ভাগ্যচক্রে ডিউটি টাইম বেশি হয়েছে তুতুন সাহেবে। তিনি এর আগে ৯ টা ৬ টা ডিউটি করতেন। কভিড মহামারীর জেরে তিনি এখন ৯ টা থেকে ১০ টা মানে ১৩ ঘন্টা ডিউটি করে তার জীবিকা নির্বাহের সংগ্রামে লিপ্ত। এতে তিনি যে টাকা রোজগাড় করেন তা দিয়ে দোকানের খরচ হয় না। বাসার বিল হেন তেন হাবিজাবি খরচ একটা সাবলেট আছে তা দিয়ে চলে। বাকী খরচ বউ চালায়। তার বউ একটা প্রাইভেট স্কুলে জব করে। হাজার দশেক পায়।
চাল ডাল তরি তরকারী গ্রামের বাড়ি থেকে তার বৃদ্ধ বাবা পাঠায়। ঢাকা শহরের যে খরচ তাতে সে হিমশিম। রাত্রে বাসায় ফেরার পথে পথের ধারে কমদামী তরিতরকারী কিনে বাসায় ফেরে। ও দিকে বাসায় দুই টা ছোট ছোট বাচ্চা রেখে তুতুনের স্ত্রী অজিফাত বেগম স্কুলে যায়। বাসায় পুনাই দুইটা দেখার জন্য তুতুনের আপন ভাগ্নি বাসায় এসেছে। ওদের দেখা শোনা করে। কিন্তু মায়ের আদর কী মাসি দিয়ে হয়। যাইহোক পুনাই দুইটা বেশ ফাফুরেই আছে।
ঐদিকে তুতুনের আজ প্রায় ৩ বছর হলো ভালো না কোন জব না কোন ব্যবসার লাইন করতে পারছে। তার মাথার মাঝখানের চুল উঠে গেছে। রাত্রি হলে নানা রকম চিন্তা মাথায় এসে ভর করে। এভাবেই সে রাত্রে ঘুমায় আবার সকাল ৯ টায় বের হয়ে যায় অন্তিম কমটাকার কাজ করার জন্য। করোনার আগে তুতুন একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছিল। সেখানেও আরও ১৫ লাখ বাকি। কিন্তু টাকা দিবে কুথেকে? ঐ দিকে ব্যাংক এর ক্রেডিট কার্ড নিয়েছিল কিন্তু টাকা না দেওয়ায় তার লোন কয়েকগুন বেড়ে গেছে।
এখন তাকে আর কেউ হেল্প করে না। না কোন বিজনেস দিয়ে না কোনো জব দিয়ে। সে এখন নিুরপায়। ওদিকে অজিফাত বেগম আর তাকে দামও দেয় না । সে এখন হোপলেস। এভাবেই চলছে জীবন...
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:০৪