কোর্টে রায় শোনার পর, বেগম জিয়া কোন স্টেইটমেন্ট দিয়ে ছিলেন কিনা, আমি জানি না; দিয়ে থাকলে, উনার স্টেইটমেন্টের শুরুতেই উনার উচিত ছিলো, জাতি ও এতিমদের কাছে মাফ চাওয়া: উনি পারিবারিক সমস্যা ও রাজনৈতিক চাপে থাকার কথা উল্লেখ করে, বলতে পারতেন যে, তিনি জিয়া এতিম খানার টাকাগুলো সঠিকভাবে ম্যানেজ করতে পারেননি, যার ফলে, আজকে জিয়া এতিমখানা নেই; কিন্তু তিনি তা করে দেবেন, এবং তিনি এতিমদের ভালোর জন্য কাজ করবেন।
এতে তিনি জাতির সিমপ্যাথী পেতেন। তার ফলে যে, উনি আসছে ভোটে যে জয়ী হতেন, তা নয়, উনি যে একজন দায়িত্বশীল মানুষ, সেটা প্রমাণ হতো।
জাতীয় পর্যায়ে, বা সামজিক পর্যায়ে কোন অপরাধ প্রমাণিত হলে, তার জন্য মাফ চাওয়া হলো মানুষের সামনে জবাবদিহিতার প্রমাণ; তিনি তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। অবশ্য, আমাদের দেশের মানুষ, এই ধরণের সংস্কৃতির সাথে তেমন পরিচিত নন, তারা অপরাধ করেও ঘাঁড় উচিয়ে বিচারককে আংগুল দেখায়।
বেগম জিয়া মোটামুটি একজন মিলিটারী অফিসারের স্ত্রী হিসেবে, সমাজে উঁচু শ্রেণীতে ছিলেন; স্বামীর মৃত্যুর পর, তিনি মানুষের অনেক সিমপ্যাথী পেয়েছিলেন; দেশের মানুষের ততকালীন ফাইন্যানসিয়েল অবস্হার তুলনায় উনার পারিবারিক অবস্হা বেশ ভালোই ছিলো; এর উপর তিনি জেনারেল এরশাদের উদ্যোগে জাতি থেকে বিশাল সম্পদ পান: উনাকে ২ টাকায় ২টি বাড়ী, ১০ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট, গাড়ী, চাকর, বাচ্চাদের পড়ালেখার খরচের টাকা দেয়া হয়; সেই টাকায় তিনি সুখে শান্তিতে চলতে পারতেন; উনার সুন্দর একটা পরিবার ছিলো।
তাঁকে লোভ দেখায়ে রাজনীতিতে নিয়ে আসে মিলিটারীর একাংশ ও কিছু দুষ্ট রাজনীতিবিদ; তিনি জানতেন না, তিনি কিসের মাঝে পা দিচ্ছেন ; তবে, তিনি ভয়ংকর লোভী ছিলেন। ৩৪ বছরের রাজনীতি করে, তিনি নিজের এক ছেলেকে অকালে হারায়েছেন, আরেক ছেলে জাতির বিরুদ্ধে ভয়ংকর অপরাধ করে বিদেশে পালিয়ে আছে, তিনি জেলে। উনার ৩৪ বছরের রাজনীতিতে সাধারণ মানুষ বিশালভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; হাতেগোণা কয়েকজন লোক দুর্নীতির মাধ্যমে সাধরণ মানুষের সম্পদ ও সুযোগ দখল করেছে; ৩৪ বছর একটা জাতির জন্য অনেক লম্বা সময়, একটা জেনারেশন।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৩