
ঠাকুরগাঁও: হাট-বাজারে ঘুরে ঘুরেও চিনি বিক্রি করতে পারছে না মিলটি। ফলে চাষিদের পাওনা পরিশোধ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে সমস্যা। সুগার মিল সূত্রে জানা গেছে, ২০১১-১২ মওসুমে ৪ হাজার ৭৮৫ মে.টন চিনি উৎপাদন হয়। এর মধ্যে অবিক্রিত আছে ২৬ কোটি ১২ লাখ টাকা মূল্যের ৪ হাজার ৭৪৯ মে.টন চিনি।
চাষিদের পাওনা রয়েছে ৫০ লাখ টাকা। মঙ্গলবার সারা দিন ফেরি করে মাত্র ৩ বস্তা চিনি বিক্রি করেছে মিলটি।
মদ বিক্রির টাকায় বেতন-ভাতা, কেরুর ২৫ কোটি টাকা চিনি অবিক্রিত
চুয়াডাঙ্গা : সর্ববৃহৎ চিনিকল চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ২০১১-১২ উৎপাদন মৌসুমের ২৫ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ৪ হাজার ৬৬৫ দশমিক ৬০ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত অবস্থায় গুদামে পড়ে রয়েছে।
চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমের অবিক্রিত চিনি রয়েছে ১৯২ দশমিক ৬০ মেট্রিক টন। সরকার নির্ধারিত দরে এ চিনির বাজার মূল্য প্রায় ২৪ কোটি ৭০ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।
মুক্তবাজার অর্থনীতির দোহাই দিয়ে সরকার খাদ্য শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদিত পণ্যের বাজার নষ্ট করছে। এভাবে চলতে থাকলে এসব প্রতিষ্ঠান একদিন এমনি এমনিই বন্ধ হয়ে যাবে।

সেতাবগঞ্জ চিনিকলে ২৬২২.৯৫ মেঃ টঃ চিনি অবিক্রিত
দিনাজপুর: ২০০৯-২০১০ আখ মাড়াই মৌসুমে ৩ হাজার ২ শত ২৯ মেঃ টন চিনি উৎপাদন হয়। যা লক্ষ মাত্রা অর্জনের অনেক বেশী, তারপরেও ২৮ বছরে মোট লোকসান হয়ে প্রায়ই ৯৮ কোটি টাকা।
উৎপাদিত চিনির সিংহভাগই রয়েছে অবিক্রিত। বর্তমান অবিক্রিত চিনির পরিমাণ ২ হাজার ৬ শত ২২ দশমিক ৯৫ মেঃটন। বগুড়া/ঢাকা থেকে আমদানীকৃত চিনি প্রতি কেজি খুচরা মূল্য ৪৩-৪৪ টাকা।
খুচরা বিক্রেতাদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, আমাদানীকৃত চিনি ধবধব সাদা এবং দামে সস্তা হওয়ার কারণে বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অপরদিকে সেতাবগঞ্জ চিনিকলের চিনি গুণগত মানের দিক দিয়ে উন্নত হলেও আমদানীকৃত চিনির মত ধব-ধবে সাদা ও পরিস্কার নয়।
কুষ্টিয়া চিনিকলের পৌনে ১৩ কোটি টাকার চিনি অবিক্রিত
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান জানান- ২০১১-১২মাড়াই মৌসুমে মিলের লোকশান ১৫কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এই মিলে গত মৌসুমে চিনি উৎপাদিত হয়েছে ২হাজার ৩৫০ দশমিক ৩টন চিনি। কিন্তু এ চিনির মধ্য সামান্য কিছু বিক্রি হয়ে এখন গোডাউনে মজুদ রয়েছে ২হাজার ৩১৯ দশমিক ৫৫ মেট্রিক টন যার বর্তমান বাজার মূল্য ১২কোটি ৭৫লাখ ৭৫হাজার ২৫০ টাকা। একই ভাবে মিলের উৎপাদিত ৪হাজার ৩শত মেট্রিক টন চিটাগুড় থেকে এখন মিলের ষ্ট্রীলের ট্যাংকীতে রক্ষিত আছে ৩হাজার ৪৮৫দশমিক ৬৫৭ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ৩ কোটি সাড়ে ১৮লাখ টাকা।
জয়পুরহাট চিনি কলে ৩০ কোটি টাকার চিনি অবিক্রিত
জয়পুরহাট: সরকার নির্ধারিত দরের চাইতে বিদেশ থেকে আমদানি করা চিনির মুল্য অপেক্ষাকৃতকম হওয়ায় দেশের বৃহত্তম চিনিকল- জয়পুরহাট সুগার মিলস্ লিমিটেডের প্রায় ৩০কোটি টাকা মূল্যের ৫হাজার ৬শ’ মেট্রিক টন চিনি গুদামে অবিক্রিত পড়ে রয়েছে ।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদ উল্লাহ আর্থিক সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে ৩০ কোটি টাকা মূল্যের ৫হাজার ৬শ’ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত রয়েছে ।
সুত্রটি জানায়, প্রতি মাসে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও আনুসঙ্গিক ব্যয় বাবদ এ মিলে প্রায় ১কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু চিনি বিক্রি না হওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন মিলের শ্রমিক নেতারাও।
মোবারকগঞ্জ চিনিকলে ৩৬ কোটি টাকার চিনি অবিক্রিত
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ: উপজেলার মোবারকগঞ্জ চিনিকলে প্রায় ৩৬ কোটি টাকার চিনি ও চিটাগুড় অবিক্রিত রয়েছে।
মোবারকগঞ্জ চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন জানান, বর্তমানে মিলটিতে পাঁচ হাজার ৭৮৪ মেট্রেক টন চিনি ও চার হাজার ৭৭০ মেট্রিক টন চিটাগুড় অবিক্রিত রয়েছে। অবিক্রিত চিনির দাম ৩১ কোটি ৭১ লাখ টাকা এবং চিটাগুড়ের দাম ৫ কোটি টাকা।
তিনি আরো জানান, মিলের চিনি প্রতি কেজির দাম ৫৫ টাকা। অন্যদিকে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত চিনির দাম কেজি প্রতি ৫২ থেকে ৫৩ টাকা। এ অবস্থা চলতে থাকলে এক সময় দেশীয় শিল্প ধংস হয়ে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জিলবাংলা সুগার মিলে ৬ কোটি টাকার চিনি অবিক্রিত
দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর): জিলবাংলা সুগার মিলে ৬ কোটি টাকার চিনি অবিক্রিত। চাষীদের পাওনা ২ কোটি টাকা। ফলে চরম অর্থ সংকটে পড়েছে চিনিকলটি।
মিলের এক কর্মকর্তা জানান, আখের দাম বাড়ানো হলেও চিনির দাম বাড়ানো হয়নি। বর্তমান বাজারে দেশী চিনির চেয়ে আমদানিকৃত চিনির বাজার মূল্য কম, ফলে মিল কর্তৃপক্ষ এবার ডিলারদের নিকট থেকে চিনি উত্তোলনের সাড়া না পেয়ে মিল গেইটে খোলাবাজারে চিনি বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিল এতেও চিনি বিক্রি হচ্ছে না।
বিপরীতে.............
সেপ্টেম্বর দুই লাখ টন চিনি আমদানির সিদ্ধান্ত। এর মধ্যে দুই দফায় ৫০ হাজার টন চিনি আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
জানুয়ারিতে ২৫ হাজার টনের পর গত ১২ ফেব্রুয়ারি দেয়া হয় আরও ২৫ হাজার টনের অনুমোদন। বেশি দাম দিয়ে চিনি কেনায় এ পর্যায়ের ২৫ হাজার টনে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে ১৪ কোটি টাকা।
অপরদেিক ব্রিটিশ একটি কোম্পানির কাছ থেকে ২৫ হাজার টন চিনি আমদানি করছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। টিসিবি’র গুদামে এ চিনি পৌঁছার আগেই ভর্তুকি বাবদ সরকারকে লোকসান দিতে হবে ১০ কোটি টাকা।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১১:১৯