আমার অতি পছন্দের একজন নাট্য নির্মাতাকে আজকে খানিকটা উপদেশ দিলাম। উনাকে রাতে শোবার আগে একটা ৩ মিলি লেক্সাটানিল ট্যাবলেট আর খাবার আগে গ্যাস্টিকের যেকোনো একটা ট্যাবলেট খেয়ে নিতে বললাম। আমার ধারণা উনার গ্যাস্টিকের সমস্যা হচ্ছে। গ্যাস্টিকের সমস্যার কারণে উনি বেশ আবেগ তাড়িত হচ্ছেন। এটা হতেই পারে। বুকের বাম পাশে কেমন কেমন লাগলেই যে বিবেগ নাড়া দিবে এমন কোন কথা নেই। এটা গ্যাস এর জন্যও হতে পারে। সমস্যা আরো জটিল হতে পারে বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ শ্রাবন মাসে। আপনি যাই খাবেন দেখবেন সহজে হজম হচ্ছে না। বুকের মধ্যে কেমন কেমন যেন লাগছে। আপনার কাছে মনে হবে আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিলের জন্য মনটা কেমন করছে। অথবা কোটা আন্দোলকারীদের বেধড়ক পিটুনি দেখে মনটা উতলা হচ্ছে। সাথে সাথে একটা গ্যাস্টিকের ঔষুধ খেয়ে নিতে পারেন। দেখবেন ভালো লাগবে।
একেক জনের হজমের শক্তি একরকম। কেউ এক বসায় হাসি মুখে আস্ত একটা খাসি খেয়ে ফেলতে পারে। আবার কেউ সামান্য ডিম্ খেয়েও ঝিম মেরে যেতে পারেন। সমস্যাটা ডিম্ বা মাংসে না। সমস্যা পেটের ভেতর। অভ্যন্তরীণ শারীরিক এই সকল সমস্যা চোখে দেখা না গেলেও এর বহিঃপ্রকাশ ঘটে। যেমন ধরুন কোটা আন্দোলনকারীদের কথা। আবেগী এই তরুণ সমাজ প্রতিদিন আর কিইবা খায়। এই ধরুন টঙের দোকানের চা , ভাজা পোড়া এইসব। গ্যাস্টিক এর সমস্যা তো হবেই। এদের সবারই বুকের বা পাশটা কেমন কেমন করছিলো অনেক দিন থেকে। বুজতেই পারলো না এটা আবেগ বা বিবেগ জাতীয় কিছু না। সামান্য গ্যাস হচ্ছে পেটে। আগে থেকে গ্যাস্টিকের ওষুধ খেয়ে নিলে আজকে ডিম্ খাবার মতো অবস্থার সৃষ্টি হতো না।
বিশ্বকাপের খেলা গুলু যদি রাতে না হয়ে দিনের বেলা হতো দেখতেন ফেসবুকের অর্ধেক পোস্ট কমে যেত। রাতে ভরপেট খাবার এর পর গ্যাস এর সমস্যাকে আমরা মিলিয়ে ফেলি আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের সাথে। তবে সবাই যে আমার গ্যাস তত্ত্বে একমত হবেন তা কিন্তু না। পেটে পর্যাপ্ত পরিমানে গ্যাস নিয়ে ঘোরাফেরা করা লোকের সংখ্যাও নেহাত কম না।
৫২ , ৭১ আমাদের সব অর্জনই বেশ আবেগ তাড়িত। তখনকার আমাদের আবেগ ছিল বেশ কড়া। তবে খাবার দাবারের পুষ্টিগুণে গ্যাস্টিকের সমস্যা তখন এতো প্রকট ছিল না। আন্দোলনে আবেগ থাকলেও থাকতো একটা ঠান্ডা মাথার পরিকল্পনা। কি করলে কি পাবে বা কখন কি করা উচিত তা বুজতে পারতো ৫২ বা ৭১ এর সৈনিকরা। যার কারণে বাংলাদেশ। তবে খাবার দাবারে ভেজালের কারণে এখন কেউই আর আগের মতো মাথা খাটাতে পারছে না। পেটের মধ্যে গ্যাস যখন ছাড়া দিয়ে উঠে মাথা আর কাজ করে না।
আন্দোলকারীদের একজন আবার শাঁস প্রশ্বাস এর সমস্যা জনিত রোগে আক্রান্ত। একে তো গ্যাস্টিকের সমস্যা এর উপর উনি উনার নিশ্বাস কে বিশ্বাস করতে পারছেন না। কিভাবে যে কি হবে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। দেখা যাক কোথাকার গ্যাস কোথায় উড়ে বেড়ায়। তবে আপনার যদি এই মুহূর্তে বুকের বাম পাশটা যদি কেমন কেমন লাগে তবে এখুনি একটা এন্টাসিড জাতীয় কিছু খেয়ে নিতে পারেন। দেখবেন বেশ ভালো লাগবে। ও কিছুই না। নিতান্তই পেটের অম্ল জাতীয় সমস্যা। আবেগ বা বিবেগের সাথে গুলিয়ে ফেলবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:১২