হেফাজত রাজনৈতিক দল নয়, তারা আপাতত নিজদের ধর্মীয় দল হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে; মৃত্যুর পর উনারা সবাই হয়তো বেহেশতে যাবেন সময় মতো, সেটা ভালো; কিন্তু দেশ চালনা তাদের হাতে গেলে দেশ আফগানিস্তান কিংবা সোমালিয়ার মতো চলবে; যাক, দেশ উনাদের চালাতে হবে না হবে না কোনদিন, সেটাই সুখবর।
কিন্তু তাদের সাম্প্রতিক ২টি বিজয়ই রাজনৈতিক ওজন বহন করছে: তাদের সর্বোচ্চ ডিগ্রিকে "মাস্টার" ডিগ্রির সমতুল্য করার দাবীকে প্রতিস্ঠিত করা একটি বড় ধরণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিজয়; এবং থেমিসকে কয়েক গজ সরানোও শেখ হাসিনার "আয়রণ ফিস্ট" নীতির বিপক্ষে মানসিক বিজয়! পরিবেশ বাদীরা শেখ হাসিনাকে সুন্দর বনের ব্যাপারে পিছু হটাতে পারেনি; বিএনপি ৯১ দিনের তত্বাবধায়ক আন্দোলন করে ক্ষমতায় যাওয়ার পথকে মসৃণ করতে গিয়ে, রাজপথই হারিয়ে ফেলেছে; আলম ব্রাদার্স'এর বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নিজের বাড়ীঘর রক্ষা করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়েছে; কিন্তু তারা বিচার পায়নি; হেফাজত ভালো কিছু পেয়েছে, এতে জাতির জন্য ভালো ও ক্ষতি দুটোই হবে।
কি ক্ষতি পারে? হেফাজতের মাদ্রাসার গ্রাজুয়েটরা সেক্রেটারিয়েটে মাস্টার্স'এর সম-মানের চাকুরী পাবার পর, জাতির দরকারী ফাইলগুলো টেবিলে আরো বেশী আটকা পড়বে, ওরা দক্ষতার সাথে কাজ করার কথা নয়; আবার, অনেক মৌলভী ঘুষ খাওয়া শিখবে।
ভালো দিক হলো, তারা প্রমাণ করেছে যে, সমবেতভাবে কাজ করলে, ঐক্য দেখাতে পারলে, মাথা গণনা হয়, শেখ হাসিনা মানুষের কথা শুনতে বাধ্য। হেফাজতের বিজয় জাতির জন্য বড় কোন সুফল বয়ে আনেনি; কিন্তু ইহা দেশের নাগরিকদের একাংশের বিজয়, হেফাজতীরা এই দেশেরই নাগরিক! তাদের বিজয় থেকে সাধারণ মানুষ ধারণা পাবার কথা।
হেফাজত জয়ী হয়ে প্রমাণ করেছে যে, সরকারকে মানুষের কথা মানতে হবে এক সময়; যা বিএনপি ও বামধারার লোকেরা পারেনি। হেফাজত যা চেয়েছে, তাতে তাদের প্রত্যেক সদস্যই অর্থনৈতিক বা মানসিকভাবে লাভবান হয়েছে। বিএনপি ভোটে জয়ী হওয়ার পথ নিশ্চিত করতে চায়; বিএনপি নির্বাচিত হলে, দেশের মানুষ কোনভাবেই উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা নেই; এমন কি বিএনপি'র ভোটারদেরও ক্ষতি হবে; ফলে, জাতি, কিংবা বিএনপি'র ভোটারেরাও বিএনপি'র জন্য মাঠে নামার সম্ভাবনা কম। বামদের বেলায়, সৈন্য থেকে জেনারেল বেশী, সেটা শেখ হাসিনা জানে; কারণ, শেখ হাসিনা তাদের নেতাদের কেনাকাটা করেন মাঝে মাঝে!
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৫