অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ কথাটা শুনলেই আমাদের মানসপটে ভেসে আসে আফ্রিকা মহাদেশের(উত্তর আফ্রিকা বাদে) কথা।অথচ আফ্রিকা কখনোই অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ ছিলো না।তাকে অন্ধকারে আবৃত করেছে ফরাসি,বেলজিয়াম,পর্তুগিজ সহ ইউরোপীয় সভ্য(!) দেশগুলো।
মধ্যযুগে আফ্রিকার (বিশেষ করে উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকার) এক সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য ছিলো। উত্তর আফ্রিকা মোটামুটি তা ধরে রাখতে পারলেও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো এখন সভ্যতার অতল গহীনে পর্যবসিত। অথচ এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিটি পশ্চিম আফ্রিকার অধিবাসী।
আসুন দেখে নিই মধ্যযুগে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশগুলোর সমৃদ্ধ ইতিহাসের দিনগুলি।
পশ্চিম আফ্রিকায় আরব বণিকদের আগমনঃ নতুন যুগের সূচনা যেখান থেকে!
জাজিরাতুল আরবে ইসলাম আবির্ভাবের পরপরই এটি জাজিরাতুল আরব পাড়ি দিয়ে ১০০ বছরের মধ্যেই উত্তর আফ্রিকা(মাগরেব) হয়ে পৌঁছে যায় ইউরোপীয় ভূখন্ডে। অর্থাৎ ৭ম শতাব্দীর মধ্যেই বিস্তীর্ণ সাহারা মরুভূমির উত্তর অংশে ইসলাম পৌঁছে যায়।কিন্তু মুসলিম সৈন্যদলের পক্ষে সাহারা মরুভূমি পাড়ি দিয়ে ইসলামকে পশ্চিম আফ্রিকা তথা সাব সাহারা অঞ্চলে আনা সম্ভব হয়নি।
কিন্তু মুসলিম বণিকরা এই সময় বাণিজ্যের জন্য ব্যাপকহারে সাব সাহারা অঞ্চলে গমন করতো।বিশেষ করে ঘানা তে তখন একটা সাম্রাজ্য ছিলো যা ব্যাবসা বাণিজ্যিের জন্য বিখ্যাত ছিলো সেযুগে।
১)
ঘানা_সাম্রাজ্যে_ইসলাম ও ঘানার_অর্থনৈতিক_অবস্থাঃ
তৎকালীন ঘানা সাম্রাজ্যটি আজকের মৌরতানিয়া,সেনেগাল,নাইজার ও মালি নিয়ে গঠিত একটি সমৃদ্ধ সাম্রাজ্য(আজকের ঘানা রাষ্ট্র ও তৎকালীন ঘানা সাম্রাজ্য অবশ্য এক জায়গা না)।সমৃদ্ধ রাজ্য হওয়ায় এই রাজ্যে ব্যাবসা বাণিজ্য উপলক্ষে দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই আসতো।
বিখ্যাত আন্দালুসিয়ান ঐতিহাসিক আল বাকরি এগারো শতাব্দীতে ঘানা সফর করেন।তার মতে,ঘানা অর্থনৈতিকভাবে খুবই উন্নত ছিলো।
ঘানা সাম্রাজ্যের রাজাদের ইসলাম গ্রহণ করার দলিল পাওয়া যায়নি।তবে তারা মুসলিম বণিকদের সাথে নিয়মতি বাণিজ্যক লেনদেন করতো।শহরের একদিকে মুসলমানদের আবাস ছিলো।আর বাকরির মতে,ঘানার রাজধানী দুইটি অংশ নিয়ে গঠিত ছিলো।যার একদিকে থাকতো মুসলিমরা।সেখানে বারোটি মসজিদ ও ছিলো।
আল বাকরি আরো বলেন,সেখানকার রাজা মুসলিম না হলেও তার অনেক মন্ত্রী ও পরিষদবর্গ মুসলিম ছিলো।ফলে এই সাম্রাজ্যের সাথে আরবদের একটা যোগাযোগ ছিলো।যার ফলে আরব বণিক এবং এই সাম্রাজ্যের মধ্যে বাণিজ্য বহুল পরিমাণে সম্পাদিত হতো।
ঘানা সাম্রাজ্যের সিজিলমাসা শহর থেকে মুসলিম বণিকরা দুইদিকের রুটে বাণিজ্য করতো।একটা রুট ছিলো -
সিজিলমাসা-টেগহাসা-আওডাগাস্ট।
আরেকটি রুট হলো-
সিজিলমাসা-তওয়াত-গাও-টিম্বাকটু।
ঘানা সাম্রাজ্য নিয়ে সর্বপ্রথম লিখেন মুসলিম ঐতিহাসিক আল খাওয়ারিজমি।তার মতে মুসলিম বণিকরা এই সমস্ত শহরে অবাধে বিচরণ করার সুবাদে এখানকার মানুষ ইসলামের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযেগ পায়।অনেক বণিক এসব শহরগুলোতেই বিয়ে করে থেকে যান।পাশাপাশি কিছু কিছু উপজাতি ও ইসলাম গ্রহণ করে।এভাবে একটি মুসলিম কমিউনিটি গড়ে উঠে ঘানা সাম্রাজ্যে।
অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী ঘানা সাম্রাজ্যে প্রায় তিনশ/চারশ বছর ধরে সংখ্যালঘু মুসলিমরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই বসবাস করে।এরপর একটাসময় উত্তর আফ্রিকার আল মুরাবিদ এবং মালি সাম্রাজ্যের আক্রমণে অবসান ঘটে ঘানা সাম্রাজ্যের।
ঘানা সাম্রাজ্যের অবসানে সেখানে গড়ে উঠে মালি সাম্রাজ্য।আর এই মালি সাম্রাজ্য পশ্চিম আফ্রিকাকে নিয়ে যায় অর্থনীতি ও রাজনৈতিক ভাবে সফলতার সর্বোচ্চ চূড়ায়।মালি সাম্রাজ্যে নিয়ে পরে আলোচনা করা হবে।
২)
টেকুর_রাজ্য। নিগ্রো জনগোষ্ঠীর প্রথম ইসলাম গ্রহণঃ
৮৫০ খ্রিস্টাব্দে টেকুর রাজ্যের "দিয়াওগো রাজবংশ " ইসলাম গ্রহণ করে।এই বংশের বিখ্যাত শাসক "ওয়ার জাবি" ১০৩০ সালে এই রাজ্যে ইসলামী ল চালু করেন।
টেকুর রাজ্যের রাজধানীর নাম ও ছিলো টেকুর।যা অষ্টম নবম শতাব্দীর সময় ব্যাবসা বাণিজ্যিের প্রাণকেন্দ্রে ছিলে।আরব ও বার্বার বণিকরা মরক্কো হতে "ওলের কাপড়" সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস এই রাজ্যে আনতেন।আর বিনিময়ে নিয়ে যেতেন স্বর্ণ।
সমৃদ্ধশালী এই টেকুর রাজ্যের পরিসমাপ্তি ঘটে একাদশ শতাব্দীতে।আল মুরাবিদ রাজবংশের আক্রমণে।
৩)
মালি সাম্রাজ্যে! বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মানুষের রাজ্য!
ঘানা সাম্রাজ্যের ধ্বংসের উপরই একসময় উৎপত্তি হয় মালি সাম্রাজ্যের। এই সাম্রাজ্যের বিখ্যাত শাসক ছিলেন দুইজন। একজন হলেন মালি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা "সুন্দিয়াতা"।যিনি ১২৩০ হতে ১২৫৫ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন।অপর বিখ্যাত শাসক ছিলেন "মানস মুসা"।
মানস মুসা ১৩১২ সাল থেকে ১৩৩৭ সাল পর্যন্ত সুদীর্ঘ ২৫ বছর মালি সাম্রাজ্য তথা আজকের মালি,মৌরতানিয়া, সেনেগাল,নাইজার কে শাসন করেছিলেন।তিনি খুবই ধর্মপ্রাণ ছিলেন।তার আগের শাসকরা যেখানে বিভিন্ন ধর্মীয় স্কলারের অপছন্দের ছিলেন,সে জায়গায় মানস মুসাকে ধর্মীয় স্কলাররা অনেক পছন্দ করতেন।
মানস মুসা সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত হয়ে আছেন তার হজ্ব পালনের মধ্য দিয়ে।পশ্চিম আফ্রিকা হতে বালিময় বিস্তীর্ণ সাহারা পাড়ি দিয়ে তিনি মিশর পৌঁছান।এরপর মিশর হতে মক্কায় যায় তার বিশাল হজ্ব বহর।সুদীর্ঘ এই যাত্রাপথে তিনি এতবেশি স্বর্ণ দান করেছিলেন যে,মিশরে এরপর কয়েক দশক স্বর্ণের দাম খুব কম ছিলো।
১৩২৪-২৫ সালে তার এই হজ্জব্রতের ঘটনা ঘটে।মক্কা হতে ফিরে আসার সময় তিনি অনেক স্কলার ও স্থাপত্যবিদদের সাথে করে নিয়ে আনেন।এই সকল স্কলাররা মালিতে শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটান।আর স্থাপত্যবিদরা শৈলীপূর্ণ স্থাপত্য নির্মাণ করেন।এই স্থাপত্যবিদরা সে সময় ৫ টি অপূর্ব মসজিদ নির্মাণ করেন মালি সাম্রাজ্যের বুকে।এছাড়াও আরব হতে আসা স্কলাররা মালির প্রশাসনিক সিস্টেমকে ও সুগঠিত করে তোলে।
মানস মুসা এই জ্ঞানী ব্যক্তিদের আনার মধ্য দিয়ে মালিতে ইসলামের ভিত মজবুত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ভাবে ও মালিকে আরো সুগঠিত করতে সক্ষম হন।মানস মুসার সময়ে মালি কূটনৈতিক সম্পর্ক তেরি করে মিশর,তিউনিসিয়াসহ পুরো মধ্যপ্রাচ্যের সাথে।আর এভাবে মানস মুসা মালিকে পরিচিত করে তোলেন বিশ্বব্যাপী।
মালি সাম্রাজ্যের স্বর্ণযুগে মালিতে ভ্রমণ করতে চসেন বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা। তার সময়ে শাসক ছিলেন মানস সুলায়মান ( ১৩৪১-৬০)।
ইবনে বতুতা তার ভ্রমণ বিবরণীতে মালিকে একটি উনত ও সমৃদ্ধ জনপদ হিসেবে উল্লেখ করেন।ইবনে বতুতা ছাড়াও আরো অনেক বিখ্যাত পরিব্রাজক ও স্কলাররা সে সময় মালিতে ভ্রমণ করতে ও জ্ঞান অর্জন করতে যেতো।
৪)
কানেম_বোর্নো_সাম্রাজ্যঃ
বর্তমানে চাদ ,ক্যামেরুন,নাইজার,নাইজেরিয়া ও সুদান জুড়ে বিস্তৃত ছিলো কানেম বোর্নো সাম্রাজ্য।কানেম নামক জায়গাটি বর্তমান পশ্চিম আফ্রিকার চাদ নামক দেশের উত্তরে অবস্থিত।প্রখ্যাত মুসলিম মনীষী মুহাম্মদ মানি দ্বারা এই অঞ্চলে ইসলামের বিস্তার ঘটে।
উম্মে জিলানিই কানেম রাজ্যের প্রথম শাসক যিনি ইসলাম গ্রহণ করেন।তিনি ১০৮৫ সাল থেকে ১০৯৭ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন।তিনি খুব ধর্মপ্রাণ শাসক ছিলেন।হজ্জব্রত পালনের জন্য মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেও যাত্রার মাঝপথে মিসরে এসে তিনি ইন্তেকাল করেন।
অবশ্য উম্মে জিলানির ইসলাম গ্রহণের আগেও কানেম রাজ্যের সাথে ইসলামের সংযোগ ছিলো।প্রখ্যাত আন্দালুসিয়ান ঐতিহাসিক আল বারকির মতে, অষ্টম শতাব্দীর মাঝামাঝিতে আব্বাসীয়দের হাতে উমাইয়া রাজবংশের পতন হলে কিছু সংখ্যক উমাইয়া বংশীয় লোক কানেম রাজ্যে এসে আশ্রয় নেন।
কানেম রাজ্য ইসলামে অন্তর্ভুক্তি হওয়ার পরে রাজ্যটি মধ্য সুদান, আরব এবং মাগরিবের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।
প্রথম মুসলিম শাসক উম্মে জিলানির মৃত্যুর পর কানেম রাজ্যের ক্ষমতায় আসেন তার পুত্র দুমামা - ১ (১০৯২-১১৫০)।তিনি তার তৃতীয় হজ্ব যাত্রার সময় মিসরেই মারা যান তার পিতার মতো।
দুমামা-২ ( ১২২১-৫৯) এর রাজত্বের সময় কানেম রাজ্য তিউনিসে একটি দূতাবাস প্রতিষ্ঠা করে,এমনটাই বইয়ে উল্লেখ করেন বিখ্যাত আন্দালুসিয়ান ঐতিহাসিক ইবনে খালেদুন।এছাড়াও সে সময়ে কানেম রাজ্যটি মিসরে মাদরাসা ইবনে রাশিক নামে একটি কলেজ কাম হোস্টেল প্রতিষ্ঠা করেন।এছাড়াও তিউতে (আলজেরিয়ান সাহারা) একটি দূতাবাস স্থাপন করা হয় কানেম রাজ্যের।
তেরো শতাব্দীর সময়ে কানেম রাজ্যটি ইসলামী জ্ঞান চর্চা ও সভ্যতার অন্যতম কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়।সে সময় মালি থেকে অনেক স্কলার কানেম রাজ্যে গমন করেন শিক্ষা সংক্রান্ত কাজে।কানেম রাজ্যের তখনকার স্কলার ও কবিরা খুবই উচ্চমানের আরবি সাহিত্য রচনা করেন।
চৌদ্দ শতাব্দীতে কানেম রাজ্যের তার আগের ভূমি হারিয়ে নতুন জায়গায় গিয়ে রাজ্য গড়ে তোলে।যার রাজধানী স্থাপন করা হয় বোর্নো তে।রাজধানী টি স্থাপিত করেন কানেম(বোর্নো) রাজ্যের তৎকালীন সুলতান আলী ডুমামা।' আলী গাজী ' নামে পরিচিত এই শাসক ১৪৭৬ থেকে ১৫০৩ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন।যাইহোক বোর্নো তে স্থাপিত রাজধানী টি কানেম রাজ্যের (পরিবর্তিত বোর্নো রাজ্য) শেষদিন পর্যন্ত রাজধানী হিসেবেই ছিলো।
১৮১০ সালে মাই আহমদের পতনের সাথে সাথে কানেম ও বোর্নো সাম্রাজ্যের সমাপ্তি ঘটে।তবে শিক্ষাদীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে কানেম এরপরেও স্কলারদের আস্থা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
৫)
সুকোতো সাম্রাজ্যঃ
বিখ্যাত স্কলার ও যোদ্ধা উসমান থান ফোদিও কর্তৃক ১৮০৪ সালে এই রাজ্যটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সাম্রাজ্যটি নাইজেরিয়া, নাইজার,বুর্কিনা ফাসো,ক্যামেরুন,মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র জুড়ে বিস্তৃত ছিলো।
তবে এই সময়েই এই অঞ্চলজুড়ে আবির্ভাব ঘটে ইউরোপীয় বণিক ও যোদ্ধাদের।তারা ধীরে ধীরে গ্রাস করতে থাকে সুকোতো সাম্রাজ্য কে।১৯০৩ সালে ব্রিটিশ হাতে পুরোপুরি পতন হয় এই শেষ সাব সাহারা অঞ্চলের সালতানাতটি।
উপরে পশ্চিম আফ্রিকা তথা সাহিলের শুধুমাত্র ৫ টি সমৃদ্ধশালী ও ঐতিহ্যবাহী সাম্রাজ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।এর পাশাপাশি এখানে আরো অনেক সাম্রাজ্য ছিলো মধ্যযুগে।
পশ্চিম আফ্রিকার মধ্যযুগীয় ইতিহাস ঘাঁটলে তাহলে আমরা দেখতে পাই -
ক)তারা অর্থনৈতিকভাবে খুব সমৃদ্ধশালী ছিলো।
খ) পশ্চিম আফ্রিকায় শিক্ষালাভের জন্য দূরদূরান্ত থেকে জ্ঞান পিপাসুরা আসতো।
গ) বিশ্বখ্যাত পর্যটক ও ঐতিহাসিকরা পশ্চিম আফ্রিকার নগর ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা নিয়ে প্রশংসা করে গেছেন।
ঘ) তৎকালীয় সময়ে পশ্চিম আফ্রিকা তথা সাহিলের লোকজন আয় রোজগার বা উন্ন জীবন যাপনের জন্য ইউরোপ বা মধ্যপ্রাচ্যে স্থানান্তরিত হয়নি।বরং ইউরোপীয়রাই সপ্তদশ ও অষ্টাদা শতাব্দীর সময় ব্যাপক হারে এখানে আসতে শুরু করেন।
ঙ) আরবরা পশ্চিম আফ্রিকায় ইসলাম নিয়ে আনলে ও এখানকার সম্পদ পাচার করেনি,ঐতিহ্য ধ্বংস করেনি।আর তাইতো মধ্যযুগে এখানকার স্থানীয় সাম্রাজ্য গুলো দাপটের সাথে রাজত্ব করে গেছে।
চ) ইউরোপীয় কলোনি স্থাপন করার পর
থেকেই পশ্চিম আফ্রিকা জুড়ে দুর্ভিক্ষ, দারিদ্র্য,দেশত্যাগ এগুলো লেগেই আছে।তাহলে কি এটাই প্তীয়মান হয় না ইউরোপীয় শক্তির শোষণই আফ্রিকা কে নিঃশেষ করেছে?
সাহিল অঞ্চলের শাসক মানস মুসার সম্পদ নিয়ে রচিত হয় কতো গল্প,উপন্যাস কিন্তু মানস মুসার উত্তরসূরীরা আজ হেঁটে,নৌকায় করে পাড়ি জমাচ্ছে সুদূর ইউরোপে।যে আফ্রিকায় ব্যাবসা বাণিজ্য করার জন্য দূরদূরান্ত হতে বণিকরা আসতো সেই আফ্রিকা আজ দুর্ভিক্ষে জর্জরিত।
আফ্রিকা সমৃদ্ধ জনপদগুলোকে এভাবে শেষ করে দেওয়ার পরেও কি ইউরোপীয় সভ্য দেশগুলো কখনো আফ্রিকানদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়েছে? তারা কি এটার জন্য অনুতপ্ত হয়েছে? সভ্য দেশগুলোর দিকে কি আমরা এসব প্রশ্ন করেছি?
বাকস্বাধীনতার নামে এইসব সভ্য দেশসমূহের অসভ্যতার মূল খুঁজতে হলে আপনাকে তাই তাদের কলোনিজম পিরিয়ড কে পাঠ করতেই হবে।
-সাইফুদ্দীন শাহেদ
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১:০১