আজকে বাংলাদেশের অনেক শিশু, কিশোর, তরুণ-তরুণী, ছাত্রছাত্রী, প্রফেশানেল ও বেকাররা তাদের পিতাদের অভিনন্দন জানায়েছেন, পিতার স্নেহকে অনুভাব করেছেন, পিতাকে নিজের ভালোবাসা জানাতে পেরেছেন। কিন্তু ৩০ লাখের মতো টোকাই তাদের হতভাগ্য পিতাকে হয়তো কিছু বলার সুযোগ পায়নি; তাদের জীবনে হয়তো পিতা ও পিতৃত্ব অনুপস্হিত; কিন্তু তাদের একাংশের পিতা হয়তো আছেন কোথয়ও; টোকাই শিশুদের পক্ষ থেকে আমি সেসব পিতাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি, যা কোনদিনও এসব পিতার কাছে পৌঁচবে না; কিছু ব্লগার হয়তো দেখবেন; ব্লগারেরা আমাদের জাতির এই ক্ষতটুকু হয়তো অনুভব করবেন।
আধুনিক রাস্ট্রে পিতামাতাহীন শিশুর মালিক কে? তারা নাগরিক কিনা? নাগরিক হলে, তাদের নাগরিক অধিকার আছে কিনা? থাকলে, সেই নাগরিক অধিকারের আওতায় তাদের ন্যুনতম মৌলিক অধিকার রক্ষা কিভাবে হচ্ছে? সরকারের কেহ এই দায়িত্ব নিয়ে কোন সংগঠন চালাচ্ছেন কিনা? সংগঠন না থাকলে, প্রেসিডেন্ট, কিংবা প্রাইম মিনিস্টারের অফিস এই দায়িত্বটুকু নিতে বাধ্য কিনা?
এক দেশের ৩০ লাখ শিশু যদি রাস্তায় ঘুমায়, সেই দেশের হাইকোর্ট দেশের সরকারের কাছে এইসব শিশুদের রাস্তায় ঘুমানো ও নাগরিক অধিকার থেকে বন্চিত হওয়ার কারণ জানতে চাইতে পারেন কিনা? আমাদের প্রধান বিচারপতি এ ব্যাপারে সরকারকে নোটীশ দিতে পারেন কিনা?
সেক্রেটারী, ডাক্তার, ব্যবসায়ী পরিবারের ৫/৬ বছর বছর বয়সী শিশুর জন্য সরকার স্কুল, হাসপাতাল ইত্যাদিতে মাথাপিছু কি পরিমাণ ব্যয় করছেন? একজন টোকাইর ঠিক সেই পরিমাণ পাওনা আছে কিনা? থাকলে, টোকাই কি এসে তার অধিকার চেয়ে নিতে পারবে, নাকি সরকার তাকে খুজে নিয়ে, সেই অধিকার পুরণ করবে?
অনেক প্রশ্ন করলাম। দেশে শিশু টোকাই থাকা মানে সরকার অপরাধ করছে; ওরা জাতির সন্তান, ওদের অধিকার আছে, ওদের লালন পালনের দায়িত্ব জাতির নেয়ার কথা ছিল ১৯৭২ সাল থেকে। ৪৬ বছরের অপরাধ জমা হয়েছে; এখন সময় হয়েছে, আজকেই রাস্ট্রের উচিত এসব শিশুদের দায়িত্ব গ্রহন করা; এই শিশুদের মানুষ করার মতো সম্পদ আমাদের জাতির কাছে আছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৩৮