আজকে তেলাপোকার জিনোম এনালাইসিস নিয়ে নেচার কমিউনিকেশনে একটা আর্টিক্যাল এসেছে। চায়নীজ একটা গ্রুপ এই আর্টিক্যালে দেখিয়েছে তেলাপোকার শরীরে যেকোন ইনসেক্টের তুলনায় সবচেয়ে বেশি জিন আছে। সংখ্যায় তেলাপোকার জিন প্রায় সাড়ে তের হাজার যেখানে পতঙ্গের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঘাস ফড়িঙ্গের, প্রায় আট হাজারের মত। তারা দেখিয়েছে তেলাপোকা এবং উইপোকা আসলে ভাই ভাই- অর্থাৎ জিনগত বিবর্তনের দিক দিয়ে নিকট-আত্মিয়। যেখানে উইপোকারা ফ্রেশ কাঠ হজম করতে পারে তাদের পেটের ভেতরের মাইক্রোবায়োটা বা ব্যাক্টেরিয়ার জন্য অন্যদিকে তেলাপোকাদের মাইক্রোবায়োটা হজম করতে পারে নানা-ধরনের পঁচা-বাসি খাবার যা দীর্ঘকাল মানুষের সাথে বসবাসের ফলে উদ্ভব হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে । ঠিক একই কারনে সর্বভোগী এই তেলাপোকাদের ভেতরে উদ্ভব হয়েছে ম্যাসিভ সব রিসিপ্টরের যা দিয়ে সে যেকোন প্রকার খাবারের স্বাদ, গন্ধ নিতে ও সেগুলোর ডিটক্সিফিকেশন করতে পারে।
আরো মজার ফাইণ্ডিংস হচ্ছে এই তেলাপোকারা টিকটিকির লেজের মত পা হারালে দ্রুত আবার নতুন পা তৈরী করে ফেলে যাকে বলে ডেভেলপমেণ্টাল প্লাস্টিসিটি এবং এই সক্ষমতা খাবারের এভেইলিবিটির সাথে বাড়ে। এই ফাইন্ডিংসের মোদ্দা কথা হচ্ছে কিছু সুত্র দেয়া যা ভবিষ্যতে তেলাপোকার মত পেস্ট কন্ট্রোলে কাজে লাগবে। যাইহোক, তেলাপোকা নিয়েও কত সুন্দর কাজ হতে পারে তার প্রমাণ এই পেপারটা। পড়ার সময় ভাবছিলাম দুটো জিনিসঃ--
১। দেশে যখন পাটের জিনোম সিকোয়েন্সের খবর প্রকাশ হল তখন একদল শিক্ষিত মানুষ এই কাজের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। ভাবখানা এমন যে, নিজে বা নিজেরা পারিনি তাই বলে অন্যেরা পারবে কেন। সেই সব বাঙ্গালীর মত কি চাইনীজ গভর্নমেন্টের কেও ভেবেছিল কী হবে তেলাপোকা পেছনে গবেষনায় টাকা খরচ করে?
২। যেইসব গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টরা এই প্রজেক্টে কাজ করেছে তাদের কেউ হয়তো এমএস বা পিএইচডি করলো (হয়তো) তেলাপোকার উপর আর সেই ব্যাক্তি যদি বাংলাদেশের কোন চাকরির ইন্টারভিউয়ে বা কারো সাথে আলাপ করে তার রিসার্চ তেলাপোকা নিয়ে... উফফ কি পচানী-টাই না দিবে...
https://www.nature.com/articles/s41467-018-03281-1?utm_source=fbk_nr&utm_medium=social&utm_campaign=NNPnature#Sec7
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৭:৩৭