‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে না কো তুমি, সারাবিশ্বের বিষ্ময় তুমি আমার বাংলাদেশ’ কথা সত্য। বাংলাদেশ সত্যিই এক বিষম্য়কর দেশ। যেখানে সব সময় বিষ্ময়কর কান্ড ঘটেই চলেছে। যেমন ধরুন, ৭ জন খুন করেও নূর হোসেন সাহেব বেকসুল খালাস চাচ্ছেন। তার সেই অভিব্যক্তিও কিনা পত্রিকার শিরোনাম হয়। অবস্থাটা এমন যেন, সংবাদ খুঁজে পাচ্ছি না তবে কি দেই? পত্রিকার পাতা কি ফাঁকা যাবে? তা কি করে হয়! তাই এই খুনী বাবাজির সংবাদটা প্রকাশ করলেন বিজ্ঞ সম্পাদক মহাশয়। আর সেই সংবাদ দেখে আমার বিষ্ময়ের শেষ নাই।
আরো কিছু বিষ্ময় আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। প্রধানমন্ত্রীর ভ্যানে চাপা ইস্যুতে ষ্টার জলসা,জি বাংলা নিয়ে হাইকোর্টে রুল জারি করা হল। রুল জারি করার পর আরো বিষ্ময়ের খবর হল, ষ্টার জলসা এবং জি বাংলার পক্ষ হয়ে মামলা লড়বেন এই বাংলাদেশরই ল ইয়ার। কি বিষ্ময়কর ব্যাপার আপনারাই বলুন। মামলার রায় যখন প্রকাশ পেল তখন বিষ্ময়ের আর কোন সীমা রইল না। বিষ্ময় তার সীমানা ছাড়িয়ে পৃথিবীর মধ্যাকর্ষন শক্তি ভেদ করে মহাশূন্যে অবস্থান নিয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের চ্যানেল ষ্টার জলসা এবং জি বাংলার সম্প্রচার বৈধ বলে রায় প্রদান করা হয়েছে। আমি বিষ্মিত হতে চেয়েও পারলাম না। হয়তো এই রায়ও সেই ৪৫ আগের বন্ধুত্বের উপহার। ৪৫ বছর ধরে উপহার উপহার নিতে নিতে হয়তো প্রতিবেশীরাই ক্লান্ত হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রপ্রধানদের মাঝে কোনই ক্লান্তি নাই। বরঞ্জ আরো যদি কিছু দেবার মওকা পাওয়া যায় তবে সেটাও পুরোদমে দিয়ে দেওয়া হবে। যেমন করে পুরো ট্রানজিট কোন ধরনের শুল্ক ছাড়াই দিয়ে দিয়েছি, শুধুমাত্র বন্ধুত্বের দাম প্রদানে। সত্যিই এমন বন্ধুত্ব পৃথিবীতে বিরল। কবি তো আর এমনি এমনি বলেন নি, সারাবিশ্বের বিষ্ময়। আমাদের রাষ্ট্রপ্রধানরা তা কাজে প্রমান দিচ্ছেন।
বিষ্ময়ের এখনো কিছুটা বাকি আছে। গ্রীন হাউজ ইফেক্টে কোনঠাসা অবস্থায় আছে বাংলাদেশ। তারপরও সুন্দরবনের কোল ঘেষে নির্মিত হতে যাচ্ছে কয়লাভিত্তিক সুন্দরবন। আমাদের দেশ প্রধান বারবার বলছেন, এতে সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হবে না মানে হবেই না। কিন্তু লোকজন তা বিশ্বাস করতে চায় না। অতঃপর প্রধানমন্ত্রী ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে বললেন, বিশ্বাস না হলে সুন্দরবনের বাঘের সঙ্গে কথা বলে আসেন। তাদের কোন আপত্তি আছে কিনা? প্রধানমন্ত্রীর এই বিষ্ময়কর সিদ্ধান্তও প্রতিবেশী রাষ্ট্রটির জন্যই। এমন বন্ধুত্ব সত্যিই আজকাল দেখাই যায় না। যদি দেখতে চান, তবে বাংলাদেশে আসুন। বিষ্মিত হবেন তা গ্যারান্টি দিতে পারি।
কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ভ্যান গাড়ি চলছে। কিছু কিছু সময় সেই ভ্যান গাড়িকে আকাশে উড়তেও দেখা গেছে। যাই হোক, আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে ভ্যান গাড়িতে চড়েছিলেন সেটা নাকি এখন জাদুঘরের শোভা বর্ধন করছে। এ যে কি রকম বিষ্ময় তা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। আচ্ছা একটা প্রশ্ন মনে জাগছে, প্রধানমন্ত্রী এখন যদি পরিবার সমেত ট্টেনে ভ্রমন করেন, তবে সেই ট্টেনও কি জাদুঘরে নেওয়ার ঘোষনা দেওয়া হবে?
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:০৭