লিভ টু গেদার, ওপেন ম্যারেজ, মিউচুয়াল সেক্স এগুলোকে আধুনিকতা বলেন বোদ্ধারা
আধুনিকতা বলতে তেনারা যাই বুঝুক, চৌদ্দশ' বছর আগেই এগুলার নজির-প্রমাণ পাওয়া যায়।
আসুন জেনে নিই আইয়্যামে জাহেলিয়াতে আরবের কিছু বিবাহের প্রচলন।
প্রাচীন আরবে ৪ ধরণের বিবাহ জনপ্রিয় ছিল (মোট ৭ ধরনের বিবাহ প্রথার কথা জানা যায়) যার ১টি কে বিধিবদ্ধ করে ইসলাম গ্রহণ করে।
প্রশ্ন হল বাকী ৬টি কি ছিল?
>>
বিবাহ টাইপ ২:
স্বামী তার স্ত্রীকে বলতো যে তুমি হায়েয থেকে মুক্ত হয়ে অমুকের সাথে সহবাস করবে। তাকে অনুরোধ করে অথবা যে কোন উপায়ে রাজী খুশী করে তার সাথে যৌন মিলনে মিলিত হবে, স্ত্রী তার স্বামীর নির্দেশ পালনার্থে নির্ধারিত ব্যক্তির সাথে যৌন মিলনে মিলিত হতো, তারপর যতক্ষণ পর্যন্ত সন্তান ধারনের নিদর্শনাবলি প্রকাশ না পেতো ততক্ষণ পর্যন্ত স্বামী স্বীয় স্ত্রীর সাথে সহবাস থেকে বিরত থাকতো। এ ধরনের বিবাহকে “ইস্তেবজা” বলা হতো। এ ধরনের বিবাহ প্রথা সাধারণত: সাহসী সন্তান লাভের আশায় বীর সাহসী বংশের লোকদের সাথে চালু ছিল।
আধুনিক বিবর্তিত রূপঃওপেন ম্যারেজের সাথে সংগতিপূর্ণ
>>
বিবাহ টাইপ ৩:
একাধিক পুরুষ যার অধিক সংখ্যা নয় পর্যন্ত ধার্য ছিল তারা একের পর এক কোন মহিলার সাথে যৌন মিলনে মিলিত হতো। এরূপ মিলনের দ্বারা গর্ভবতী হয়ে যখন সন্তান প্রসব করতো, এর কয়েক দিন পর যৌন মিলনকারী সকলকে ডেকে একত্রিত করা হতো। আর প্রথাগত কারণে তাদেরকে তার ডাকে সাড়া দিয়ে অবশ্যই হাযির হতে হতো। একত্রিত হলে মহিলা তাদেরকে তাদের যৌন মিলনের কথা স্মরণ করিয়ে যাকে ইচ্ছা সন্তানকে তার সন্তান বলে রায় প্রদান করতো। ফলে সেই লোক সন্তানের পিতা হিসেবে বিবেচিত হতো। অস্বীকার করার সুযোগ হতো না।
আধুনিক বিবর্তিত রূপঃ তসলিমা নাসরিনের জরায়ু স্বাধীনতার সাথে খাপে খাপ মেলে
>>
বিবাহ টাইপ ৪:
মহিলাদের পতিতালয়ের ন্যায় বাড়ী ঘর দেয়া থাকতো, পুরুষরা তাদের সাথে যৌন স্বার্থ চরিতার্থ করতো। যখন গর্ভবতী হয়ে সন্তান প্রসব করতো তখন সকলকে ডাকা হতো এবং পুরুষগণ আসতে বাধ্য হতো, সাথে সাথে গণককেও ডাকা হতো সে সন্তানের এবং যৌন মিলনকারীদের অবস্থা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যাকে পিতা সাব্যস্ত করতো তাকেই পিতা হিসেবে চূড়ান্ত করা হতো।
আধুনিক বিবর্তিত রূপঃ পতিতাদের সাথে সঙ্গম (পার্থক্য পতিতারা পয়সা নেওয়ায় সন্তানের পিতৃত্ব দাবী করতে আসেনা)
>>
বিবাহ টাইপ ৫:
মেয়ে এবং পুরুষ গোপনে উভয়ের সম্মতিতে যৌন মিলনে লিপ্ত হোত এতে কারো আপত্তি করার অবকাশ হতো না। ঐ যুগে এরূপ বিবাহকে ‘নিকাহুল খাদান’ বলা হতো।
আধুনিক বিবর্তিত রূপঃ রুম ডেটিং
সুত্রঃ ফাতহুল বারী (৯/১৫৮)
>>
বিবাহ টাইপ ৬:
এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোন পুরুষ কোন মহিলার সাথে যৌন মিলনের জন্য কথা বার্তা পাকা করে নিতো, এ ধরনের বিবাহ প্রথাকে ‘নিকাহুল মুতা’ বলা হতো।
আধুনিক বিবর্তিত রূপঃ লিভ টুগেদার
সুত্রঃ ফাতহুল বারী (৯/১৫৮)
>>
বিবাহ টাইপ ৭:
দুই স্বামী উভয়ের স্ত্রীদের মধ্যে বদলা বদলী করে নিতো এবং এর সাথে বেশতি কিছু উপহার-উপঢৌকন দিয়ে দেয়া হতো। এরূপ বিবাহ প্রথাকে “নিকাহুল বদল” বলা হতো।
আধুনিক বিবর্তিত রূপঃ ওপেন ম্যারেজ
সুত্রঃ ফাতহুল বারী (৯/১৫৮)
>>
বিবাহ টাইপ ১:
ইসলামীক তরিকার মতই, যেটি পরে বিধিবদ্ধ করে গৃহীত হয়। {রেফারেন্স}
হযরত রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়াত লাভের পরবর্তী সময়ে ইসলামে স্বীকৃত বিবাহ ছাড়া অন্য সব ধরনের বিবাহকে হারাম ঘোষণা করেন।
ইসলামই অবাধ যৌনতা ও উশৃঙ্খলতাকে বন্ধ করে সুস্থধারা বিবাহ ও মোহরানা বাধ্যতামূলক করে নারীদের সম্মানিত করা শুরু করে।
তাই আধুনিককামীরা যারা বিবাহ বহিভূর্ত যৌনতাকে "আধুনিকতা" আর ইসলামীক বিবাহ কে "পৌরাণিক"আখ্যায়িত করার দুঃস্বপ্নে বিভোর, তারা ইতিহাস থেকে জানুন কত পুরানো আপনাদের আধুনিকতা!
আর ইসলামী চুলকানীবাজ (ব্লগে নাস্তিক প্রায় নেই, যারা বর্তমান সবাই মূলত ইসলামী চুলকানীবাজ) যারা মনে করেন ইসলাম বহুবিবাহ এর প্রচলনের মাধ্যমে যৌনতার প্রচার ঘটিয়েছে, তারা উপ্রের ঘটনা পড়ে মুক্তমণা হয়ে ভাবতে থাকুন ইসলাম কি করেছে আর করে নাই।
===========================================
এবার আসুন দেখা যাক ইসলাম ৪টি বিয়ে সম্পর্কে কি বলে-
===========================================
(An-Nisaa: 3)
"আর যদি তোমরা ভয় কর যে, এতীম মেয়েদের হক যথাথভাবে পুরণ করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে; এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা।
"
[অনুবাদঃ মা'রেফুল কোরআন, সৌদি আরব থেকে প্রিন্টেড ভার্সন]
এই আয়াত দ্বারা পরিস্কারভাবে প্রমাণিত হয় যে, একাধিক বিবাহের অনুমতি "ন্যায় প্রতিষ্ঠার" শর্তের সাথে প্রদান করা হয়েছে। অসংখ্য হাদীসেও একই শর্তের কথা বিদ্যমান।
এ কারণেই ফকীহগণ বিবাহের ক্ষেত্রে স্ত্রীদের অধিকার আদায়ের ক্ষমতার শর্তারোপ করেছেন। তা না হলে একাধিক বিবাহ করা মারাত্মক গোনাহ এবং আল্লাহ পাকের আদালতে কঠোর বিচারের কথা পরিস্কার ভাষায় বলে দিয়েছেন।
প্রসিদ্ধ হাদীস বিশারদ কাজী আবু বকর ইবনুল আরাবী বলেন
قال علماؤنا : معناه في القسم بين الزوجات والتسوية في حقوق النكاح ، وهو فرض وأخذ الخلق باعتداد الظاهر لتيسره على العاقل ، فإذا قدر الرجل من ماله ومن بنيته على نكاح أربع فليفعل ، وإذا لم يحتمل ماله ولا بنيته في الباءة ذلك فليقتصر على ما يقدر عليه (احكام القران-ج ২ ص১৬০)
“আমাদের উলামাদের মতে এই আয়াতের অর্থ এই যে, যদি তোমরা একাধিক স্ত্রীদের অধিকার আদায়ে এবং সকলের সাথে সমান আচরণ করনে আশংকা বোধ করো তাহলে একজনকে বিবাহ করে ক্ষান্ত হও, কেননা সকলের সাথে সমান আচরণ করা ফরজ। এ ব্যাপারে মূলধারা জানা থাকা উচিৎ যে, শরীয়তের হুকুম আহকাম বাহ্যিক অবস্থার দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা হয়, আর এটাই জ্ঞানীদের জন্য সহজ পদ্ধতি। এই মূলধারা অনুযায়ী যে লোক বাহ্যিক ভাবে শারিরীক শক্তি এবং অর্থ সম্পদের অধিকারী হয় এবং চারজন স্ত্রীর অধিকার পুরাপুরি ভাবে আদায় করতে সক্ষম হয়, তার জন্য চারজন স্ত্রী রখার অনুমতি আছে, আর যে লোক শারিরীক শক্তি এবং অর্থনৈতিকভাবে চারজন স্ত্রীর হক এবং অধিকার পুরোপুরিভাবে আদায়ে সক্ষম নয় সে কেবল একজন স্ত্রী বিবাহ করবে যার অধিকার আদায় করা তার জন্য সহজ হবে।”
প্রসিদ্ধ তাবেয়ী মুফাসসির যাহহাক বলেন,
فان خفتم ان لا تعدلوا في العشرة والقسم بين الزوجات الاربع والثلاث والاثنين فمنع من الزيادة التي تؤدي الي ترك العدل في القسم وحسن العشرة وذالك دليل علي وجوب ذالك (قرطبي ج৫ص১৯)
“যদি একাধিক স্ত্রীদের সাথে সমান ভাবে আদল করতে আশংকা বোধ কর, তাহলে মাত্র একজন স্ত্রীই যথেষ্ট, কেননা আল্লাহ পাক ঐ পরিমান স্ত্রী রাখতে নিষেধ করেছেন যে পরিমানের সাথে রাত্রি যাপন এবং অন্যান্য অধিকার আদায়ে সমতা রক্ষা করা সম্ভব হবে না।এই হুকুমের দ্বারা সমতা রক্ষা করা জরুরী অর্থাৎ ওয়াজিব সাব্যস্থ হয়।
অনেকের মাঝে এই ধারণা আছে যে, যার শক্তি সামর্থ আছে তার জন্য একাধিক বিবাহ করা ফরজ বা সাওয়াবের কাজ,এই ধারণা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন.. উপরের আলোচনা থেকে পরিস্কারভাবে বুঝা যায়।
ফেসবুকে কর্ণেল সামুরাই