উত্তর সাগরে যেখানে টেমস নদী মিশেছে সমুদ্রে
এই সন্ধ্যায় তার কিছু শীতল লবনাক্তা নিয়ে আমি
কোন এক দূরগামী কবি’র মাস্তুলে কিছুটা শব্দবিভ্রাটের ডাক পাঠালাম-
নিকষ আধারে এই পংতিমালা না হয় সব কর্কট ব্যাধির বিরুদ্ধে
আমার শাব্দিক দায়বদ্ধতার মোকাদ্দামায় ঘোলা জলের ঘূর্ণিতে অদৃশ্য প্রেম হয়ে রইল।
আমি কবি’র ধূসর হ্যাটে একটি শব্দ খুদায় করেছি: প্রেম!
আমি বার্মিংহ্যামের বিজন প্রান্তরে প্রান্তিক অবচেতনায় শুধুই বলছি;
যা হারিয়ে যায় তারও অধিক রয়ে যায় ছাপাখানার নীলকালো সংলাপে।
অন্ধকারে সমুদ্রের প্রণয় বাতাসের সাথে ফিসফিস-
অনেকটা অভিমানে মেঘমালা প্রেরিত হয় ফুরিয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়ে;
আলোমাটির ঘ্রাণ দু’টি কিংবা তারও অধিক নুড়ি নিয়ে আক্ষেপ করে ফুরিয়ে যাওয়া পঞ্চাশে আর একবার-
আমার দেখানাদেখার অনুভবের শতরঞ্জিতে কেউ কেউ উপেক্ষার পিক ফেলে বলে: যা গিয়েছে তা সমসাময়িক,
অবিরত সময়ের বিচিত্র শ্যাওলাযুগল!
উত্তর সাগরে এখন সন্ধ্যারাত-
কবি, তোমার নিশ্চল সময় রেখায় এখন কতটা আলো!
যে কবিতাসকল তুমি প্রত্থিত করেছ যৌবনবেলায় তার সমাপ্তি কি শুধুই আজরাঈলের হুংকারে স্তমিত-
নাকি ইথারের আবডালে ময়ূখ পান্ডুলিপিতে সেসব সূবর্ণ হরফ!
আমি কাব্যবিষারদ নই, আমি শব্দেরও অধিক তালাশ করি না গ্রন্থের ব্যাকরণে,
শুধুই সামহয়্যারইনের পাতাগুলো মিলাই ঘুমহীন অন্ধকারে-
যেখানে অবাক এক শব্দকর যুবক ছিল, কর্কটহীন দেহ, মননে খুজতো অপেক্ষার শীর্ণগোলাপ।
ফুটনোট: কবি দেলোয়ার হোসেন মঞ্জু (গেওর্গে আব্বাস)। কবি’র কবিতার সাথে আমার পরিচয় সামহয়্যারইন ব্লগে। যদিও এক রাজ্যে থাকা তবুও তার সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল না। উনি বার্মিংহ্যামে থাকতেন, দৈবত লন্ডনে আসতেন- আর শেষের দিকে তো উনি অসুস্থ্য ছিলেন! তবে আমরা লন্ডনের বিভিন্ন সাহিত্য আড্ডায় তার কবিতার কথা খুব বলতাম। এভাবে বিলেতে তিনি আমার একরকম প্রিয় কবি’র তালিকায় ছিলেন। তারপর হঠাৎ তার মৃত্যু সংবাদ শুনেছিলাম। কখন আমি লন্ডনের পাট চুকিয়ে উত্তর সাগরের একটি দ্বীপে ঠিকানা গেড়েছি।সেদিন সন্ধ্যায় বৃষ্টি ঝরছিল। আমি সমুদ্রের কিনারে একটা শেডে দাড়িয়ে, সমুদ্র, অন্ধকার আর বৃষ্টির ঝাপটায় নেটপ্যাডে লিখে ফেলেছিলাম- মঞ্জু সমীপে’ । লন্ডনের সাপ্তাহিক সুরমার সাহিত্য পাতায় এবং আমার দ্বিতীয় কবিতাগ্রন্থে এ কবিতাটি প্রকাশিত হয়েছিল। সামহয়্যারইনের পাঠকদের জন্য পোষ্ট করলাম! (২৬.১১.২০১৮)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৮