়ে করে কিছুটা শান্ত হয়েছে,তবে পুরোপুরি নয়।এখনও মাঝে মাঝে আমাদের হাসায়।এখন তার এমনই এক ঘটনার কথা বলব।
তখন সে ইউনিভার্সিটিতে পড়ে।তার আবার স্যাঙ্গায় বেশ ভয়।কীটটাকে দেখলেই সে ঝাটকা মেরে সেটা ফেলে দেবার চেষ্টা করে,অবশ্যই নিজের গা বাঁচিয়ে।
সেদিন সে একটা লুঙ্গি পরে বাসার মধ্যে ঘোরাঘুরি করছিল।কিছুক্ষণ এদিক সেদিক করে সে বড় ঘরে আসে।সেখানে আমার বোন,ছোট খালা আর নানি ছিল।কিছুক্ষণ সবাই মিলে কথা বলে।হঠাৎ আমার বোন চিৎকার করে উঠে, “মামা,তোমার লুঙ্গিতে একটা স্যাঙ্গা!”সাথে সাথে সে উঠে দাঁড়ায়।বলতে থাকে, “কই?কই?”এরপর যখন দেখে,তখন বলে, “ও স্যাঙ্গা!”কথাটা বলেই সে আস্তে করে লুঙ্গিটা খুলে উলঙ্গ হয়ে সবার সামনে দিয়ে হেঁটে অন্য রুমে চলে যায়!
সবাই তার এ কান্ড দেখে প্রথমে কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে থাকে।এরপর যখন হুঁশ হয়,তখন ............। মানে হা হা প গে আরকি।
ঘটনা ৩ : শেষবারের মত বড় মামা।
এবারের ঘটনার উপলক্ষ বেশ কষ্টদায়ক।তবুও লিখছি,কারণ তার মুখে এটার গল্প শুনে আমার চরম দুঃখের মধ্যেও হাসি চলে এসেছিল।
২৪ নভেম্বর,২০১০।হঠাৎ করে তার কাছে খবর আসে তার বড় দুলাভাই মানে আমার বাবা মারা গেছে।সে এ খবরের জন্য ঠিক প্রস্তুত ছিল না।তাই হঠাৎ করে এমন খবর শুনে তার পায়খানা চলে আসে।সে দৌড়ে অফিসের টয়লেটে চলে যায়।এরপর পায়খানা করে দেখে পানি একদম অল্প আছে।সেটা দিয়ে কোনমতে ধৌত কাজ সম্পন্ন করে।এরপর বের হয়ে যায়।
এতটুকু শুনে আমার মা তাকে বলে, “তুই কমডে পানি ঢালিস নাই?”মামা হাসতে হাসতে বলে, “না।”তার কথা শুনে সবাই ‘ওয়াক’ ‘ওয়াক’ করতে থাকে।সে তখন বলে, “পরে যে যাবে,তার কপালে সব খারাপি লেখা আছে!”
বি দ্র : পরে আমার মনে হয়েছিল যে সে সম্ভবত হাতও না ধুয়ে চলে এসেছিল!
মজার ঘটনা শেষ।আপাতত আর কিছু মাথায় আসছে না।পরে আসলে আবার লিখব।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৫৮