আমরা উপরে উপরে যা দেখছি, এর বাইরেও অনেক চ্যানেল হয়ে কাজ করছে আমেরিকান-চীনা রাজনীতি; মনে হচ্ছে, শী জিনপিং গত ২ দিনে আমেরিকান-উ: কোরিয়ান উত্তেজনা কমায়ে এনেছে; এখন পরিস্কার যে, চীনারা উত্তর কোরিয়াকে লালন পালন করছে। যদিও আমেরিকা ও উ: কোরিয়া গত ২ দিনে কিছুটা শান্ত হয়েছে, সমস্যা কিন্তু চলে যায়নি; কারণ, আমেরিকা কোন অবস্হায় উ: কোরিয়াকে দুর পাল্লার মিসাইল উৎপাদন করতে দিতে পারে না; সাথে সাথে জাপান ও দ: কোরিয়ার মতো অর্থনীতি নিয়ে খেলতে দি্তে পারে না; আবার চীনও এই মহুর্তে তার আমেরিকান ব্যবসা হারাতে পারে না; তবে, প্রত্যেকের নিজস্ব স্ট্রেটেজী আছে, এবং ছুরি ধার দিচ্ছে।
তুরস্কের রেফেরেন্ডাম ( হ্যাঁ, না ভোট) এরদেগানের পক্ষে গেছে, এরদেগান ৫১% থেকে সামান্য বেশী ভোটে জয়ী হয়েছে; তবে, বিশাল ৪৯% বিরোধীতা তাকে অনুসরণ করবে। একদিক থেকে আসলে সে পরাজিত হয়েছে; এরদেগান কমপক্ষে ৮০% ভোট পেয়ে জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল; তা ঘটেনি, এবং বড় শহরগুলো তার বিপক্ষে ভোট দিয়েছে গড়ে ৬০% এর বেশী, ইহা ভয়ংকর সমস্যা। এত কম সাপোর্ট নিয়ে জয়ী হয়ে সে কিভাবে আগামী ১২ বছর টিকে থাকবে? লজিক্যালী, সে আগামী ২ বছরে নতুন করে ১০% মানুষের সমর্থন পাওয়ার থেকে, ১০% মানুষের সমর্থন হারাবে সহজেই।
আপনারা জানেন, এই রেফেরেন্ডাম অনুযায়ী, তুরস্কে প্রাইম মিনিস্টার সিস্টেমের বদলে প্রেসিডেন্ট শাসিত দেশ হলো, আগামী ১২ বছরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন না করলেও চলবে, এবং কুর্দি এলাকাগুলোতে পার্লামেন্টের সীটের সংখ্যা বাড়িয়েছে, যাতে কুর্দীরা পার্লামেন্টে জয়ী হতে না পারে ! ১৯৭৫ সালে, বাংলদেশে এই ঘটনা ঘটায়েছিলেন শেখ সাহেব, এতে উনার জনপ্রিয়তা কমে যায়, এবং এই পদ্ধতি শেষে উনার হত্যাকারীদের সাহয্য করেছে পরোক্ষভাবে।
তুরস্কের বিশাল রাজনৈতিক ইতিহাস আছে, দেশটি অটোম্যান রাজতন্ত্রের পতনের পর নিজভুমে গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে টিকে যায়; যদিও দেশটির সব ভুমিই এশিয়ায় দেশটি ইউরোপিয়ান হিসেবে গণ্য করা হয়, এবং ন্যাটোর সদস্য; তাদের অর্থনীতি ছিল ইউরোপিয়ান; এরদেগান মৌলবাদী ইসলামিক ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে এশিয়া-মুখী করেছে; একই সাথে দেশটিকে রাশিয়া নিজের দিকে টানছে; রাশিয়ার মতো দেশের সাথে থাকা ভালোই হতো; কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, পুটিনও এরদেগানের মত পদ বদলায়ে( প্রিমিয়ার থেকে প্রেসিডেন্ট, প্রেসিডেন্ট থেকে প্রিমিয়ার হয়ে) ১৮ বছর আছে, এবং ভবিষ্যতে পদ ছাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই, সেই লোকের সাথে কতদুর যাবে? বিশ্ব পুটিনের মতো দুর্নীতিবাজকে রাশিয়ার মতো বিশাল শক্তির ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩০