রহমান সাহেব টিভিতে/পত্রিকায় ফাঁকা বুলি শুনতে থাকেন ,কত সূক্ষ স্থুল কারচুপি হয়, কত নাকি ষড়যন্ত্র হয়,হয় অনেক নিরাপত্তার অভাব,প্রয়োজন হয় নতুন আইনের।
রহমান সাহেব মন্তব্য করেন "শালার পলিটিশিয়ান!!"
রাস্তার মোড়ের দোকানে ইলিয়াস চা বিক্রি করে, বিবিসিতে রেডিও শোনে ওবামার নোবেল প্রাইজ প্রাপ্তির খবর ।
মন্তব্য করে "লুকটা ভালা। পুরুষ্কার পাইছে ভালাই হইছে । "
মোড়ের অন্য আড্ডাবাজরা তর্ক জুড়ে দেয় ... "লুক" টা ভালো না খারাপ তা নিয়ে ।
চা শেষ হয় , মন্তব্যের স্তুপ জমে ইলিয়াসের দোকানে ।
জ্যামে রাস্তায় আটকে পড়া সনিয়া বলে উঠে "অসহ্য। আর ভাল লাগে না এই জ্যাম" ।
পাশের সিটেই পরাগ বলে ওঠে "ঢাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে।"
বাস জুড়ে আসতে থাকে একের পর মন্তব্যের তীর।
রেডিমেড মন্তব্যের থলি নিয়ে ঘোরে সবাই । "মেয়র দায়ী, দায়ী রিকশাওয়ালারা...হয়তবা যাত্রীরাই ... "
বসুন্ধরায় নতুন মোবাইল সেট পছন্দ হয় রায়হানের । "শিট ম্যান! আর দু মাস আগে এই সেটটা আসল না ক্যান! শিট ম্যান । ...! "
সীমাহীন আফসোসের মন্তব্য কানে যায় না নকিয়ার সেলসগার্ল এর ।
আড়চোখে তরুণী দেখে যেতে থাকে রেশাদ ,মনে মনেই মন্তব্য করে । "খাসা/জোস/জট্টিল!"।
চলতে থাকে তার বিচারক মার্কা কমেণ্ট ।
"এই মেয়ের চোখ খুব সুন্দর ...এই মেয়ের চুল...আরেকটু সাজলেই ওকে লাগত ঐশ্বর্য্যের মত !" মাঝে মাঝে মার্কিং করে ১ থেকে ১০ এর মধ্যে ঠিক যেন হিন্দি রিয়েলিটি শো এর "জাজ"!
চ্যাটিং করছিল সুদীপ ,কারেন্ট চলে যায় মুখ দিয়ে মন্তব্য বের হয় "হোয়াট দ্যা..."।
নিচ তলায় পৌছে সে মন্তব্য । কারণ কারেন্ট নেই যে । বৈদ্যুতিক পাখার ঘরঘর মন্তব্য বন্ধ ।
ব্লগার "অমুক" এর লাল নীল কষ্ট জমাট বেঁধে গল্প হয় ,"তমুক" এর স্বপ্ন গলে কবিতা হয় । "নামহীন" পড়ে যায়, বোঝে কিংবা বোঝে না, কমেণ্ট এর শব্দও খুজে পায় না ।
শেষ মেষ কমেন্ট করে "চমৎকার ভাল লাগল ++" ।
সকাল বেলা নীলক্ষেতের মোড়ে দেখা যায় কিছু টোকাই। মানুষ নয় ,অন্য এক প্রজাতির সদস্য এরা,প্রজাতির নাম টোকাই ।
সারা দিন কাগজ কুড়িয়ে গভীর রাতে ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়ে পড়ে ,রাস্তার পাশেই ।
ট্রাফিক পুলিশ হয়ত কিছুক্ষণ সবুর করবে । তার পর লাঠির ব্যবহার শুরু করবে ।
মন্তব্য নিস্প্রয়োজন । প্রয়োজন লাঠি চার্জ ।
********
মনটা ভাল নাই । অনেক কিছুই শুরু করেছি । কিন্তু শেষ হচ্ছে না । লেখা/ প্রজেক্ট কিচ্ছু না ।