ছেলেঃ বাবা, তোমাকে একটা প্রশ্ন করতে পারি?
বাবাঃ হ্যা, অবশ্যই। কি সেটা?
ছেলেঃ বাবা,তুমি ঘন্টায় কত টাকা ইনকাম করো?
বাবাঃ সেটা তো তোমার জানার দরকার নেই। আর এ ধরনের প্রশ্ন কেনো করছো?
ছেলেঃ আমি জাস্ট এমনিতেই জানতে চাই। প্লিজ বলো না, তুমি ঘন্টায় কত টাকা ইনকাম করো?
বাবাঃ ঠিক আছে, তোমার জানার যেহেতু এতই আগ্রহ তাহলে বলি। আমার ঘন্টায় ইনকাম ১০০০ টাকা।
ছেলেঃ ও আচ্ছা (মাথা নিচু করে)
ছেলেঃ বাবা, আমি কি ৫০০ টাকা ধার পেতে পারি?
বাবা প্রচন্ড রাগান্বিত হয়ে,
“ও আচ্ছা তুমি খেলনা-টেলনা কিছু কিনবে, তাই আমাকে ঐ প্রশ্নটি করেছো তাই না? বেহায়া ছেলে! তোমার লজ্জা থাকা উচিৎ! একবার ভেবে দেখো তুমি কতটা স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছো। আমি রাতদিন পরিশ্রম করি, তোমার এরকম চাইল্ডিস বিহেবিয়র দেখার জন্য? যাও সোজা বিছানায় যাও। তোমার মুখ আমি দেখতে চাই না!”
ছোট্ট ছেলেটি শান্ত ভাবে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো।
লোকটির মেজাজ আগের চেয়ে আরো বেশি খারাপ হতে লাগলো। সামান্য কিছু টাকার জন্য ছেলেটি এমন একটি প্রশ্ন করার সাহস পেলো কি করে!!
ঘন্টাখানেক পর লোকটির মেজাজ একটু ঠান্ডা হলো। মনে মনে ভাবলো, ছেলের বোধ হয় সত্যি সত্যি ৫০০ টাকা খুব দরকার ছিলো। ও তো কখনো টাকা চায়না। লোকটি দরজা খুলে ছেলের রুমে ঢুকলো।
বাবাঃ তুমি কি ঘুমিয়ে পরেছো আব্বু?
ছেলেঃ না বাবা। আমি জেগে আছি।
বাবাঃ সরি আব্বু, আমি বোধ হয় খামাখাই তোমার সাথে এতটা খারাপ আচরন করেছি। আর বেশকদিন ধরেই আমি অযথা তোমার উপর রাগ ঝাড়ছি! এই নাও ৫০০ টাকা।
ছোট্ট ছেলেটি এক লাফে বিছানা থেকে উঠে গেলো। হেসে বললো, থ্যাংকু বাবা!
ছেলেটি তারপর বালিশের নিচ থেকে দোলানো মোচরানো কিছু বের করলো। লোকটি দেখলো ছেলের কাছে আগে থেকেই বেশ কিছু টাকা ছিলো। লোকটির মেজাজ আবার খারাপ হতে লাগলো। ছোট্ট ছেলেটি আস্তে আস্তে টাকাগুলো গোণা শেষ করে বাবার দিকে তাকালো।
বাবাঃ তোমার কাছে তো আগে থেকেই টাকা ছিলো, তারপরও কেনো টাকা চাইলে?
ছেলেঃ কারন তখন আমার কাছে পর্যাপ্ত টাকা ছিলো না, এখন আছে।
বাবা, আমার কাছে এখন ১০০০ টাকা আছে। আমি কি তোমার এক ঘন্টা সময় কিনতে পারি? প্লিজ আগামীকাল একটু তাড়াতাড়ি বাসায় এসো। আমি তোমার সাথে ডিনার করতে চাই।
বিস্ময়ে হতভম্ব লোকটি ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো। আর পাগলের মত ছেলের কাছে ক্ষমা চাইতে লাগলো।