আমার প্রশ্ন সেখানে নয়! প্রশ্ন আরো উপরে। জান কবজ করার আগে আওয়ামীলীগ নেতার অনুমতি গ্রহণ করা হয়েছিল কিনা তা কিন্তু নিউজের কোথাও দেওয়া হয় নাই। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, জান কবজের আগে নেতার কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ করা হয় নি। যার কারণে একদম কবর দেবার সময় লীগের সভাপতি উপস্থিত হতেন না। লাশের খাটিয়া ধাক্কা দিয়ে কবরস্থান থেকে বের করে দেবার প্রয়োজন ছিল না। মাননীয় স্পীকার! তবে কি সেই অপরাধে জান কবজকারীকে এলিট ফোর্স র্যাব দিয়ে পাকড়াও করা হবে? (নাউযুবিল্লাহ) অসম্ভব না। আমি বরাবরই বলে থাকি, বাঙ্গালদের এই বাংলাদেশে কোন কিছুই অসম্ভব নয়।
কি সম্ভব আর কি অসম্ভব সেসব বলার আগে মূল ঘটনাটি জেনে নিন। বুধবার দুপুরে বাঁশিলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মরহুম সুলতান মণ্ডলের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা মারা যান। তার সন্তানদের কাছে আগে থেকে করা ওসিয়ত মতো তার লাশ নিজ গ্রাম বাঁশিলা কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তার স্বামীর পাশে দাফন করার প্রস্তুতি নেয়া হয়।
সে অনুযায়ী কেন্দ্রীয় গোরস্থানের সভাপতি মো. আজিজ খাঁ ও সহ-সভাপতি জয়নাল খাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে রেজুলেশন মোতাবেক পরিবারের পক্ষ থেকে এক হাজার টাকা গোরস্তান তহবিলে জমা দিয়ে অনুমতি নেয়া হয়। পরে কেন্দ্রীয় গোরস্থানের কমিটির সদস্য হাসান ও ইসমাইল গোরস্থানে গিয়ে কবরের জায়গা নির্ধারণ করে দিয়ে আসে।
পরিবারের পক্ষ থেকে কবর খোঁড়া হয়। লাশ কবরে নামানোর জন্য রাতে জেনারেটরের ব্যবস্থা করে পরিবারের সদস্যরা। পরে তার লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় ফৌজদার পাড়া মোড়ে যেতেই মাধনগর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহের উদ্দিন সবাইকে থামিয়ে দেন।
আমি বলব, তাহের সাব বিরাট কৃতিত্বের এবং বীরত্বের কাজ করেছেন। তাহেরই মুজিব আব্বুর যোগ্য সৈনিক। এমন সৈনিক প্রতিটি লীগ জাতির ঘরে ঘরে জন্মানো উচিত। আর এই জাতিকে দেখেই লীগ জাতির আব্বুর বড় মেয়ে দাঁত কেলিয়ে কেলিয়ে হাঁসবেন এবং বলবেন, “সাব্বাস! বাপের বেটা শেখ মুজিবের যোগ্য সন্তান এবং সৈনিক”।
মরহুমা বৃদ্ধার দুই পুত্রও কিন্তু মজিবের সৈনিক মানে আওয়ামীলীগের কর্মী। মানে তাদেরও আব্বু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই আব্বুর সন্তানের অধিকার বলে তারা নেতার কাছে অনুরোধ করেছিল, মাকে দাফন করতে দিন। কিন্তু লীগের সভাপতি তার সিদ্ধান্তে অনড়। তিনি কোন ধরনের স্বজন প্রীতির মধ্যে নেই। আমি অবাক হয়ে গেছি, তার দায়িত্ববোধ দেখে। তার নিষ্ঠা এবং একাগ্রতা দেখে চোখ কপালে তুলেছি। এমন দায়িত্বপরায়ণ ব্যক্তি এই দেশের বুকে আজও আছে ভাবতেই পারা যায় না। নিয়ম মানে নিয়ম। সে তুমি মুজিবের সৈনিকই হয় আর হাসিনার হুকুম তামিলকরা একনিষ্ঠ দালালই হয় তাতে কোন যায় আসে না। যেহেতু অনুমতি নেয়া হয় নাই তাই লাশ কবরস্থ করা যাবে না। আমি আরো অবাক হয়েছি,‘লাশের খাটিয়া ধাক্কা দিয়ে কবরস্থান থেকে বের করে দিয়েছেন লীগ সভাপতি তাহের’। যতদূর জানতাম, মায়ের প্রতি সবারই অন্যরকম টান থাকে। পরিচিত কোন ব্যক্তির মা মারা গেলে আমিও কষ্ট পেতাম। তার মা হারানোর ব্যথা আমাকেও স্পর্শ করে যেতো। কিন্তু তাহের! মুজিবের এক নাম্বার সৈনিক। তাকে কোন মায়াই স্পর্শ করতে পারে না। সে মায়েরই লাশ হোক আর হাসিনারই লাশ হোক। আগে নিয়ম তারপর অন্যসব কিছু।
আমি আজকে বিশ্বাস করতেছি, এই মুজিবর সাহেবের এই ছেলেদের দ্বারাই সম্ভব। এরাই পারবে। পিছনে ফেলে সামনে চল জয় বাংলা বলে আগে বাড়। এরাই সবকিছুকে তুচ্ছ করে আগে বাড়তে পারবে। এরাই সেই চির তরুনের দল। খুব সম্ভবত শেখ মুজিবের সৈনিকদের নিয়ে আগাম চিন্তা করেই জাতীয় কবি ‘যৌবনের গান’ কবিতাটি লিখেছেন। ধন্য হে লীগ জাতির পিতা। ধন্য হে লীগ জাতির আম্মু। এমন সন্তান জন্ম দিয়ে তুমি বাংলাকে ধন্য করেছো। তোমার বহু স্মরনীয় কর্মের মধ্যে লীগ জাতিকে জন্ম দেবার কথা জাতি আজীবন স্মরণ রাখবে। যতদিন রবে এই বাংলা, তোমাদের কুকৃত্তি স্মরন করবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১৩