somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বঙ্গবন্ধুর নাম নিয়ে হাজারটি খুন করলেও দোষের কিছু না।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে কায়েম হয়েছে স্মরণ কালের সবচেয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যেকোন সময়ের চেয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন সবচেয়ে ভালো। উপরোক্ত কথাগুলো এর আগের দুই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মখা আলমগীর এবং সাহারা খাতুন বারংবার মিডিয়ার মাইকের সামনে দরাজ গলায় উচ্চারণ করেছেন। এমনকি সাগর-রুনি হত্যাকান্ডের পর সাগর রুনিরই বেডরুমে দাঁড়িয়ে সাহারা খাতুন বলেছিলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেকোন সময়ের চেয়ে এখন সবচেয়ে ভালো! আর সেই ভালোর সুবাদে তৎকালীন স্বরাষ্টমন্ত্রী সাহারা খাতুন ঘোষনা দিয়েছিলেন, আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে খুনিকে গ্রেফতার করা হবে। কিন্তু কত ৪৮ ঘন্টা ঘুরে ফিরে চলে যায় সাহারা খাতুনের মন্ত্রীত্বের মেয়াদও ফুরিয়ে যায় কিন্তু খুনি আর গ্রেফতার হয় না। তাই তো, প্রধানমন্ত্রী অকপটে বলে ফেলেন আমরা কারো বেডরুম পাহারা দিতে পারবো না।

শেখ হাসিনা কারো বেডরুম পাহারা দিতে না পারলেও নিজের এমপিদেরও যে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারেন নি, তা এমপি লিটন হত্যাকান্ডের মাধ্যমে প্রমাণ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর একান্ত আস্থাভাজন এমপি লিটন দিনে দুপুরে আপন বাড়িতে গুলি খেয়ে আওয়ামী শহীদ হলেন। খুন হবার সঙ্গে সঙ্গে সন্দেহের তীর ছুঁটল জামায়াত শিবিরের দিকে। যদিও গোয়েন্দা সংস্থারা এমপি লিটনের স্ত্রী এবং শ্যালকসহ তারই বাড়ির ছয়জন ব্যক্তিকে সন্দেহ করছেন। কিন্তু তারপরও এমপি লিটন হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করে, গত ৪ জানুয়ারী দিবাগত রাত ২টায় ঢাকার বাড্ডা স্বাধীনতা স্মারণীর এক বাসা থেকে পুলিশ ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিবিএ ৩য় বর্ষের ছাত্র আশরাফুল ইসলাম, সাবেক জনপ্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম ও ছাব্বির আহমেদকে আটক করে। তাদের মধ্যে ছাব্বির আহমেদ ও আশরাফুল ইসলাম গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ জামায়াতের থানা আমিরের ছেলে। অন্যদিকে জহিরুল ইসলাম জন প্রতিনিধি(মেম্বার), যাকে সরকার অন্যায় ভাবে বহি:স্কার করেছিল। প্রশাসন এখনো তাদের আদালতে হাজির করেনি বা গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করেনি।



এভাবেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পৈত্রিক সম্পত্তি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রেখেছেন। এভাবেই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে বিশ্বের বুকে রোল মডেল স্থাপন করেছেন। বিরোধীদলকে কিভাবে দমন করতে হয় সে বিষয়েও শেখ হাসিনার বিকল্প আর কোন সরকার হতে পারবে না। এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগ বিনা বাধাঁয় চ্যাম্পিয়নের পুরষ্কার পাবে সে কথা চোখ বন্ধ করেই বলে দেয়া যায়। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে প্রচন্ড গতি। প্রচন্ড গতি নাকি কখনো কখনো ভয়ানক বিপদও ডেকে আনে। তাই তো যমুনা সেতুর উপর ট্টেন গাড়ি বেশ হিসাব কিতাব ঘরে স্পীড মিটার স্থির রেখে ট্টেন পার করা হয়। তারপরও গত বছর ট্টেনের গতির সামান্য গড়িমসি এবং দমকা বাতাসের কারণে ট্টেন একদিকে হেলে পড়েছিল। কপাল ভালো ট্টেন নদীতে পড়ে যায় নি। না হলে শত শত মানুষের যমুনা নদীতে যে সলিল সমাধি ঘটত একথা নির্দিধায় বলে দেয়া যায়।

ঠিক তেমনি দেশের গতিসীমা যদি আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়ে যায়, তবে যে ভয়ানক দূর্ঘটনা ঘটতেই পারে সে কথা চোখ বন্ধ করে বলে দেয়া যায়। দেশের বিরোধীদল দমনে অতিরিক্ত গতির ব্যবহারের কারণে দেশের সার্বিক অবস্থা নিচের ছবিটি দেখলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।



যশোরে ঘুষের টাকা না দেয়ায় থানাতে ছুলিয়ে রাতভর পিটুনি দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের এসআই। ধন্য! আমি ধন্য। এই না হলে বাংলার পুলিশ। আর এ কারণেই হয়তো পুলিশের আইজিপি বলেছিলেন, আমেরিকার পুলিশও বাংলাদেশের পুলিশের কাছে পারবে না। কথা সত্য। আমেরিকার পুলিশ এমন বুকের পাঠা রাখে না। দিনদুপুরে ব্যবসায়ী ধরে এনে ঘুষের টাকার জন্য ঝুলিয়ে পেটাবে। আর দেশের মিডিয়া এবং আমেরিকান সরকার বাহবা দিবে। দেশটি বাংলাদেশ বলেই সম্ভব হয়েছে। নিশ্চয়ই থানার ওসি সেই এসআই এর পিঠ চাপড়িয়ে দিয়েছেন। সাব্বাস। এক্কেরে বাঘের বাচ্চা।

আগে বাংলার মানুষ শোষিত হতো বিদেশী বেনিয়াদের হাতে। আর এখন নির্যাতিত হয় দেশীয় বেনিয়াদের হাতে। বাঙ্গালীরা এবার গর্ব করে বলতেই পারে, মরবো! মরবো! স্বদেশী মানুষের হাতেই মরবো। তাতে একটু হলেও জাত কুল রক্ষে হবে।



দেশের পুলিশ রাতের আঁধারে মানুষ জনরে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারপর সুবিধামত ইনকাউন্টারে পরোপারে পাঠিয়ে দিচ্ছে। সবশেষে মিডিয়াকে বলা হচ্ছে, জঙ্গি নিঁধনে আর একটি সফলতা অর্জন হলো। মুখে গদগদ হাসি নিয়ে মনিরুল ইসলাম এ্যা এ্যা করতে করতে সাফল্যগাধা বকে যান। আর সেই সাফল্য গাঁধা মিডিয়ারা বিপুল উৎসাহে প্রচার করে যান। আর এই আনন্দঘন সংবাদে আনন্দের আতিশষ্যে পৌছে আওয়ামীলীগের এমপিরা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তির কর্মচারীদেরকে থাপ্পড় দিচ্ছেন।



যা কিছু ঘটছে তা সংবিধান বিরোধী অথবা আইনের চোখে দোষনীয় হলেও হতে পারে। কিন্তু ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি অথবা হাসান মাহমুদরা যদি একবার বলেন, “এইসব কিছুই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অথবা স্বপ্নদোষ ছিল”। তবে এক নিমিষেই সবকিছু জায়েয হয়ে যাবে। আশংকা হয়, বঙ্গবন্ধুর নাম নিয়ে হাজারটি খুন করলেও দোষের কিছু হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৩২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×