somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্রলীগের অদক্ষ নাট্যকারদের ফাঁসি চাই!

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক দিন আগে একটি গল্প শুনেছিলাম। এক গ্রামের চোর বাপ-বেটার গল্প। বাবা এবং ছেলে দু’জনেই চোর। চুরিই তাদের একমাত্র পেশা। চুরি করলে পেটে ভাত জোটে চুরি না করলে জোটে না। তারপরও এরা একটু ব্যতিক্রম চোর। পেটে ভাত থাকলেও চুরি বিদ্যায় পারদর্শীতা প্রদর্শনেও এরা মাঝে মাঝে চুরি করে।

চোর বাপ বেটার মধ্যে বাপ এখন প্রায় বৃদ্ধ হয়ে গেছে। বয়সের গুনেই সে এখন সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছে। চোর ছেলে চুরি বিদ্যাতে পাকা হলেও মাঝে মাঝে ভুল করে ফ্যালে। সেই ভুলের মাশুল হিসেবে জনগন তার বাড়ির দিকে তেড়ে আসে। জনগন তাকে মারতে চায় শাস্তি দিতে চায়। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ান চোর পিতা। তিনি জনগনের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে যান। লোকজনকে শান্ত করে বলেন, ব্যাপারটা আমি দেখছি। এরপর মানুষ জন চলে গেলে, বাপ বেটা একসঙ্গে বসে। তখন বাবা বলেন, আমি মাটিতে বাঁশ দিয়ে বাড়ি দিবো আর তুই চিৎকার করে কান্নাকাটি করবি। এতে মানুষ মনে করবে, আমি তোকে শাস্তি দিচ্ছি। তোর এই চুরি কর্মে আমি খুশি নাহ। বাপের পরিকল্পনানুযায়ী এবার কর্মকরার পালা।

ভর সন্ধ্যায় সেই বাড়ি থেকে ভেসে আসে লাঠির সপাং সপাং শব্দ। আর চোর ছেলে ওরে বাবারে ওরে মা রে বলে চিৎকার দিয়ে কান্না করে। আর সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে, বাবা তার ছেলেকে শাসন করছে। ছেলে নিশ্চয়ই এবার ভাল হয়ে যাবে।

সেই চোর বাপ-বেটার মতো আমাদের ছাত্রলীগও একই খেলা খেলে চলেছে। চারদিকে সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়েছে, লোকজন কিছু বললেই কেন্দ্রীয় কমিটি বহিঃষ্কার দেখায়। কিন্তু বাস্তব চিত্র ঠিক চোর পিতার মতোই।



ছাত্রলীগ নেতা অস্ত্র উঁচিয়ে মাস্তানি করছে আর সেই ছবি প্রকাশিত হচ্ছে পত্রিকায়। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপর চাপ চলে এসেছে। যথারীতি মিডিয়া এবং জনগনের চোখকে ফাঁকি দিতে আবারো বহিঃষ্কার নাটক মঞ্চস্থ হল। কিন্তু এই নাটক মঞ্চায়নের আগেই ধরা পড়ে গেল! একই নেতাকে এর আগে তিনবার বহিঃষ্কার করা হয়েছে।

অতিসম্প্রতি ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যকার সংঘর্ষের কারণে কলেজ ছাত্রলীগের ১৯ জনকে বহিঃষ্কার করা হয়েছে। সেই ১৯ জনের মধ্যে আছেন সেই নেতা যাকে ২০১৩ তে একবার বহিঃষ্কার করা হয়েছিল। ছাত্রলীগের সেই মহান নেতার নাম আবদুল আজিজ ফয়েজ।

২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর রাতে ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের সভাপতি ফুয়াদ হাসান ও সাধারণ সম্পাদক সাকিব হাসানের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দুই পক্ষই একে অপরের দিকে গুলি-বোমা ছুড়ে কলেজে আতঙ্ক ছড়ায়। এ সময় কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় অংশ নেওয়া আসাদুজ্জামান ফারুকসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হন। ওই রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান ফারুক।

পরদিন কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাকিব হাসান বাদী হয়ে ২৩ জনের বিরুদ্ধে ফারুক হত্যার অভিযোগে নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা করেন। এজাহার থেকে জানা যায়, সেই মামলার ২ নম্বর আসামি ফয়েজ। ঘটনার পর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফুয়াদ হাসান, যুগ্ম সম্পাদক আবদুল আজিজ ফয়েজসহ সাতজনকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ রাসেলের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।

আবার, ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাজধানীর বকশীবাজারে বিএনপি-ছাত্রদলের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের সময় গুলি ছুড়তে থাকা অবস্থায় ধরা পড়েন প্রথম আলোর ক্যামেরায়। কিন্তু সে সময় ওই ব্যক্তি ছাত্রলীগের কেউ নন বলে তখন এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন তৎকালীন সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান।

তৃতীয় দফায় গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা কলেজের সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ১৯ জনকে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে ১০ জন পদধারী। বাকি নয়জন কর্মী। কর্মীর তালিকায় রয়েছে সেই আবদুল আজিজের নাম। শনিবার ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ওই ফয়েজ বহিরাগতদের নিয়ে অস্ত্রসহ আক্রমণে অংশ নেন বলে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, তিনি ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নূর আলম ভূঁইয়ার ঘনিষ্ঠ।

ফয়েজের বহিষ্কারাদেশ কবে তোলা হয়েছে, সে সম্পর্কে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের দিয়ে তাৎক্ষণিক একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। ওই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ১৯ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এখানে যে ফয়েজের কথা উল্লেখ রয়েছে, সে জুনিয়র। আগের বহিষ্কৃত ফয়েজের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই।

তবে তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্য আগের ফয়েজকে চিহ্নিত করেছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির আট নেতার সমন্বয়ে গঠিত কমিটির জ্যেষ্ঠতম সদস্য সহসভাপতি কাজী এনায়েত প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকালের ঘটনায় বহিরাগত ব্যক্তিরা এসে কলেজে আক্রমণ করেছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে ফয়েজকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। ফয়েজ আগে ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ছিল।’

এই সীম্পল নাটকটাই যদি মঞ্চস্থ করতে না পারে তবে তারা কিসের নেতা! কিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি, সেক্রেটারি। কিছুদিন আগে দেখলাম এই নেতাদেরকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ সফরে গেছেন। আমি বলি কি, এইসব সফর পরেও অনেক করা যাবে! যেহেতু আপনাদের নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে চাচ্ছেন না তবে হাসিনা আপার আমৃত্যু আওয়ামীলীগ তথা ছাত্রলীগরা যে ক্ষমতায় থাকছে তা চোখ বন্ধ করেই বলে দেওয়া যায়। কিন্তু এতোদিন ক্ষমতায় থাকতে গেলে তো লোক সাধারনের চোখে ধুলো মারা শিখতে হবে! এই ধুলো মারা পদ্ধতি শিখতে হলে নেতাদেরকে ডিবি মনিরুলের কাছে পাঠাতে হবে। ছাত্রলীগের একজন একনিষ্ঠ শুভাকাঙ্খি হিসেবে এসব আনকোরা নাট্যকারদের শাস্তি দাবি করছি। সম্ভব হলে ফাঁসি দিয়ে দিন। ২০ কোটি বাঙ্গালীর মাঝ থেকৈ নেতার অভাব নিশ্চয়ই হবে না! একান্ত অভাব দেখা দিলে নাহিদ সাহেবের জামাই ইমরান এইচকে দিয়েও কিছুদিন ছাত্রলীগ চালানো যাবে। তার আগে নাটক সাজানোর প্রশিক্ষণ প্রয়োজন! ডিবি মনিরুলের একান্ত সহচার্য প্রয়োজন। তবেই না ছাত্রলীগ হবে অদশ্য অপ্রতিদন্দী। তখন সবকিছুকে ছাপিয়ে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাবে সোনার ছেলের দল ছাত্রলীগ!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৬
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×