সৌদীতে সেইদিন ৫০ "মুসলিম জাতিকে" সমবেত করা হয়েছিল; উপরে বলা হয়েছিল, উদ্দেশ্য হচ্ছে, " ঐক্যবদ্ধভাবে জংগী দমন"; জংগী হামলা তো শুধু মুসলিম দেশে হচ্ছে না; গতকাল হলো ইংল্যান্ডের ম্যনচেস্টারে, ২২ জন মৃত, শতশত আহত, এখনো অনেকের খবর পাওয়া যাচ্ছে না; তা'হলে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, রাশিয়া, আমরিকা, স্পেন ইত্যাদিকে আসতে বলা হয়নি কেন?
সোদীতে মুসলিম রাস্ট্রের সরকারদের ডাকার কারণ বিবিধ ছিল; তার মাঝে একটি ছিল, জংগি সমস্যা; তবে যেভাবে ৫০ জাতিকে ডাকা হয়েছে, পরোক্ষভাবে বলা হয়েছে যে, "বর্তমান জংগী সমস্যাতে এই ৫০ জাতি যুক্ত"।
ইয়েমেনে সৌদী সমর্থিত সরকারের বিপক্ষে যারা যুদ্ধ করছে, তাদেরকে সৌদী ও ইয়েমেনের সরকার "জংগী" উপাধী দিয়ে হত্যা করছে; বাশার সুন্নি মিলিশিয়া ও সাধারণ সুন্নীদের জংগী বলছে। আসলে, ইয়েমেন ও সিরিয়ায় জংগী হামলা হচ্ছে না, এগলো "মুসলিম সিভিলওয়ার"; এই দুইটি চলমান যুদ্ধ, ২য় বিশ্বযুদ্ধের স্টালিনগ্রাডের যুদ্ধের থেকে অনেক ভয়ানক।
৫০ জাতি মিলিত হওয়ার পর, সেখানে মুলত: আলাপ হয়েছে কিভাবে "হোলি আর্টিজান, ম্যানচেস্টার এরেনা, প্যারিস আক্রমণ ধরণের জংগী আক্রমণ যাতে বন্ধ করা যায়; কিন্তু সিরিয়া, ইয়েমেন, আফগানিস্তান, ইরাক যুদ্ধের অবসান করার জন্য কোন আলোচনা হয়নি; ৫০ জাতির কেহ ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেনি কিভাবে সিরিয়া, আফগানিস্তান, ইরাকে যুদ্ধ বন্ধ করা যায়; কেহ সৌদী বাদশাহকে প্রশ্ন করেনি কিভাবে ইয়েমেনের হত্যাকান্ড বন্ধ করা যায়।
৫০ জাতিকে ডাকা হয়েছে মুসলিম জাতি হিসেবে, তাদের মাঝে ধর্মীয় মিল থাকার কারণে। ভালো, ধর্মীয় মিল যদি থাকে, তা'হলে সৌদী কেন হুতি শিয়াদের উপর বোমা ফেলছে, এবং আরো ১১০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনেছে; ধর্মীয় মিল থাকলে বাশারের মুলযুদ্ধ কাদের বিরুদ্ধে?
ধর্ম মানুষকে আর ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারবে না; ইউক্রেন ও রাশিয়ানদের ধর্ম এক, ইয়েমেনী ও সৌদীদের ধর্ম এক; এরা যুদ্ধ করছে অর্থনৈতিক কারনে, ও এলাকায় আধিপত্য রক্ষার জন্য; ধর্মীয় মিলের জন্য কিছু জাতির মাঝে কিছু ব্যাপারে মিল আছে, তবে ঐক্য এখন নির্ভের করছে জাতিগুলোর অর্থনীতি ও রাজনীতির উপর। নরওয়ে, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এর মতো দেশগুলো উন্নত রাজনীতি ও অর্থনীতির মাধ্যমে অন্যদের সাথে ঐক্য গড়ে তুলেছে, ধর্ম মুল শক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে না আর; যারা ধর্মকে ঐক্যের জন্য ব্যবহার করতে চাইবে, সেখানে সমস্যা বাড়বে।
ধর্ম যদি ঐক্যবদ্ধ করতে পারতো, সোদী ১১০ বিলিয়নের অস্ত্র না কিনে ডলারগুলো দরিদ্র ইয়েমেনকে দিয়ে দিতো; ইরান এটম বোমা না বানায়ে ডলারগুলো দিয়ে প্যালেস্টাইনে কলকারখানা করতো।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৭ রাত ২:১২