ব্লগার জনমদাসী কবি জীবনান্দ দাসের একটি করিতার কয়েক লাইন তুলে দিয়ে, সেই লাইনগুলোর উপর একটা কুইজ দিয়েছিলেন; সেই লাইনগুলোর মাঝে হয়তো উনার জীবনের অনেক সুখ, কিংবা ব্যথা লুকায়িত ছিলো। সেই কুইজের ১ম পুরস্কার ছিলো, হজে যাবার সব খরচ উনি দেবেন, সাথে হাত-খরচ হিসেবে ২ লাখ টাকা দেবেন। আমি ব্লগের কুইজে কখনো অংশ নিই না; উনার পোষ্টে কমেন্ট করলাম যে, উনি মিথ্যা আশ্বাস দিচ্ছেন, যিনি জিতবেন, তার মন খারাপ হবে, উনি কোন পুরস্কার দেবেন না।
ব্লগে, আমার কিছু সহব্লগার ছিলেন, যাঁরা আমাকে অনেক সময় সাপোর্ট করতেন; তাঁরা কয়েকজনও কমেন্ট করলেন যে, জনমদাসী পুরস্কার দেবেন না। জনমদাসী অনেক ক্ষেপে গেলেন আমার ও সহব্লগারদের উপর। উনি ক্ষেপুক এটা আমি চাইনি: যাক, সেই সাময়িক ব্যাপারগুলো উনি ভুলেন গেছেন সাথে সাথে! উনার প্রোপিকটা এত সুন্দর ছিল যে, আমি উনার প্রোপিক দেখার জন্য উনার পোষ্ট পড়তাম; উনার পোষ্টে আজগুবি আজগুবি বিষয় নিয়ে আবেগী লেখা থাকতো; আর কমেন্টকারীদের উনি প্রেমিকের মতো ভালোবাসতেন; আমি ঘুরেফিরে একই পোষ্টে ২/৩টি কমেন্ট করতাম।
জনমদাসী মনে হয়, সব ব্লগারকে ভালোবাসতেন, আর কবি জীবনান্দ দাসকে ভালোবাসতেন। তিনি যখন ব্লগে উপস্হিত থাকতেন, ব্লগারেরা অনুভব করতেন যে, উনি পাশেই আছেন। তিনি ব্লগারদের ভালোবাসতেন, এতই ভালোবাসতেন যে, উনার আবোল তাবোল কথাও ভালো লাগতো, ব্লগকে সফটওয়ার মনে হতো হ্তো না, আমার কাছে ব্লগকে এক সুন্দরী রমনীর মতো মনে হতো, ব্লগ জীবিত হয়ে উঠতো!
উনার পতন ঘটালেন কয়েকজন ব্লগার; সেই ব্লগারগুলো অবশ্যই লিলিপুটিয়ান ছিলেন, উনাদের নিজস্ব কোন গুণ ছিলো না; উনারা জনমদাসীর জীবন্ত আবেগকে ধারণ করার মতো শক্তিশালী ছিলেন না; সামান্য নুড়ি পাথর যেমন হাতির পথচলা বন্ধ করে দেয়, বে-গুণী ২/৪ জন অখ্যাত ব্লগার উনাকে থামিয়ে দেন।
উনার প্রোপিকটা আমার কাছে নেই; কারো কাছে থাকলে দেবেন। উনার চলে যাওয়া প্রায় সকল ব্লগারদের জন্য বেদনাদায়ক ছিলো; আমার মনে হয়েছিল, উনি ব্লগে আসতেন একদন্ড প্রশান্তির খোঁজে, ঠিক জীবনান্দ দাসের মতো।
**** কয়েকজন ব্লগারের উপদেশ অনুসারে, পোষ্টির শিরোনামে এডিট করা হয়েছে। উপরের ছবিটা ব্লগার জনমদাসীর প্রোপিক নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:২৫