বাসে হাত হারানো রাজিব বেঁচে নেই; রাজিবের মৃত্যু হয়েছে মস্তিস্কের আঘাতের কমপ্লিকেশনে, যা ডাক্তারদের অদক্ষতার কারণে ঠিক সময়ে ধরা পড়েনি। রাজিব যে বাসে ছিল, কোন না কোনভাবে তার হাত সেই বাসের বাহিরে ছিল; অন্য বাসের ঘর্ষনে তার হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল; একই সময়ে সে মাথায়ও আঘাত পেয়েছিল; কিন্তু ডাক্তারেরা তা ধরতে পারেনি সঠিক সময়ে। আহত হওয়ার পর, তাকে সহজেই হাসপাতালে ভর্তি করা সম্ভব হয়েছিল, যা সাধারণত ঢাকায় বিরল ঘটনা; এবং ডাক্তারেরা তার ব্যাপারে সিরিয়াস ছিল; এখন বুঝা যাচ্ছে যে, ঢাকার ডাক্তারেরা মানবিক হতে চাইলেও, তাদের অজান্তেই তাদের অদক্ষতা রোগীর মৃত্যুর কারণ হচ্ছে।
রাজিবের হাত বিচ্ছিন্ন হওয়াতে সাধারনভাবে সবার নজর ছিল হাতের দিকে; কিন্তু ডাক্তারদের দৃষ্টি কি সাধারণ মানুষের মত হাতের উপরই নিবদ্ধ থাকার কথা, নাকি তার পুরো শরীরে আঘাত লাগার সম্ভাবনা মনে রেখেই তাকে পরীক্ষা করার দরকার ছিলো?
রাজীবের মা-বাবা ছিলো না, চাচী নাকি খালা তাকে এত দুর এনেছিল; ঢাকা এসেছিল অনেক আশা নিয়ে, কিন্তু ঢাকার বিশৃংখল অবস্হা তার সমস্ত স্বপ্নকে কবর দিয়ে, অবশেষে তাকেও কবর দিয়ে দিয়েছে।
ঢাকায় যেভাবে একটি কাজের দিন শুরু হয়, যেভাবে মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে, বাস, মিনিবাসে, রিকসা, সিএনজি, ট্যাম্পু, মটর সাইকেল, সাইকেল, প্রাইভেট গাড়ীতে কাজে যায়, যেভাবে বিশৃংখলার মাঝে যাতায়ত করে মানুষ, ও ঘরে ফিরে; মনে হয়, কেয়ামতের দিন সারা বিশ্বে ঢাকার মতই ঘটনা ঘটবে।
ঢাকায় যেভাবে বাস চলাচল করে, যেভাবে যাত্রী তোলে, যেভাবে রাস্তার যেকোন লেইনে যাত্রী নামিয়ে দেয়, অন্য দেশে হলে, প্রতিদিনই ২ হাজারের বেশী মানুষ মারা যেতো; কিন্তু ঢাকার লোকজন এতই দক্ষ যে, রাজিবের মতো ২/১ জনের মৃত্যু হয় মাসে দুই মাসে; বলতে হবে, ঢাকার মানুষ বিশ্বের সবচেয়ে সতর্ক ও দক্ষ মানুষ!
বাসের এই ভয়ংকর সমস্যার একটা আংশিক সমাধান হলো, ঢাকা শহরের যাত্রীদেরকেই বাসের ও মিনিবাসের মালিক হতে হবে। যাত্রীরা একটা সময়বায়ের সদস্য হিসেবে একটা করে শেয়ারের মালিক হবে; সমবায়ের মাধ্যমে বাস পরিচালিত হবে। সমবায়ের বাসগুলো সদস্যদের কাজে নেয়া আসা করবে সকালে ৩ ঘন্টা, ও বিকেলে ৩ ঘন্টা (পিক আওয়ারস); এই সময়ে তারা সাধরণ যাত্রী বহন করবে না; বাসগুলো মালিক-যাত্রীদের নিরাপদ চলাচলের নিশ্চয়তা দিবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৯:৩৭