somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবমাননা এবং ভালবাসা (প্রথম পর্ব)

১৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জাতীয় ইস্যু নিয়ে লেখার ইচ্ছে থাকে না; কারণ প্রায় প্রত্যেকটি ইস্যু; ইস্যু হউক না হউক তা ইস্যু বানিয়ে দিচ্ছি । যেখানে ধর্মের অবমাননা শুরু হয়েছিল হুমায়ন আজাদ দিয়ে সেখানে তার ছেলেদের কুপিয়ে আজ এমন একটি স্থানে দাড় করানো হয়েছে; ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু বলা মানে সৎ সাহস আর বিজ্ঞানমনস্ক হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে । আসলেই কি এরকম কিছু হওয়ার কথা ছিল?

বলা হয়ে থাকে যে কথা দিয়ে না পারে সে শরীর ব্যবহার করে; তাহলে আমরা মুসলিমরা কি মূর্খ নাকি সন্ত্রাস । আজকের এই কথিত সৎ সাহসের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পিছনে এই দেশের প্রত্যেকটি মুসলিমের দায়বার আছে । গ্রীক পুরানের একটি monster আছে "হাইড্রা"; যার একটি মাথা কাটলে দু'টি মাথা গজিয়ে থাকে । আজকের এই মুক্তমনা ব্লগারদের "বিজ্ঞানমনস্ক" হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি ঠিক সেই ভাবে। একজনকে কুপিয়েছেন তো তার ইতবৃত্ত সহসায় এই সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে হাজার হাজার পাঠকের কাছে পৌঁছে দিয়ছেন; আপনি । তার প্রতিবাদে, সাপোর্টে আরও দু'টি মাথা গজিয়েছে । আপনি আর একটি মাথা কেটেছেন; আরও দু'টি মাথা বেড়েছে । এভাবে ব্যাঙের ছাতার মত প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে ।

অন্যদিকে কি হচ্ছে; মুসলিম হিসেবে আপনি দাঁড়ি রাখতে ভয় পাচ্ছেন; পাঞ্জাবী পড়তে ভয় পাচ্ছেন; হাতে ইসলামিক বই রাখতে ভয় পাচ্ছেন; জিহাদের কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন; আপনার পরিবার টুপি; দাঁড়িওয়লা মানুষের সাথে চলতে বারণ করছে এই সকল নিত্য নতুন সমস্যা ব্যাধি আকারে জন্ম নেওয়ার পিছনে একটি ইস্যু কাজ করেছে।

আমাদের মহান শিক্ষক; অনুকরণীয় এবং অনুস্মরণীয় ব্যক্তি মুহাম্মাদ (সাঃ) কে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী দ্বারা অপমান করার জন্য ; এবং তার প্রতিবাদ করে এগিয়ে যাচ্ছেন কতিপয় রাসূলপ্রেমী যুবকেরা । যাহারা নবীকে জানার আগেই তাঁকে অন্ধভাবে ভালবেসে নিয়েছে । বলতে পারেন তাদের এই ভালবাসা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য । হায় ! ইসলাম কি এই ভালবাসা সমর্থন করে; অবশ্যই করে কিন্তু বিশেষ ক্ষেত্রে । যেখানে রাসূল আমাদের অনুকরণীয় এবং অনুস্মরণীয় আদর্শ সেখানে তাঁকে ভালবাসার একটি অভিন্ন পথ হল জানতে হবে তাঁহার জীবন; কর্ম; ত্যাগ এবং মহত্ত্বসহ অন্যান্য গুণাবলি।

ইসলাম মুখের ভাষা দ্বারা যতটুকু না প্রচার হয়েছে; তাঁর পিছনে যে জিনিসটি বেশি কাজ করেছে তা হল "তাকওয়া"। যখন দেখেছে একজন মুসলিম কথায়; কাজে হৃদ্যতাপূর্ণ তখনই তাদের ইসলামের প্রতি আগ্রহ জন্মেছে । এমন অনেক সাহাবী এবং মুজাহির ছিলেন যারা রাসূল (সাঃ) এর মুখের হাসিতে ইসলামকে ভালবেসে ফেলেছিলেন । তাই ইসলামে প্রত্যেক ব্যক্তিকে কৃতকাজ কর্মের জন্যে আল্লাহ্‌র কাছে জবাবদিহিতার ব্যবস্থা রেখেছে; আপনি আপনার কাজ দ্বারা কিংবা ব্যবহার দ্বারা কতটুকু আকর্ষণ করেছেন ইসলামকে জানার এবং ভালবাসার ।

একজন জিহাদি ব্যক্তি হওয়ার জন্য আপনার প্রথম কর্তব্য হল আল্লাহ্‌ এবং ইসলামকে মন থেকে ভালবাসা এবং রাসূলের আদর্শ সঠকভাবে জানা । তা না জেনে ভালবাসি বলে তাঁর দোহাই দিয়ে অন্যের গলা কাটতে ইসলাম কখনও সায় দেয় না । এই ভালবাসার মাধ্যমে আপনি বাকি দশটি মুসলমানের স্বাভাবিক জীবন নষ্ট করতেছেন ।

এভাবে তাঁরা কিভাবে রাসূলকে ভালবাসল; যখন রাসূল বলেন "দুজন মানুষের মাঝে ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত করে দেওয়া হচ্ছে সাদকাহ; কোন আরোহীকে তাঁর বাহনের উপর আরোহন করতে বা তাঁর উপর বোঝা উঠাতে সাহায্য করা হচ্ছে সাদকাহ; ভালো কথা হচ্ছে সাদকাহ; সালাতের জন্য প্রত্যেক পদক্ষেপ হচ্ছে সাদকাহ এবং কষ্টদায়ক জিনিস রাস্তা থেকে সরানো হচ্ছে সাদকাহ"(সহিহ বুখারী ২৯৮৯)

কোথায় আমরা ভালবাসলাম; একজনকে গুপ্তহত্যা করে লাখো মুসলিমের প্রভুর প্রতি ভালবাসার পথকে কণ্টকময় করলেন; এই বুঝি শিক্ষকের আদর্শে বেড়ে উঠা । এই জন্য বোধহয় রাসূল (সাঃ) আল্লাহ্‌র কাছে অনুযোগ করবেন যে তাঁর উম্মাত কুরআনকে; কুরআনের শিক্ষাকে পরিত্যাগ করেছিল।( সূরা আল ফুরকান ২৫:৩০)। রাসূলের সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে আমরা তাঁর সুন্নাহকে অপাংক্তেয় করে ফেলেছি ।

আমরা এ জামানার মুসলিমরা না জানি দ্বীন না জানি ভালবাসা । কিভাবে দ্বীনের পথে থেকে অন্যকে ভালবাসতে হয় তা আমাদের অজানা । কিভাবে ভালবাসার মানুষের সম্মান রক্ষা করতে হয় তা আমাদের কাছে অজানা । কিভাবে জানব যখন দ্বীন এবং রাসূল দোহাই দেওয়া অবধি , যখন মনে থাকে ব্যাটম্যানের কিংবা মারদাঙ্গা ফিল্মের হিরোর আদর্শ । অবশ্যই আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলকে ভালবাসতে হবে এবং সেই ভালবাসা স্থায়িত্ব করার জন্য জানতে হবে; মানতে হবে । অবশ্যই কিচ্ছা কাহিনী দিয়ে নয়; কোরআন এবং হাদিসের আলোকে । নিজের ভালবাসার জায়গায়টি শুধু আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলের নামে স্থায়িত্ব হলেই ফরমালিন মুক্ত ভালবাসা সম্ভব ।

তাহলে রাসূলকে (সাঃ) অবমাননার জন্য কি করব; গুপ্তহত্যা কি সাপোর্ট করব ; রাসূল (সাঃ) ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কিভাবে অপবাদ ও অপমান প্রতিহত করেছেন পরবর্তী পর্বে জানানোর চেষ্টা হবে ।

মন্তব্যঃ ইহা আমার একান্ত অভিমত; কোরআন এবং হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক হলে জানানোর পরামর্শ রইল ।

০৯ শাবান ১৪৩৭ হিজরি

চলবে..................
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১৬ রাত ১০:৩৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প বলেছে, বাংলাদেশ পুরোপুরি এনার্খীতে, তারা মাইনোরিটির উপর অত্যাচার করছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৬



৩ দিন পরে আমেকিকার ভোট, সাড়ে ৬ কোটী মানুষ ভোট দিয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যে; ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৫১ ভাগ। এই অবস্হায় সনাতনীদের দেওয়ালী উপক্ষে ট্রাম্প টুউট করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×