somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম যার যার; উৎসব সবার

১০ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত কয়েকদিন এই বিষয়ে আশেপাশের খোলামনের পরিচয় আত্মস্থকারী কতিপয় ভাই-বোন এর কথার প্রেক্ষিতে এই বিষয়টি choose করে নিয়েছি ।

“ধর্ম যার যার, উৎসব সবার” এই বিষয়ে তর্ক নিয়ে; যুক্তি দিয়ে অনেক ইতিহাস হয়েছে । যারা এই স্পর্শকাতর বিষয়টি ছেলেমি দেখে; তারা এই প্রস্তাবের বিরোধীদের bigotted হিসেবে ধরে নিচ্ছে

ধর্ম সম্পর্কে যখন আপনার প্রাথমিক জ্ঞান স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে না, তখন আপনার কাছে তাদের পরিচয় bigotted মনে হবে এবং ঐ নির্দিষ্ট মতাবল্বী মানুষদের ধর্মীয় নীতিকে সেকেলে এবং সাম্প্রদায়িক মনে হবে ।

যারা সাম্প্রদায়িকতার বুলি আওড়ান তারা হয়ত কমিউনিটি, জাতিয়তাবাদ শব্দগুলো সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন না । কেননা; মনে করুন পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস ১৪ আগস্ট, আর ভারতের ১৫ আগস্ট ।এখন পাকিস্তান কিংবা ভারতের কেউই কমিউনিটি বা বর্ডার এড়িয়ে একে অন্যের প্রতি মনখোলা হয়ে কেক কাটবে না ।

আর একটা উদাহরণ হল, মনে করুন কোন রাজনৈতিক দলের ১০ তারিখ শোক দিবস এবং একই দিনে অন্য একটি দলের পার্টি উৎসব । এখানে কোন দলই দলের নীতি ভেঙ্গে অন্যের উতসবে শোকের বদলে কেক খাবে না বা কেকের বদলে নোনা জল খাবে না ।

জাতীয়তাবাদ, রাজনীতি, কমিউনিটি এর সাথে ধর্মের কোথায় সম্পর্ক?

মূলনীতিঃ একটা কমিউনিটী মুখে বললেই রাতারাতি হয়ে যায় না, আবার হাজার বছর অবধি টিকে থাকে না; যদি না তাদের কোন নীতি না থাকে । বাংলাদেশের সংবিধান এর সাথে সাংঘর্ষিক কিছু করা বাংলাদেশীদের যেমন উচিত নয়; বরংচ করলে নীতি অনুসারে লঘু থেকে স্থূল পর্যায়ের শাস্তি আছে । আবার রাষ্ট্রের মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক কিছু করলে তাকে দেশদ্রোহী হিসেবে গন্য করা হয় ।

ঠিক একই ভাবে একটী রাজনৈতিক দল অথাবা কোন জাতীয়তাবাদের মূলনীতি থাকে ।

তো ধর্মের মূলনীতি কি? এর বিপরীতে । যে কেউ মন চাইলে সেই ধর্মের মূলনীতি ভেঙ্গে ঐ ধর্মের থাকতে পারে কিভাবে ।

যে ধর্ম নিয়ে এতো কানাঘোষা হচ্ছে সেই ধর্মের মূলনীতি হচ্ছে তাওহীদ । তাওহিদের মূলনীতি হচ্ছে - আপনি বিশ্বাস করে নিয়েছেন যে

আল্লাহ্‌ সকল কিছুর স্রষ্টা - আল-যুমার ৩৯ঃ৬২

যদি আপনি এই বাক্যে পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন তাহলে অন্য কাউকে খুঁজতে যাওয়া পাগলামি আর কিছু না । তবে কিছু মানুষের ধারণা- কেউ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছে বলে সেই সূত্রে সে মৃত্যু অবধি মুসলিম ।

কিন্তু মুসলিম তো সে যে - তাঁর কথা; কর্ম এবং বিশ্বাসে আল্লাহ্‌ এক, তাঁর কোন অংশীদার নেই...।।

কিন্তু পূজা মন্ডপে কি হয়; আল্লাহ্‌র অংশীদার করে তাঁর সমকক্ষ করে তৈরি কিছু দেব-দেবীর মূর্তির পূজা করা হয় । মানে তারা বিশ্বাস করে মঙ্গল- অমঙ্গলের মালিক এই দেবদেবী ।

অথচ আল্লাহ্‌ বলছেন

নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তাঁর সাথে শিরক করাকে ক্ষমা করেন না... আন-নিসা; ৪ঃ৪৮
নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ্‌র সাথে শরিক করে আল্লাহ্‌ তাদের জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন... আল-মা’ইদাহ; ৫ঃ৭২

আপনি জানেন আল্লাহ্‌ তাঁর সাথে কাউকে শরিক করাকে পছন্দ করেন না, তাঁর কোন প্রতিমূর্তি নেই । অথচ যেখানে তাঁর অংশীদার করে তাঁর সমকক্ষ করে মূর্তি বানিয়ে পূজা হচ্ছে সেখানে যাচ্ছেন সম্প্রীতির বন্ধন রাখতে ।

সম্প্রীতি কখনো বলে না; তোমার মূলনীতিকে ডিঙ্গিয়ে কিছু করার বরংচ বলে ধর্ম যার যার; উৎস ও যার যার। তোমার কাছে আমি নিরাপদ, আমার কাছে তুমি নিরাপদ । তোমার বিশ্বাস আমার উপর না চাপানো, সত্য- সঠিক জানানো আমার কাছে গ্রহণীয় মনে হলে গ্রহণ-অগ্রহন করার দায়িত্ব আছে । আমার বিশ্বাস সম্পর্কে আমি তোমাকে জানাব তোমার কাছে যৌক্তিক মনে হল আস ।

সম্প্রীতি কখনো বলে না আজ থেকে আমার বাবাকে বাবা বলে ডাক বরংচ আমার বাবাকে আমার বাবার বিশ্বাস থেকে সম্মান কর ।

এখন হিন্দুদের পূজাতে ওরা যেই দেব দেবীদের পূজা করছে মুসলমানদের মতে তারা সেই দেব দেবীকে আল্লাহর স্থান দিচ্ছে।এখন যে মুসলিম সে কি এমন কোথাও যাবে যেখানে তার প্রিয় রবের স্থান একটা মূর্তিকে দেওয়া হচ্ছে? যেখানে আল্লাহকে তার সৃষ্ট জিনিসের মতো তুলনা করা হচ্ছে? এটা তো মুসলমানদের বিশ্বাসের শুধু বিপরীতইই না বরং এটা নিজের কাছে তার সৃষ্টিকর্তাকে অপমান করা (এটা একটা কথার কথা। )

আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে, আর তা কেউ উপভোগ করে নিজেকে সত্যিকারের মুসলিম দাবি করার বিষয়টা শুধু হাস্যকরই নয় লজ্জাকরও বটে! ( ডঃ আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপস)

অতএব যে ব্যক্তি তাঁর পালনকর্তার সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তাঁর পালনকর্তার ইবাদতে কাউকে শরিক না করে - (আল-কাহফ; ১৮ঃ১১০)

স্বয়ং ইবরাহীম (আঃ) বলেছিলেন,

হে আমার প্রভু, আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে মূর্তিপূজা থেকে বাঁচাও... (সূরা ইবরাহীম, আয়াত ৩৫)

জাতীয়তাবাদ আর কমিউনিটির মূলনীতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেছি, বুক ফুলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি । ইসলামি আকীদা এর সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক একটা পার্বনে গিয়ে নিজেকে অসাম্প্রদায়িক করা নিজের গলায় ফাস লাগিয়ে ভাবা আমার গলায় কিছুই নেয় ।
আপনি পূজা উপলক্ষে লিখে যাচ্ছেন”......... উৎসব আমাদের জীবনে শান্তি বয়ে আনুক” আর আপনি বলছেন আপনি মুসলিম ।

ফাজলামি নাকি?

ইসলাম তাই বলে “ধর্ম যার যার; উৎসব ও যার যার” । কারণ ধর্মীয় উৎসব একটা বিশ্বাস কে কেন্দ্র করে হয়ে থাকে । তাই আপনি অন্য ধর্মের উৎসবে এমনিতে যাওয়া মানে আপনি আপনার উপস্থিতির মাধ্যমে ও ইচ্ছার কর্মের মাধ্যমে অন্য বিশ্বাসকে মেনে নিয়েছেন । তাই পূজা কক্ষনো সার্বজনিন হতে পারে না; তেমনি ঈদও । আর ধর্ম ভিত্তিক কোন উৎসব কক্ষনো ভিন্ন ধর্মের হতে পারে না ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:২৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প বলেছে, বাংলাদেশ পুরোপুরি এনার্খীতে, তারা মাইনোরিটির উপর অত্যাচার করছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৬



৩ দিন পরে আমেকিকার ভোট, সাড়ে ৬ কোটী মানুষ ভোট দিয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যে; ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৫১ ভাগ। এই অবস্হায় সনাতনীদের দেওয়ালী উপক্ষে ট্রাম্প টুউট করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×