গুনিনি কিন্তু হঠাৎ ফেসবুকের নিউজফিডে চোখ আঁটকে গেল "দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেল রানা প্লাজা ট্রাজেডির তিনটি বছর"। কথাটা দেখতে অনেক তেতো সত্য । কিত্নু এই তেতোর মাঝে যে ভয়ংকর সত্য লুকায়িত তা বিবেক না থাকলে চোখে পরবে না । সত্যি কি আমরা এই ট্রাজেডী দেখতে দেখতে পার করেছি নাকি বেদী নির্মাণ আর ত্রাণ লুটের মহড়ার নিউজ পড়ে ভুলে বসেছি । নাকি বিবেক কে "use me" চিহ্নিত ডাস্ট বাক্সে ফেলে নাকে তেল দিয়ে আর একটি ট্রাজেডীর পহর গুনেছি ।
সাভার ট্রাজেডী কি দিয়ে গেল আমাদের ?
শুধু কি লোক দেখানো শোকের মাতম, আহাজারি । নাকি এই মরা লাশ নিয়ে মিছিল খেলা, রং খেলা । নাকি লুটেরাদের লুটের ফন্দি খুলে বেড়ানোর ধান্দা ।
আমরা ট্রাজেডীর সময় কি তার পরবর্তী কয়েকটা সময় বিল্ডিং কোড নিয়ে লম্ফ জম্ফ করি, কতক লোক কর্মকর্তা আর তাদের গুষ্টিশুদ্ধ গালি, উপগালি দ্বারা উদ্ধারের চেষ্টা করি । আর আমার মত নব্য কমজ্ঞানী নামধারী মুসলিম ব্লগাররা মৃত্যু নিয়ে আয়াত এবং হাদীসের বন্যায় নিউজফিড প্লাবিত করি ।
কিন্তু মৃত্যু কি শুধু কয়েকটা বিবেকেহীন কর্ম দ্বারা নিজেকে মাতিয়ে রাখা পর্যন্তই নাড়া দেয়ার বিষয় ?
মৃত্যুকে স্মরণ করা মানে কি পতাকার অর্ধ নমণ, নাকি চোখ বন্ধ করে এক মিনিট নিরবতা পালন নাকি কালো ব্যাজে একটা দিন মনে করা । আসলে ই কি মৃত্যু এতো নিছক বিষয়, এতো ভুলে যাবার বিষয় ।
বিজ্ঞান বলে প্রত্যকটা জিনিসেরই cause and effect আছে । প্রত্যেকটা ট্রাজেডীর impact হল কালো ব্যাজ, এক মিনিট নিরবতা কিংবা বেদী নির্মানে পতাকা অর্ধ নমন নহে । impact হল, বিবেক নাড়া দেয়া । মৃত্যু সম্পর্কে নিজেকে বেশি বেশি করে মনে করা ।
মৃত্যু কখন আসবে, কোথায় আসবে তা আপানার জানা নেই । কিন্তু মৃত্যু নির্দিষ্ট সময় এই রানা প্লাজা কিংবা আপনার বিছানায় এসে আপনাকে গ্রাস করে নিবে ।
অকাল মৃত্যু দিয়ে আমরা কি নিজের বিবেককে ঘুমিয়ে রাখতে চাই ?
মৃত্যু আসবে এবং তাতে বিশ্বাস রাখা যেমন মুমিন মুসলমানের বিত্তির অংশ ; তার সাথে নিজেকে মৃত্যুর জন্য তৈরি রাখা ও মুসলমানের কর্তব্য ।
যখন আল্লাহ্ আমাদের উদাহরণসহ শিক্ষা দেন তখন আমরা আফসোস করি, জিহবা দিয়ে তু তু শব্দ করি । আসুন আর একটি ট্রজেডীর পুর্বে নিজের বিবেক সুস্থ করি, নিজেকে ভাবাই মৃত্যু কি ; কেন ।
সর্বশেষে এই আয়াতটি উল্লেখ করলাম;
"বলুন, তোমাদের প্রাণ হরণের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা তোমাদের প্রাণ হরণ করবে। অতঃপর তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।" (সূরা সিজদাহ ৩২: ১১)
মোঃ তাজুল ইসলাম
১৬ রজব ১৪৩৭ হিজরী