শাহবাগের গণ-জমায়েত বেগম জিয়ার পক্ষে যায়নি; যাবার কথা ছিলোও না; কারণ, গণ-জমায়েতের প্রথমদিকে বেশ কিছু সংখ্যক ব্লগার এতে যুক্ত ছিলেন; ব্লগারেরা কোনদিন বেগম জিয়া, শেখ হাসিনা, মোল্লা শফি, বা জামাতের পক্ষে যাবেন না; কারণ, এরা আধুনিক বাংগালী, এরা আলাদা জেনারেশন। যদিও জামাত ও আওয়ামী লীগের কিছু ডেডিকেইটেড ব্লগার ছিলেন, বা বর্তমানেও ২/৪টা আছে, তাদের উপর ব্লগের প্রভাব পার্টির থেকে বড় হয়ে যায় এক সময়; ফলে, এরা এক সময় পার্টির উপর হতাশ হয়ে যান, এবং পার্টির পক্ষে তেমন বেকুবী প্রচারণা চালান না।
গণ-জমায়েতের উপর বেগম জিয়া বিক্ষুব্ধ হয়ে, সব ব্লগারকে নাস্তিক ডেকেছিলেন; উনি ব্লগারদের নাস্তিক ডাকায়, বিএনপি'র ডোডোর পালও উনার সাথে গলা মিলায়ে ছিল; এতে ব্লগিং'এ বেশ ভাটা পড়েছিল। ঔ সময় মোল্লা শফি সাহেবও বেগম জিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে ব্লগারদের নাস্তিক ডেকে বসে; অবশ্য উনি ব্লগিং ইত্যাদি বুঝার মতো অবস্হানে নেই; কিন্তু উনার ভক্তের অভাব নেই, যারা হুজুরের কথাকে শিরোধায্য করে নেন সব সময়। আরেকজন ছিলেন বেগম জিয়ার দুস্টবুদ্ধির শিরোমনি, সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান; ইনি বুয়েটের ইন্জিনিয়ার, ব্লগিং কি ইনি ভালোভাবে বুঝেন; কিন্তু বেগম জিয়াকে সাপোর্ট করতে গিয়ে লিলিপুটিয়ান সেজেছিলেন।
যেহেতু ধর্ম বাংলাদেশের মানুষের জীবনে বিরাট প্রভাব রাখছে, বাংলাদেশে "নাস্তিক" শব্দটা ভয়ংকর অর্থে ব্যবহৃত হয়; মানুষকে নাস্তিক ডাকা উচিত কিনা এদেশের বিরাট অংশ মানুষ সেটা বুঝার মতো অবস্হানে নেই। অনেক হয়তো বলবেন যে, সামান্য নাস্তিককে নাস্তিক ডাকতে কি কেমব্রীজের ডিগ্রি থাকতে হবে? আসলে, থাকলে ভালোই হতো! যারা মানুষকে নাস্তিক ডাকেন, তারা অন্য ধর্মের প্রার্থনার ঘরে ঢিল ছোঁড়েন, আগুন লাগায়ে দেন; অন্য ধর্মের লোকেরা কিন্তু নাস্তিক নন।
যাক, বেগম জিয়া, মোল্লা সাহেব ও মাহমুদুর রহমানের বক্তব্য অশিক্ষিত, কম-শিক্ষিত ও কুশিক্ষিতদের উপর কাজ করেছে; আবার সাধারণ মানুষ টেকনোলোজীতে এখনো অনেক পেছনে; সব মিলিয়ে ব্লগিং এক ধরণের অপরাধের মত বিষয় এসব সাধারণ মানুষের কাছে। ফলে, অনেকেই ভয়ে ব্লগিং থেকে দুরে থাকেন। মনে হয়, বেশীর ভাগ ব্লগার অন্যদের সামনে নিজের ব্লগিং'কে প্রকাশ করেন না; এতে ব্লগিং পেছনের সারিতে পড়ে গেছে।
মাহমুদুর রহমান কিছুটা প্রায়চিত্ত করছেন, ভালো হলো; কিন্তু বেগম জিয়া ও মোল্লা সাহেবকে, তাদের ভুলের জন্য জবাবদিহি করতে হয়নি; এদের ২ জনের বিপক্ষে ব্যবস্হা নেয়ার দরকার ছিল সরকারের; একটা ব্যবস্হা হতে পারে, এটর্নি জেনারেল বা হাইকোর্ট উনাদের কাছে, উনাদের এই ধরণের বুদ্ধিমত্তাহীন বক্তব্য দেয়ার কারণ জানতে চাইতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৪২