১ম বিশ্বযুদ্ধে অটোম্যান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে; এর ফলে, সাম্রাজ্য তো চলে গেছে, সাথে সাথে তুর্কি জাতির নিজস্ব বাসভুমিও কলোনী হয়ে যাচ্ছিল, কামাল পাশা সঠিক সিদ্ধান্ত নিলেন, বাড়তি সাম্রাজ্য গেছে যাক, থাকার মাটি রক্ষা করে জাতির জন্য একটা রিপাবলিক গঠন করতে হবে; কারণ, সাম্রাজ্য নামের গন্ধ পেলে, উহা অটোম্যনাদের, আর অটোম্যানদের জায়গার মালিক মিত্রশক্তি।
তুর্কিদের মাতৃভুমি প্রতিস্ঠা হলো; তুরস্ক ২ মহাদেশে প্রলম্বিত, এবং প্রায় পুরোটাই এশিয়াতে, সামান্য অংশই ইউরোপে; কিন্তু কামাল ইউরোপীয় মনোভাবের মানুষ ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, এশিয়া অংশের লোকেরা তুরস্ককে এশিয়ান দেশ ও এশিয়ান ট্রেডিশনে ভাবছিলেন; কিন্তু কামাল এশিয়াকে পেছনে-পড়া মহাদেশ হিসেবে গণ্য করতেন; ফলে দেশের বড় অংশের সাথে সাংস্কৃতিক গরমিল ধরা পড়লো; কামাল জাতিকে ইউরোপীয় সংসকৃতির দেশে পরিণত করেছিলেন।
রাজতন্ত্রের মানুষকে ইউরোপীয়-মনা রিপাবলিকে আনা সহজ ছিলো না; ক্রমেই তুরস্ক মাথা থেকে রাজতন্ত্র মুছে ফেলে প্রভুত উন্নতি সাধন করেছে; আজকে তারা ইউরোপীয়ান দেশ সমুহের মাঝে ভালো অবস্হানে আছে।
আনাতোলিয়ার ভেঁড়ার মালিকেরা ইস্তাম্বুলের বিল্ডিংসমুহকে গীর্জা ভাবতো, তারা ইস্তাম্বুল পছন্দ করতো না, কামাল ইস্তাম্বুলে আস্হা রেখেছিলেন। আবার, কামালের সময়, আরবদের তেলের পয়সা ছিলো না; কামাল তাঁবু ইত্যাদিকে সভ্যতার কেন্দ্র ভাবতেন না; ফলে, নতুন সৃস্টি-করা নিজের দেশে কামালকে বেশ গরম পানিতে থাকতে হয়েছে।
প্রায় শত বছর কেটে গেলেও অনেকের মাথা থেকে রাজার ভাব কেটে যায়নি; তারা জাতি হিসেবে একটু দাদাগিরি করতে চায়; কিন্তু ইউরোপে তাদের থেকে অনেক বড় বড় দাদা আছে; এবার তারা পেছনের দিকে তাকাচ্ছে, পেছনে এশিয়া এবং সেটা হলো আরব; তারা আরবদের খেলায় প্রতিযোগীতা করতে চাচ্ছে।
যারা কামালের সময়, তুরস্ককে এশিয়ামুখী করতে চেয়েছিল, তাদের ভুত ও সুতেরা এখন সুযোগ পাচ্ছে; তুরস্কের এশিয়ামুখীদের একজন হচ্ছে বর্তমান প্রেসিডেন্ট।
তুরস্ককে ইউরোপের মত উন্নত করার জন্য কাজ করে গেছেন কামাল পাশা, তুরস্ক সেভাবেই ভালো করবে; আরবদের খেলায় যুক্ত হলে, আরবদের মতো অবস্হা হবে তুরস্কেরও।
তুরস্কের কুর্দি সমস্যা অকারণে তুরস্ককে আরব সমস্যার সাথে যোগ করে দিচ্ছে; তুরস্ককে রাজনৈতিকভাবে কুর্দি সমস্যার সমাধান করা উচিত; তা'হলে তুরস্ক আরবের এক সাধারণ সমস্যা থেকে মুক্ত হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:০৬