ব্লগে হাজার হাজার পোস্ট এসেছে, যেসব পোস্টে বাংলায় নতুন একজন নেতার অভাব অনুভব করা হয়েছে, যিনি এসে শেখ হাসিনা ও বেগম জিয়াকে অবসরে পাঠাবেন, জেনারেল এরশাদকে ঝাড়ু দিয়ে পেটাবেন, ব্যুরোক্রেটদের মানুষ বানাবেন, ছাত্রদের স্কুলে পাঠাবেন, সাধারণ মানুষদের জন্য সুখ শান্তি আনবেন; এগুলো ফ্যান্টাসী; এটা ঘটতেও পারে, নাও ঘটতে পারে; এগুলোর কাছাকাছি কিছুও ঘটতে পারে।
গ্রীক মীথে, ইকারুসের আকাশে উড়ার গল্প কোন গ্রীকদেবতা লিখেননি, এটা পুরানো গ্রীকদের ফ্যান্টাসী, কোন একজন প্রাচীন গ্রীক লেখক সেটাকে লিখেছেন, তারপর আজ অবধি লাখ লাখ মানুষ সেটার উপর চিত্র অংকন করেছেন। ততকালীন গ্রীকেরা কি ইকারুসকে উড়তে দেখেছিলেন, উনার ছেলে কি আকাশে সুর্যের কাছাকাছি পৌঁচেছিলেন? গ্রীকেরা কি জানতেন যে সুর্যের দুরত্ব ৯ কোটী ৩০ লাখ মাইল? গ্রীকেরা বলেছেন যে, ইকারুসের ছেলে ভু-পৃস্ঠ থেকে উপরের দিকে গেলে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে, এতে শরীরের সাথে মোম দিয়ে লাগানো পাখার মোম গলতে থাকে; আসলে, ভু-পৃস্ঠ উপরের দিকে গেলে, একটা নিদ্দিস্ট দুরত্ব অবধি তাপমাত্রা কমতে থাকে!
আজকের মানুষর সবচেয়ে বড় ফ্যানটাসী হলো, এই গ্রহ থেকে বসবাসযোগ্য অন্য গ্রহে চলে যাওয়া; এবং মানুষ 'বসবাসযোগ্য পরিবেশের' অধিকারী ৪০০ গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন ইতিমধ্যে। সবচয়ে নিকটে যে গ্রহটি পেয়েছেন, সেটা Kepler-22b, এই গ্রহটি 'সিগনাস" তারকাপুন্জের একটি তারকার চারিদিকে ঘুরছে; আমাদের থেকে ৬৪০ আলোকবর্ষ দুরে আছে। যদি এটম বোমা মেরে পুটিন কিংবা চীনারা মানব সভ্যতাকে সংকুচিত না করে, আগামী ২/১ শত বছরে মানুষ এ ধরণের গ্রহ সম্পর্কে অনেক পরিস্কার ধারণা পাবেন; স্কুলের বাচ্চারা এগুলো নাম দুরত্ব, আবহাওয়া নিয়ে নিজেদের মাঝে নিয়মিত আলাপ করবে।
ইকারুস একটা ফ্যান্টাসী ছিল, লিওনার্ডো দ্যা ভিন্চির "ফ্লাইং মেশিন"ও ফ্যান্টাসী ছিল; কোনটি কাজ করছে? লিওনার্ডো দ্যা ভিন্চির "ফ্লাইং মেশিন" কাজ করছে; প্রাচীন গ্রীকেরা তাঁদের সাধ্যানুসারে চেস্টা করেছেন; কিন্তু প্রাচীন গ্রীকদের তুলনায় সময় ও জ্ঞান সঠিক ছিল রেনেসাঁর যুগে। জন, লুক ও মেথিউদের ভবিষ্যত বাণীর চেয়ে বাংগালীদের ফ্যান্টাসী কার্যকরী হওয়ার সম্ভাবনা বেশী; মানুষ ঠিকই একদিন অন্য গ্রহে রওয়ানা হবেন; পৌঁছুক, বা না পৌঁছুক!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১৭ ভোর ৫:৩৬