বৃটিশ কলোনী থেকে বের হয়ে, বাংগালী ও পাকিস্তানী সাধারণ মানুষের স্বাধীন ও সুখী জাতি হিসেবে বাস করার মহান স্বপ্নকে বুটের নীচে দলিত করে দিয়েছিল প্রথমে পাকিস্তানী জেনারেলেরা ও পরে বাংলাদেশী জেনারেলেরা; ফলে, বাংগালীরা বিশ্বের কোন দেশে মিলিটারী ক্যু'কে কোনদিনও সমর্থন করার কথা নয়।
অটোম্যান রাজতন্ত্রের এক জেনারেল কর্ত্তৃক প্রতিস্ঠিত গণতান্ত্রিক তুরস্কে গত সপ্তাহের মিলিটারী ক্যু'টি সেই জাতির জন্য প্রথম ক্যু ছিল না, এবং এটা শেষ ক্যু'ও নয়; তবে, বিশ্ববাসী ও তুরস্কের সাধারণ মানুষের জন্য সুসংবাদ ছিল যে, ক্যু'টি এবার সফল হয়নি। কিন্তু ক্যু'টি আগামী ক্যু'এর বীজ বপন করে গেছে, মানুষের হাতে অনেক সাধরণ সৈনিক নিহত হয়েছে; ঠিক মতো পানি ও তাপ পেলে সঠিক সময়ে চারা গজাবে।
এই ক্যু'টি ঘটেছে এমন এক সময়ে, যখন বাগগালীরাও সামাজিক মাধ্যম ব্লগে উপস্হিত আছেন, এবং নিজেদের মতামত, পর্যবেক্ষণ ও এনালাইসিস প্রকাশ করছেন; এই ক্যু'কে ঘিরে অনেকগুলো পোস্ট এসেছে ব্লগে, এবং এতে প্রচুর ব্লগার মন্তব্য করেছেন; প্রায় সবাই একবাক্যে ক্যু'এর বিরোধীতা করেছেন, তুরস্কের সাহসী জনতার ও সরকারের প্রশংসা করেছেন; গণতান্ত্রিক সরকার মিলিটারীর অন্যায় পদক্ষেপকে থামিয়ে দিয়েছেন, ভালো; প্রশংসা পাবার কথা।
গণতণ্ত্র রক্ষা পেয়েছে, ভালো; তুরস্কের নির্বাচিত সরকার টিকে গেছে, সেটাও ভালো; এতে এরোদোগানও হয়তো প্রশংসা পাবার যোগ্য; কিন্তু আমরা বাংগালীরা তুর্কি মিলিটারীর বিপক্ষে বলার পরও, এরোদোগানকে প্রশংসা করতে পারি না; কারণ, উনি আমাদের জাতির ভয়ংকর একটা সেনসেটিভ ব্যাপার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধীতা করেছেন। উনার সরকার টিকেছে, সেটা ভালো, উনি টিকে গেছেন, সেটা ভালো; কিন্তু আমরা উনার প্রশংসা করতে পারি না।
এরোদোগান যখন যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধীতা করেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের এদেশীয় সমর্থকেরা খুশী, আনন্দে উদ্ভাসিত হয়েছিলেন; কিন্তু তাদের সেই খুশীকে জনতার সামনে প্রকাশ করার সুযোগ পাননি; এবার এই সুযোগে এরোদোগানের পক্ষে চীৎকার দিয়ে কি আগের চেপে রাখা খুশীটাকে প্রকাশ করছেন?
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১৬ ভোর ৫:০৬