পাঠাও এর ৩০০ কর্মচারী ছাঠাই। এতো কর্মচারী আসলো কোত্থেকে আমার জানা নেই । আর এখানে কর্মচারী বলতে কি বোঝানো হচ্ছে সেটাও আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে আটে না। আরো নাকি ৪০০ কর্মচারী বাদ দিতে পারে। ১০০০০ টাকা করে বেতন ধরলেও মাসে কোটি টাকা বেতন বাবদ দিতে হয় পাঠাওকে । আর কিছুদিন আগে দেখলাম ইনভেস্টেড এসেট মিলিয়ন ছাড়িয়েছে । এখন রাস্তায় চলা গাড়িগুলোকে যদি পাঠাও এর সম্পত্তি ধরা হয় তাহলে তো হবেই। ঠিক যেমনটি হয় উবার এর ক্ষেত্রে ।
আমেরিকান কংগ্রেসে জুকারবার্গকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ফেসবুকের ইনকাম কিভাবে হয় ? জুকারবার্গের উত্তর দিতে মোটামুটি এক গ্লাস পানির পুরোটাই শেষ করতে হয়েছিল । এখন কংগ্রেসম্যানরা আমার মত ক্ষুদ্র জ্ঞানের হলে তার দায় তো ফেসবুক বা উবার এর না । আপেক্ষিক এই স্টার্টআপ জগতের লাভ লোকসান অন্য সব ঋণখেলাপি ব্যবসার মতো না । যারা হাজার কোটি টাকা মেরে দিলেও মাসে কোটি টাকা কর্মচারীর বেতন দেবার সাহস রাখে না ।
দূর থেকে কাশবন ঘন । ১২০০০ মাইল দূরের সিলিকন ভ্যালির স্টার্টআপ মডেল অনেকটা এই রকম । নিউইয়র্কের মেট্রো ট্রেনে প্রতিদিন একটা করে নতুন স্টার্টআপ জন্মায় । যার আয়ুষ্কাল বড়জোর মাস ছয়েক। এর মাঝে কিছু স্টার্টআপের শরীর স্বাস্থ ভালো থাকায় তারা ইনভেস্টমেন্ট পায় আরব দেশগুলো থেকে । আরবরা সিলিকন ভ্যালিতে ইনভেস্ট করার জন্য মুখিয়ে থাকে । এর কারণ মাইগ্রেশন আর আমেরিকায় সম্পদ গড়া। এই কাজটি করে জাপানের সফট ব্যাংক নামের একটা ব্যাংক। সব কিছু ঠিক থাকলে নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ এ শেয়ার ছাড়ার ব্যবস্থা করা হয় । আর জন্ম নেয় উবারের মতো ১০০ বিলিয়ন ডলার কোম্পানি । যার লোকসান বছরে ২ বিলিয়ন । কিন্তু দেখতে শুনতে বেশ ভালো । সিলিকন ভ্যালির এই জাতীয় ইনভেস্টমেন্ট আর লুকোচুরি আমেরিকান সরকার দেখেও না দেখার ভান করে । কারণ যেভাবেই হোক আরবদের ডলার আবার আমেরিকার মাটিতে ফিরে আসছে ।
সব স্টার্টআপ গুলুকে একই পাল্লায় ফেলা যাবে না । শুধু মাত্র এপপ্স নির্ভর স্টার্টআপ গুলুর এই অবস্থা । যে কোন ব্যবসার মূল উপাদান পণ্য । মানে প্রোডাক্ট । যাদের আছে তারা টিকে গেছে । অনলাইন সার্ভিসের উপর নির্ভর করে যে ব্যবসা করা যায় তা শুধু আমরাই ভাবি । আমাজানের নিজেদের প্রায় ডজন খানেক পণ্য বাজারে আছে । গুগল এর মোবাইল থেকে শুরু করে চোখে পড়ার চশমা পর্যন্ত আছে । এখন আমরা শুধু গুগলকে মোবাইল ফোনে দেখি এই জন্য আমেরিকায় মানুষ গুগল চশমা চোখে পড়বে না তা হয় না ।
পাঠাও ভালো উদ্যোগ । কিন্তু যে ধারণা নিয়ে পাঠাও চিন্তা করছে বাস্তবে ঠিক তারা উল্টো। তবে দেশের কালো টাকার মালিকরা যদি সৌদি শেখদের মতো সাদা টাকার লোভে ইনভেস্ট করে তাহলে হয়তো এই যাত্রা বেঁচে যাবে পাঠাও । তবে দিন শেষে মেনে নিতেই হবে স্টার্টআপ গুলুর ইনকাম স্টেটমেন্ট দিতে পুরো এক গ্লাস পানি শেষ করতে হবে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০১৯ ভোর ৪:৫৬