উপরের ছবিটা দেখুন............ কী মনে হয়, এরা কি ছাত্র হতে পারে? তবে আদপেই এরা নাকি ছাত্র এবং ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত!! এরা নাকি বাংলাদেশের ভবিষ্যত রাজনীতি পরিচালনা করবে!! মাত্র সেই দিন অফিসে যাবার আগে পত্রিকায় ছবিটা দেখলাম। দেখে গা গুলিয়ে উঠল, আমরা এ কোথায় যাচ্ছি.....।
বাংলাদেশে যে আদর্শ নিয়ে ছাত্র রাজনীতির সূচনা হয়েছিল তার ছিটেফোটাও আজ অবশিষ্ট নেই। এখন ছাত্র রাজনীতি মানেই কিভাবে টেন্ডারবাজি করা যায়, কিভাবে হল দখল করা যায়, কিভাবে মুরুব্বি দলের নেতাদের পদলেহন করে তাদের মাসল ম্যানে পরিনত হওয়া যায়, কিভাবে না পড়ে নম্বর বাড়িয়ে নেয়া যায়, অথবা নিদেন পক্ষে - হলে একটা থাকার জায়গা পাওয়া যায়।
আমি এই সেদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়লাম, ছাত্ররাজনীতি করার ইচ্ছা থাকলেও তাদের কর্মকান্ডে ওই পথে পা বাড়াইনি। এখনও ভাবি যে ছাত্রনেতা দু'পয়সার জন্য ক্যাম্পাসে অবৈধ দোকান বসায়, তার কাছ থেকে আমরা কি আশা করতে পারি! এই ২০১০ এর কয় মাসে কত ছাত্র এই নোংরামির কারণে মারা গেল, কত বার ক্যাম্পাসগুলোতে গন্ডগোল হয়ে ক্লাস বন্ধ হলো তার হিসাব নিতে গেলেই ছাত্ররাজনীতি আমাদের কী দিচ্ছে তা বোঝা যাবে।
আমরা এক ফেড়ের মধ্যে পড়ে গেছি, খালেদার আমলে ছাত্রদলের নেতারা ডাকাতি করতে গিয়ে পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধ করে; অন্যদিকে হাসিনার আমলে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা দা দিয়ে কোপাকুপি করে। আমি তো কোন পার্থক্য দেখতে পাইনা!!??
ভাগ্য ভাল এবং ঢাকার বলে আমাকে কখনো হলে থাকতে হয়নি। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলোতে সিট পেতে হলে ছাত্রনেতাদের আশীর্বাদ লাগবেই; পরিক্ষা সামনে থাকলেও তাদের সাথে মিছিলে যেতে হবে - যার ভাষা শুধুই " জ্বালিয়ে দাও--পুড়িয়ে দাও.." বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সাড়ে চার বছরে বুঝতে পারিনি ওরা কী জ্বালাতে চায় .......মনে হয় পুরো দেশটাকেই কিনা কে জানে??
তাই অনেক তো হল, এবার অন্ততঃ আমাদের বোধদয় হোক। যে ছাত্ররাজনীতি আমাদের নীতি-আদর্শ-মূল্যবোধ নষ্ট করে দেয়, আমাদের হিংস্র শ্বাপদে পরিনত করে, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোকে বিপদজনক করে তোলে - সেই ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতে আমরা সোচ্চার হই।
অন্তত দশ বছরের জন্য হলেও এই অপচর্চা বন্ধ করা দরকার। দেখিই না কি হয়, তবে বর্তমান অবস্থার থেকে খারাপ কিছু হবে বলে মনে হয় না.......।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১০ রাত ১:১৩