বাংলাদেশ যুদ্ধের অন্যতম ‘হিরো’ লেফটেন্যান্ট জেনারেল জে এফ আর জেকব প্রয়াত। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ভারতের হাতে শোচনীয় পরাজয়ের পর ইসলামাবাদের বাহিনী যে প্রক্রিয়ায় আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল, সেই প্রক্রিয়ার রূপকার ছিলেন জেকব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।
১৯ বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন জেকব। কর্মজীবনে তিনটি খুব বড় যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়েছেন, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে লড়েছেন, ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে দাঁড়িয়ে ভারত যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল, তখন জে এফ আর জেকব মেজর জেনারেল পদে। তিনি তখন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কম্যান্ডের প্রধান। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে ভারতের পূর্ব সীমান্তে ভারতীয় বাহিনীর হাতে নাস্তানাবুদ হয়ে যায় পাকিস্তানের সেনা। পশ্চিম সীমান্তেও হারের মুখ দেখতে হয়েছিল পাকিস্তানকে। স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ। ঢাকা থেকে ইসলামাবাদের দিকে উড়ে যাওয়ার সুযোগ আর পায়নি ‘খান সেনা’ (পাকিস্তানের সেনাকে তখন এই নামেই ডাকা হত)। মেজর জেনারেল জেএফ আর জেকব পাকিস্তানের বিশাল বাহিনীকে বাংলাদেশের মাটিতে আত্মসমর্পণে বাধ্য করেছিলেন। ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করে বাংলাদেশের উপর নিজেদের অধিকার বিসর্জন দিতে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তান। ১৯৭১-এর যুদ্ধ চলাকালীন এবং তার পরেও বহু দিন ধরে দুই বাংলায় জেকবের নাম মুখে মুখে ফিরত। পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে জেকব প্রবল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৭৮ সালে জেকব যখন অবসর নেন, তখন তিনি ভারতীয় সেনার লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে।
আরও পড়ুন:-
বিএনপিকে অবৈধ ঘোষণা করা হতে পারে, বিশাল জনসভায় ইঙ্গিত হাসিনার
বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নেওয়া এবং নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকায় অবসরের পরেও সরকার নানা সময়ে জেকবের পরামর্শ নিয়েছে। পরে তিনি পঞ্জাবের রাজ্যপাল পদেও কাজ করেছেন। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি অসুস্থ ছিলেন বেশ কিছু দিন ধরেই। বুধবার সকালে তিনি প্রয়াত হন। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
----------------------------------------------------------------------
আনন্দবাজার পত্রিকা ৷ আজকের [13/01/16] নিউজ
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২০