যারা রূপকথাটি পড়েননি, তাদের জন্য: (পাকিস্তানী আমল) শিয়াল ও কুমীর পার্টনারশীপ গঠন করে চাষাবাদ শুরু করলেন, ২ জনেই মেহনত করে আলু রোপন করলেন; ফসল তোলার সময়, শিয়াল নিলেন মাটির নীচে অংশ, কুমীর পেলো মাটির উপরের অংশ। বুঝতে পারছেন, কুমীর অসন্তষ্ট। ড: কামালের মধ্যস্হতায় (বাংলাদেশ আমলে) আবার নতুন উদ্যোগ, এবার আখের চাষ করলেন: ফসল তোলার সময়, কুমীরকে মাটির নীচের অংশ দেয়া হলো, শিয়াল নিলো মাটির উপরের অংশ। বুঝতে কষ্ট হচ্ছে না, শিয়াল কেন রাতেদিনে হুয়া হুয়া হুয়াক্কা করে!
বৃটিশ থেকে স্বাধীনতা পেলে, ভারতের মানুষ নিজের চেষ্টায়, নিজ পায়ে দাঁড়াতে পারবেন, নিজের জাতিকে গড়বেন, ভারতের মাানুষ সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করবেন, সর্বোপরি নিজেদের প্রশাসন নিজেরা চালাবেন, এটাই ছিলো কলোনিয়েল বৃটেন থেকে স্বাধীনতা প্রাপ্তির সকল প্রচেষ্টার মুল চালিকা শক্তি। ভারতীয়দের প্রচেষ্টা ও অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার প্রভাবে ১৯৪৭ সালের আগষ্টে ভারতে ২টি নতুন স্বাধীন দেশ হলো; একটা পাকিস্তান, আমরা সেটার নাগরিক হয়েছিলাম।
দেশ স্বাধীন হলে, দেশে বিপ্লব ঘটলে, নতুন সরকারের নিয়ম অনুসারে সকল সুযোগ ও সম্পদের মালিক হয় জনতা; পাকিস্তানের সময়, অসম নিয়মের ফলে, সুযোগ ও সম্পদ চলে যায় পশ্চিম অংশের ছোট একটি শ্রেণীর হাতে, ব্যবসায়ীদের হাতে; তারা ২২ পরিবার নামে খ্যাত হয়েছিলো; ২২ পরিবারের কারণে পশ্চিম পাকিস্তানের লোকজন হাড্ডি হুড্ডি, চামড়া, পা কিছুটা পাচ্ছিলেন; কিন্তু বাংলার মানুষকে কুমীরদের মত সমাদর করে আলুর উপরি ভাগ, কিংবা আখের নীচের ভাগ দেয়া হচ্ছিল!
বাংলার মানুষ অসন্তষ্ট হয়ে উঠলেন; আমরা আলাদা হয়ে গেলাম; আলাদা হওয়া ছিলো খুবই কঠিন; শুরুতে বুঝা যায়নি যে, এত মানুষকে প্রাণ দিতে হবে; প্রাণ কারা দেয়, আপনারা জানেন, চালাকেরা প্রাণ দেয় না! যাক, পাকিস্তানী শিয়ালদের থেকে মুক্ত হয়ে জাতি নতুন আশায় চাষাবাদ শুরু করলেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এবারও জাতি শিয়ালের সাথে চাষ করেছেন; শিয়ালের গান সুন্দর, বন্ধুত্বও ভালো; কিন্তু ভাগের সময় শিয়ালই বারবার বড় ভাগটার মালিক হয়ে যায়: আলুর নীচের অংশ, কিংবা ইক্ষুর উপরিভাগ উহারা পেয়ে যান!
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৭