somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্রাক্ষণ তুষ্ট হলে তবেই স্বর্গ!

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসলাম ধর্মটা একটু কেমন জানি! খুবই বর্বর। জোর করে মানুষের উপর তাদের মতামতকে চাপিয়ে দেয়। জোর করে মানুষকে তাদের ধর্ম পালন করতে বাধ্য করে এক সময় তাদের পরিচয় হয়ে যায়, মুসলিম।

বন্ধুগোছের এক হিন্দু বড় ভাই এই কথাগুলো বললেন। আরো বললেন, ভারতীয় উপমহাদেশ ছিল হিন্দুদের। সব নষ্টের গোড়ায় এই ইসলাম। তারা ভারতে আসল, ভারত জয় করল এবং মানুষকে তরবারীর নিচে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করল। সেই দিন মুসলিমরা তাদের ইসলামকে যদি এমনভাবে ব্যবহার না করত, তবে কোন কালেও মুসলিমদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রয়োজন পড়তো না। তিনি আমার দিকে বাঁকা হাসি দিয়ে বললেন, এর জবাবে কি বলবি! যাই বলিস, আমাকে আমার চিন্তাধারা থেকে এক চুলও নড়াতে পারবি না। ইসলাম বর্বর। মুসলিমরা বর্বর।

তার এইসব কথার পিঠে আমি একটি কথাও বলিনি। শুধু বলেছি, আগামীতে যেকোন একদিন জবাব দিব। কিছুদিন আগে, তার সঙ্গে আবারো দেখা হল। তিনি দুঃখ করে বললেন,“ ধর্ম কর্ম বাদ দিছি। যে হালার ধর্ম মানুষকে মানুষ বলে না সেই ধর্ম মানলাম নাহ”।
আসল ঘটনা হলো, তার এক হিন্দু মেয়ের সঙ্গে রিলেশন ছিল। কিন্তু তারা জাতের দিক থেকে কিছুটা নিঁচু জাতের। ছেলেদের তুলনায় বেশ নিঁচু। সেই নিঁচু জাতের কারণেই ছেলের পরিবার এই মেয়েকে মানতে নারাজ। অথচ টাকা পয়সা এবং সমাজে প্রতিপত্তির দিক থেকে মেয়েরাই বরং অনেক উপরে। কিন্তু ঐ যে, জাত বলে কথা! হিন্দুর যদি জাত যায় তবে নাকি সবই যায়! এই জাত যাবার ভয়ে মন্দিরও পৃথক করা হয়। মন্দিরে পূজো দেবার ক্ষমতা শুধু ব্রাক্ষণদের হাতেই রয়ে যায়। ব্রাক্ষণ ছাড়া আর কারোর সক্ষমতা নেই তাদের দেবীর সামনে মন্ত্র পড়ে পূজা দিবে। আর দলিতরা তো মন্দিরেই প্রবেশ করতে পারবে না।



তাকে বললাম,একটা ঘটনা তাহলে বলি। কিছুদিন আগে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে থাকতেই মাগরিবের আযান দিল। হাসপাতালের বারান্দায় চাটাই বিছিয়ে নামাযের ব্যবস্থা হল। ইকামত দিয়ে নামাযও শুরু হয়ে গেল। কিছুক্ষনের মধ্যে হাসপাতালের ডাক্তার এবং পরিচালনা পরিষদের মেম্বারও নামাযে শরীক হল। আমরা সাধারণ মুসল্লিরাও নামাযে দাঁড়িয়ে গেলাম। সেই নামাযে ইমামতি কে করেছিল, জানেন? ঐ হাসপাতালের একজন ক্লিনার। ঐ ক্লিনারের পিছনে ডাক্তার হাসপাতালের পরিচালকরা নিঃসংকোচে, দাঁড়িয়ে গেল। মনে পড়ে যায়, সেই ইতিহাসের কথা। গজনীর সুলতান মাহমুদ দাঁড়িয়ে গেছে নামাযে। পাশে দাঁড়িয়েছে সুলতান মাহমুদের ভৃত্য। সেখানে সুলতান মাহমুদ এবং সুলতান মাহমুদের ভৃত্য মিলে মিশে একাকার। এখানে কে সুলতান আর কে ভৃত্য তা মূল পরিচয় নয়। মূল পরিচয় একটাই, সুলতান মাহমুদ এবং সুলতান মাহমুদের ভৃত্য এক আল্লাহর গোলাম। আর সেই আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায়ে সুলতান এবং সুলতানের ভৃত্য একই কাতারে দাড়িয়ে গেছে। এটাই ইসলাম। এটাই মানবাধিকার। এটাই ধর্মাধিকার।

আর আপনার মত ভারতীয় উপমহাদেশের হিন্দুরা যারা জাত পাতের কারণে তাদের ধর্মীয় নির্যাতনের স্বীকার হন, তারা এই সাম্য দেখে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ইসলাম গ্রহণে কখনোই তরবারীর আশ্রয় গ্রহণ করা হয় নি। ভারতীয় উপমহাদেশের কোটি কোটি নির্যাতিত হিন্দুরা স্বইচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করে নিজের মানবাধিকারটুকু ফিরে পেয়েছে। সে ইসলাম গ্রহণ করে নিজেকে মানুষ ভাবার সৌভাগ্য অর্জন
করেছে। তার আগে সে নিজেকে নিঁচু জাত ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারতো না। সে ছিল ব্রাক্ষণদের সেবাদাস। তার জীবনভর কাজ একটাই ব্রাক্ষণদের সেবা করে যাওয়া। ব্রাক্ষণ কে তুষ্ট করতে পারলেই স্বর্গ মিলতে পারে। আবার নিঁচু জাতের কারণে তাদের ভগবান স্বর্গ নাও দিতে পারে। নিঁচু জাতের সাথে সব কিছুই করা যায়। তাতে কারো কোন কিচ্ছুরই যায় আসে না। সেই যায় আসে না থেকেই হিন্দুরা ইসলামের দিকে আকৃষ্ট হয়েছে। ফলে উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে ইসলাম প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।

ইসলাম বর্বর নয়, বরঞ্জ উদার। ইসলাম সংকির্ণ নয়, বরঞ্চ অবার প্রসারিত। ইসলাম মানুষকে নির্যাতনের খাতিরে ব্যবহৃত হয় না। বরঞ্জ ইসলাম মানুষকে নির্যাতন থেকে মুক্তি দিয়ে শান্তির জীবন উপহার দিয়েছে। যার প্রমাণ, এই একবিংশ শতাব্দিতেও ভারতের হাজার দলিত হিন্দুরা দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করছে। আর সবচেয়ে ধ্রুব সত্য কথাটি হল, ইসলামই মানুষকে মানবিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৫
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×