somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ফেলুদার তোপসে
নিষ্পত্তি কি সব সময়ে জয়-পরাজয়ে? ময়দানি ধুলোয় তার বাইরেই যে পড়ে থাকে খেলার আসল-নকল গল্পগুলো৷ ময়দানের ঘাস-ধুলো যাঁর প্রিয়তম বন্ধু, তাঁর কলমে অভিজ্ঞতার দস্তাবেজ৷

গীতা চিবিয়ে গরুটি ঢেকুর তুলল ‘হাম্বা’

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারতবর্ষ দেশটা ভারি বিচিত্র। এদেশের বালক ইতিহাস বইয়ে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের কথা পড়ে। কিন্তু পুঁথির পাতা থেকে মুখ ঘুরিয়ে জানলার কাছে এলে সে দেখতে পায় ‘বৈচিত্র্য’ গড়াগড়ি খাচ্ছে
ফুটপাথে আর ‘ঐক্য’ বেচারা এপেন্ডিক্সের মত একা একা ঝুলে রয়েছে দেশ-মায়ের উদর-গহ্বরে । অধিকাংশ সময় ‘ঐক্য’র কোন কাজ থাকে না, আলসে মটকা মেরে পড়ে থাকে শীতঘুমে। কচিৎ
কদাচিৎ ইচ্ছে হলে হাই তুলে আড়মোরা ভাঙে ও নিজের অর্থহীন অস্তিত্ব জানায় চিনচিনে ব্যথায়। এতে জীবনপ্রবাহে কত বেগ আসে বলতে পারব না; তবে উদ্বেগ মেলে প্রবল। এ দেশের কোমল
মৃত্তিকায় ‘রায়বাহাদুর’ মাহাত্ম্যে যে সকল বীরপুরুষ এক কালে নানান সভা সমিতি আলোকিত করতেন, তাঁদের কোন কোন নব্য-সংস্করণ বুঝি এযুগে নাম লিখিয়েছেন সঙ্ঘ পরিবারে। সাহেবরা
বাক্স-প্যাঁটরা গুছিয়েছে অনেকদিন হল। অথচ রায়বাহাদুরদের আধুনিক অবতারের অনেকের রক্তেই পুরোনো ঠাঁটবাট এখনও দিব্য বেঁচে রয়েছে । উপর থেকে বিলাতী চটক হয়ত কমেছে; পরিবর্তে গায়ে
চেপেছে ধর্মের কঠিন বেখাপ্পা জোব্বা !

বাবু বংশলোচন ব্যানার্জি শহরের এমনই এক মান্যবর । পেশায় উকিল। আচার-ব্যবহারে একেবারে গোঁড়া হিন্দু । বয়সের সঙ্গে সঙ্গে দেহের অলিতে গলিতে অতিরিক্ত স্নেহ বাসা বাঁধায় চেহারাটি
ছোটখাটো এক পিপার আকার ধারণ করেছে । সেজন্য শরীরকে তন্দরুস্ত রাখতে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে প্রতি বিকেলে নিয়ম করে হাঁটতে বেরোন ।

রোজকার মত পায়চারি করে ক্লান্ত হয়ে একখানি চুরুট ধরিয়ে একটা খালের ধারে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলেন বংশলোচন। হঠাৎ পিছন থেকে কে যেন তাঁর জামার প্রান্ত ধরে টান দিল। মাথা ঘোরাতেই
দেখতে পেলেন একটা সাদা গরু। বেশ হৃষ্টপুষ্ট। চোখ দুটো গভীর ও উজ্জ্বল । বয়স বেশি নয়। বংশলোচন চারপাশে তাকালেন। ত্রিসীমানায় কাউকে খুঁজে পেলেন না। কার গরু? চতুষ্পদটির অবশ্য
সেসবে কোন মাথাব্যথা নেই। কাছে ঘেঁষে লোলুপনেত্রে তাকিয়ে রয়েছে উকিল সাহেবের চুরুটের দিকে। বংশলোচন একটা দাবড়ানি দিলেন। ফল হল বিপরীত । গরুটি পেয়ে বসল। দু’পাশে মাথা নেড়ে
নিতম্বটি ভারতনাট্যম কায়দায় ঈষৎ উচ্চে তুলে বেঁকিয়ে লেজের এক ঝাপট মারল বংশলোচনকে। তারপর খপ্ করে চুরুটটি কেড়ে, সেবন করে, তৃপ্তির সঙ্গে জানালো – ‘হাম্বা’! অর্থাৎ, সে প্রীত !
অন্ধকার হয়ে আসছে । তাই বংশলোচন আর সময় ব্যয় না করে বাড়ির দিকে পা বাড়াল । গরুটিও ওর সঙ্গ ছাড়ল না। গঁদের আঠার মত উকিল মশায়ের পিছন পিছন চলতে লাগল । বংশলোচন
পড়লেন মহা ফাঁপরে । গরুটিকে ত্যাগ করার অনেক চেষ্টা করলেন । কিন্তু প্রাণীটি নাছোড়বান্দা । শেষে নিরুপায় হয়ে গরুটিকে নিজেই প্রতিপালন করবেন বলে মনস্থির করলেন। শত হলেও
মহাদেবের ড্রাইভারের ইস্ত্রী । গরু-জ্ঞানে এই মওকায় যদি ফোকটে একটু শিব-সেবা হয়, লাভ আছে, বই ক্ষতি নেই। সত্যি কথা বলতে, আপাদমস্তক গোঁড়া ধার্মিক বংশলোচনের মনের গভীরে ক্ষীণ
হলেও এমন ধারণার মেঘ পুঞ্জীভূত হতে লাগল যে এ বোধহয় পরোক্ষে ভোলানাথেরই কোনও শুভ সংকেত । খানিকটা পুলকিত চিত্তে বাড়ির সদর ফটক অবধি হন হন করে এসে হঠাৎ অর্ধাঙ্গিনীর
মুখশ্রীটি কল্পনা করে কিছুটা স্লথ হয়ে গেলেন। বেশ কিছুদিন হল বংশলোচন ও তাঁর স্ত্রী মানিনী দেবীর মধ্যে কথাটি নেই। সহসা গরুর আগমন বুঝি এ বিবাদ-রসায়নে নতুন গোলমরিচ আমদানি
করল!

cows.jpg

চিন্তামগ্ন বংশলোচন ঘরে ঢুকতেই দেখতে পেলেন রোজকার মত বৈঠকখানা হাউস-ফুল। বিনোদ বলল, আরিব্বাস! খাসা গরু তো! কোথা থেকে জোগাড় করলে?
বংশলোচন সবিস্তারে সমস্ত ঘটনা শোনালেন ।
বিনোদ বলল, বেওয়ারিশ মাল। বেশি দিন ঘরে রাখা ঠিক হবে না। কেটে সাবাড় করে দাও। বিফের কোপ্তা আর কাবাব!
নগেন পাশ থেকে ধামা ধরল, উফ্! নাম শুনেই জিভে জল এসে গেল! ওলিজ পাবে যা বিফ স্টিক পাওয়া যায় না --- !
বংশলোচন বিরক্ত হয়ে বললেন, তোমাদের কী জন্তু দেখলেই খেতে ইচ্ছে করে? বেচারা অনাথ, অসহায়, একটু আশ্রয় নিয়েছে। আর তোমরা তখন থেকে কোপ্তা আর কাবাব করে মরছ!
যা বলেছ। সব একেবারে ম্লেচ্ছ বনে গেছে! পাশ থেকে ফোড়ন কাটলেন নিত্যহরি লাহা ।
গরুর খবর পেয়ে বংশলোচনের সাত বছরের মেয়ে টেঁপী এবং সর্বকনিষ্ঠ পুত্র ঘেন্টু ছুটে এল।
ও বাবা, আমি গরুর দুধ খাবো । বায়না ধরল ঘেন্টু।
বংশলোচন ধমক দিলেন, যা যাঃ, খালি খাই খাই শিখেছে!
ঘেন্টু ভ্যাঁ করে কেঁদে হাত-পা ছুড়ে তীব্র প্রতিবাদ জানালো, হ্যাঁ আমি দুধ খাবো !
টেঁপী বলল, বাবা আমি গরুটাকে পুষব। ওর নাম কী?
আলি বলল, ওর নাম রাখো ‘লম্বহর্ণ’ । বড় বড় শিং। বেশ মানাবে।
ননীগোপাল তবলিয়া। সুর, তাল, ছন্দেই ওর জীবন কাটে। আলির নামকরণ ওর পছন্দ হল না। বলল, ইস্, কী বিচ্ছিরি নাম! বড় বড় শিং, তাই ওর নাম লম্বহর্ণ! ইনসেন্সিটিভ! তুমিও তো লেংচে
হাঁটো। তাহলে তোমায় যদি কেউ ‘ল্যাংচা’ বলে ডাকে, কেমন লাগবে শুনি? গরু বলে কী ও মানুষ নয়?

একে ‘ইনসেন্সিটিভ’, তার উপর ‘ল্যাংচা’! ননীগোপালের অপমানে ফুটন্ত তেলে ভেজা বেগুনের মত চিরবির জ্বলতে লাগল আলি । ননীও দমবার পাত্র নয়। বংশলোচন দেখলেন অবস্থা বেগতিক।
শেষে গরুর নামকরণ নিয়ে তাঁর বৈঠকখানায় হিন্দু-মুসলিম রায়ট লাগে আর কী! বিতর্কে রাশ টানতে বললেন, তা ননী, তুমিই বল না, যদি পছন্দের কোন নাম থেকে থাকে! কী বলেন নিত্যহরিদা ?
ঠিকই তো। তোমাদের সব ব্যাপারে বাড়াবাড়ি । কিছু পছন্দ হল না তো অমনি ফস্ করে বালি-সুগ্রীবের যুদ্ধ বাধিয়ে দিলে! সহিষ্ণুতা বলে কিচ্ছু নেই দেশটায়! বিড়িতে সুখটান দিতে দিতে বংশলোচনের
কথায় দুলে দুলে সায় দিলেন নিত্যহরি ।
ননীগোপাল শান্ত হল। ডান হাতে রুমালের এক কোণে গুটলি পাকাতে পাকাতে বলল, ওর নাম রাখো ‘দাদরি’।
‘দাদরি’! চমকে উঠল সকলে ।
হ্যাঁ । দাদরার স্ত্রীলিঙ্গ । ওকে যখনই প্রথম দেখি, মাথায় ভিতর একটাই তাল বেজে উঠেছিল। ধা ধি না, না তি না । গরুটির চালচলন, দেহবল্লরীতে অদ্ভুত এক ছন্দ আছে ! পুরো ছয় মাত্রা !

গরুতে ছয় মাত্রা! আঁতকে উঠল নগেন ।
ক্ষ্যাপা ষাঁড়ের মত ঘোঁৎ করে আলি বলল, এ সব কী? গরুর নাম ‘দাদরি’! ছ্যাঃ ---
এতে ছ্যা-ছ্যা’র কী আছে? মানুষের নাম যদি ‘কাদরী’ হতে পারে, গরুর নাম কেন ‘দাদরি’ হতে পারবে না? নিজেকে জাস্টিফাই করতে তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ জানাল ননীগোপাল।
বংশলোচন ঘাঘু উকিল। দু’পক্ষকেই শান্ত করতে বললেন, বেশ তো, দুটো নামই থাকুক। গরুটির ভাল নাম হোক শ্রীমতি লম্বহর্ণ । ডাকনাম, দাদরি । কী চলবে তো ?
নিত্যহরি সায় দিলেন, হ্যাঁ হ্যাঁ চলবে মানে, দৌড়বে !

বৈঠকখানা তখনকার মত শান্ত হল । কিন্তু বংশলোচনের মনের ভিতর অন্য একটা চিন্তা মাছের কাঁটার মত বিঁধে রইল। টেঁপীকে আস্তে আস্তে জিগ্যেস করলেন, হ্যাঁ রে, তোর মা কোথায় রে ?
মা স্নান করতে গেছে ।
যাক্, কিছুক্ষণের জন্য নিশ্চিন্তি !
আরে দাদা, তুমি ফালতু টেনশন নিচ্ছ! বৌদি তো টিভিতে খালি সিরিয়াল দেখেন। খবর শুনলে দেখতে, নিজে থেকে এসে তোমাকে কেমন চুমু খাচ্ছেন! পাশ থেকে অভয় দিতে এগিয়ে এল বিনোদ ।
বংশলোচনের ঠিক স্মরণে আসে না, মানিনী শেষ কবে ওঁকে চুমু খেয়েছেন । একটা চাপা দীর্ঘশ্বাসে আপন জিহ্বাগ্রে নিজের ঠোঁটের নিচের পাটি আলতো চেটে জিগ্যেস করলেন, কেন কী হয়েছে?
দাদা, গরু এখন ভারতবর্ষের এক নম্বর ভিআইপি। এদেশে প্রেসিডেন্টের যত না কদর, গরুর সম্মান বুঝি তার চেয়েও বেশি। দেখো না, কয়েক মাসের মধ্যেই হয়তো সরকার বাঘকে সরিয়ে গরুকে
‘ন্যাশনাল এনিম্যাল’ ডিক্লেয়ার করল বলে!

নগেন ।। শ্রীরামচন্দ্র যেন কলিযুগে গো-অবতারে আবির্ভূত হয়েছেন! একদিন যা ছিল ‘রাম মন্দির’, আজ তাই হয়েছে ‘গরু’!
এ তো পুরো ‘হ য ব র ল’র গপ্প শোনাচ্ছ ! হো হো করে হেসে উঠলেন বংশলোচন ।
বিনোদ ।। এটা তো ‘হ য ব র ল’র-ই দেশ দাদা ।
নিত্যহরি ।। দেশটা পুরো গোল্লায় যাচ্ছে ! কেউ কোন ধর্ম মানে না । ধর্ম আমাদের বর্ম, পরম্পরা ।
বিনোদ ।। জানি না দাদা, ধর্ম আসলে ঠিক কী । আমি গীতা, কোরান কিংবা বাইবেল, তিনটের একটাও পড়িনি । যতদূর বুঝি ওটা একটা বিশ্বাস । অন্তত আর যাই হোক, খাদ্য নয় ।
ননীগোপাল ।। এখন তো শুনি, গরু খেলে মানুষ মারে ।
আলি ।। একমাত্র গরুই বোঝে গরুর যন্ত্রণা ।
নিত্যহরি ।। গরু আমাদের মা ।
বিনোদ ।। দোহাই দাদা, আমার জন্মদাত্রী মা’ই ভাল। এক জীবনে এতজন মা এলে যে বদ হজম হয়ে যাবে! গরু বরং গোয়ালঘরেই থাক্ ।
বিনোদের কথায় খ্যাক খ্যাক করে হেসে উঠল নগেন । কটমট করে তাকালেন নিত্যহরি ।
ননীগোপাল ।। দেশটাকে আজকাল আর চেনা যায় না । পুরো গোয়ালঘর হয়ে গিয়েছে!
আলি ।। গোয়ালঘর নয় । মানুষ মারার কারখানা !
নগেন একে খাদ্যরসিক, তার উপর বায়োলজির টিচার । স্থানীয় একটা স্কুলে ছাত্র পড়ায় ও। একটা সায়েন্স ম্যাগাজিন এডিট করে । ওর কানে ‘ধর্ম’ বেশিক্ষণ সয় না । আলোচনার প্রসঙ্গ টেনেটুনে ও ঠিক
নামিয়ে আনল খাবারের প্লেটে ।
- তবে যাই বলো ভাই, বিফের খাদ্যগুণ কিন্তু অনেক । ফিফটি টু পার্সেন্ট প্রোটিন থাকে গরুর মাংসে । সেখানে একটা আটলান্টিক স্যামনে প্রোটিন আছে ফর্টি ফোর পার্সেন্ট । তাছাড়া বিফে প্রচুর
পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায় । প্রায় ফোর্টিন পার্সেন্ট। সেখানে মাছে আয়রন মেলে মাত্র এক শতাংশ ।

নিত্যহরি নগেনকে খুব একটা পছন্দ করেন না । ওঁ-ও বায়োলজির শিক্ষক । বেশ ক’টা স্কুলে পড়ালেও কোথাওই বেশিদিন টিঁকতে পারেননি । আপাতত বাড়িতেই ছাত্র পেটান ও বয়সে ছোটদের
উন্নতিতে মনে মনে জ্বলেন। নগেনের কথায় রীতিমত ঝাঁঝিয়ে উঠলেন, থামো তো হে ছোকড়া! দুটো পাতা গুগল কপচে বড় গরু চেনাতে এসেছে! কে তোমাকে স্কুলে সায়েন্স ম্যাগাজিনের এডিটর
করেছে? এখুনি তোমাকে বরখাস্ত করা উচিৎ । জানো গরুর নিউক্লিয়াসে ষাটখানা ক্রোমোজোম থাকে! সেখানে মানুষের কোষে রয়েছে মাত্র ছেচল্লিশটা ক্রমোজোম ।
আলি ।। কিন্তু তাই বলে, গরু কখনই মানুষের থেকে বড় হতে পারে না ।
বংশলোচনের বৈঠকখানা যখন ধুন্ধুমার গো-বিতর্কে একেবারে উচ্চগ্রামে পৌঁছেছে, ঠিক সে মাহেন্দ্রমুহুর্তে চরম ব্রেক কষলেন গৃহকর্ত্রী মানিনী দেবী । বড়দের বাক-যুদ্ধের মাঝে টেঁপী যে কোন্ ফাঁকে
অতি উচ্ছ্বাসে লম্বহর্ণকে নিয়ে একেবারে অন্দরমহলে প্রবেশ করেছে, সেদিকে কেউ খেয়াল করেনি । এদিকে ভেজা গায়ে সায়া ব্লাউজ পরে এক মনে লক্ষীর পাঁচালী আওড়াতে আওড়াতে স্নানঘরের
দরজা খুলতেই মানিনী দেখতে পেলেন একটি মূর্তিমান দামড়া গরু একমনে জাবর কাটছে। আর যায় কোথা? গলার স্বর সপ্তমে চড়ে বাড়ি পুরো তুলকালাম!

ও ঝি, ও বাতাসী, শিগগির আয় । দ্যাখ ঘরে গরু ঢুকেছে । বার করে দে ব্যাটাকে, ঝাঁটা মার । দূর দূর –
যেখানে বাঘের ভয়, সেখানে সন্ধ্যে হয় । ঠিক যে আশঙ্কায় প্রমাদ গুনছিলেন বংশলোচন, সে মহা প্রলয় উপস্থিত । মানিনীর সুনামি-নির্ঘোষে উকিল সাহেবের সমস্ত ডিফেন্স নিরীহ খড়কুটোর মত উড়ে
গেল। শেষ পর্যন্ত লম্বহর্ণকে রাতটা বারান্দায় রেখে দেওয়ার দায়িত্ব পড়ল দারোয়ান চুকন্দর সিং-এর কাঁধে । এদিকে গরুকে কেন্দ্র করে ব্যানার্জি দম্পতির বিবাদ উঠল চরমে । মানিনী দেবী সদর্পে
ঘোষণা করলেন, পরদিন সূর্য উঠলেই লোটাকম্বল নিয়ে হাটখোলায় পিত্রালয়ে যাত্রা করবেন । পাল্টা বাউন্সার দিতে বংশলোচনও রাতের আহার পরিত্যাগ করলেন । বৈঠকখানা ঘরে একাকী শুলেন ও
আহত-চিত্তে খানিক বল আনতে ওল্টালেন শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার ‘কর্মযোগ’! আপ্তমন্ত্রে মন কিছুটা শান্ত হলে আলো নিভিয়ে বিছানায় ক্লান্ত শরীর এলিয়ে চোখের পাতা দুটি বন্ধ করলেন ।

চুকন্দর সিং-এর বয়স হয়েছে । এইয়া বড় গোঁফ বাগিয়ে কাঁধে একটা জং-ধরা মান্ধাতার বন্দুক নিয়ে যতই ঘুরুক, শরীরে আদতে বল বলে বিশেষ কিছু নেই । অতএব যতই কষে গিঁট মারুন, গরুর
বাঁধনটি হল দুর্বল । রাতের বেলা বাড়ির সকল মনুষ্য জীব যখন ঘুমিয়ে, লম্বহর্ণের তখন ইচ্ছে হল ভ্রমণের । এক জায়গায় ঠায় কতক্ষণ দাঁড়ানো যায় । তাছাড়া চুরুটের নেশায় ঘুমটিও চটেছে! হাল্কা
বাঁধন সহজে খুলে দিব্য ঘুরতে ঘুরতে এসে পৌঁছল বৈঠকখানায় । হাতের কাছে ছিল গীতা । মহানন্দে তার তিনটি অধ্যায় গলাধঃকরণ করল। এদিকে বাবু বংশলোচন তখন পরম নিদ্রায় স্বপ্নলোকে
নির্ঝঞ্ঝাট বিচরণ করছেন । একদিকে রম্ভা, অন্যদিকে ঊর্বসী । হঠাৎ নাদুস ভুঁড়ির এক ভাঁজে অদ্ভুত এক সুরসুরি অনুভব করলেন । ঘুমের মধ্যেই খিলখিল করে হেসে উঠলেন বংশলোচন, এই ঊর্বসী,
হচ্ছেটা কী! আমার যে কাতুকুতু লাগে! কিন্তু অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হল না। বরং দ্বিগুণ উৎসাহে ফের এক কোমল ও আরও মোলায়েম স্পর্শ হাল্কা আঁচড় কাটল ওঁর নরম শরীরে। হাসতে
হাসতে বংশলোচনের ঘুম ভেঙে গেল । চোখ মেলতেই দেখতে পেলেন একটা প্রকান্ড ছায়া মূর্তি তার সামনে দাঁড়িয়ে । পিছনে একটা লম্বা দড়ির মত বস্তু মাঝে মাঝে ওঁর শরীর স্পর্শ করছে ও সেই
মোলায়েম ঘর্ষণে দেহ-মন্দিরের স্নেহময় দালানের আনাচে কানাচে সুরসুরি জন্ম নিচ্ছে। ঘুমের ঘোরে ও রম্ভা-ঊর্বশীর সঙ্গে সময়যাপনে বংশলোচনের মস্তিষ্ক থেকে তখন বিদায় নিয়েছে লম্বহর্ণ । বরং
মানসিকভাবে তখনও উনি স্বর্গোদ্যানেই পড়ে রয়েছেন । তাই প্রথম প্রতিক্রিয়ায় মনে হল, ঘরে অসুর ঢুকেছে !
তারস্বরে চেঁচিয়ে উঠলেন বংশলোচন, এই কে কোথায় আছো। বাঁচাও বাঁচাও! আমার ঘরে অসুর ঢুকেছে !

গৃহকর্তার তীব্র আর্তনাদে বাড়ির বাকি সকলের ঘুম গেল ভেঙে। মনিব-ভক্ত চুকন্দর সিং হাই তুলে জং-ধরা বন্দুক হাতে হাঁপাতে হাঁপাতে ছুটে এল, কাঁহা হ্যায় অসুর । ম্যায় মা দুর্গাকা বেটা। অসুরকো
আভি খতম কর দুঙ্গা!
আলো জ্বলতেই সকলে দেখতে পেল লম্বহর্ণকে । একমনে বইয়ের পাতা চিবোচ্ছে ।
চুকন্দর সিং জিগ্যেস করল, বাবু কাঁহা হ্যায় অসুর।
বংশলোচন বুঝলেন যাকে গত সন্ধ্যায় এত ঘটা করে বাড়িতে এনেছেন, এটি তারই কীর্তি । অসুর নয়, দাঁড়িয়ে আছে গরু । সহসা আবিষ্কার করলেন লম্বহর্ণ যা চিবোচ্ছে, সেটি আসলে তাঁর বালিশের
পাশে রাখা প্রাণাধিক-প্রিয় গীতা । বংশলোচন রীতিমত কঁকিয়ে উঠলেন, আমার গীতা-আ-আ-আ !!!
চুকন্দর সিং উত্তেজিত হয়ে জিগ্যেস করল, কাঁহা গয়ি আপকা গীতা?
-ওই বদমাশের পেটে!

লম্বহর্ণ মনুষ্য প্রজাতির এত কোলাহলের কারণ কিছুই বুঝতে পারে না । ওর চোখে চারপাশের সব ঘটনাই কেমন সার্কাস ঠেকে! তবে ও বিলক্ষণ জানে দ্বিপদ প্রজাতির এটাই চরিত্র । এদের কাজে
কারণ খুঁজতে যাওয়াই মুর্খামো । এরা অকারণে হাসে, বিনা কারণেই চেঁচায়!
চুকন্দর সিং ধমকের সুরে বলল, এই, অভি নিঁকালো গীতা!
গরুটি দেহাতি দারোয়ানের ভাষা কিছুই বুঝতে পারল না । নিশ্চিন্তে গীতা চিবিয়ে ঢেকুর তুলল ‘হাম্বা’!
বংশলোচন মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন।
ঘেন্টু চোখ বড় বড় করে পরম বিস্ময়ে বলল, ও বাবা, গরুটার মুখ দিয়ে গীতা বেরোল!
চুপ করর্ শুয়ার । সকাল হলেই এটাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করব । রাগে কাঁপতে কাঁপতে বললেন বংশলোচন । মানিনী যেন এই সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন । কর্তাকে আর একটু ডাউন দিতে মুখ
বেঁকিয়ে রসিয়ে রসিয়ে শুনিয়ে গেলেন, আরও আনুক ঘরে সাধ করে গরু । এখন থেকে রোজ গীতা পড়ে শোনাবে!
একে গীতার শ্রাদ্ধ ও তার উপর মানিনীর তীব্র শ্লেষ বুকে নিয়ে ক্ষতবিক্ষত বংশলোচন অপেক্ষা করতে লাগলেন কখন সূর্য ওঠে!

সকাল হতেই চুকন্দর সিং দাসপাড়া থেকে ধরে আনল দুখু মিঁঞাকে। মিঁঞাসাহেব ব্যান্ডমাস্টার । বিয়ে, অন্নপ্রাশন থেকে শুরু করে ঈদ, উপনয়ন, দুর্গাপুজো সব অনুষ্ঠানেই ব্যান্ড বাজাতে সিদ্ধহস্ত । ওর
কাছে অনেক বলে-কয়ে গছানো হল লম্বহর্ণকে । তবে শর্ত রইল, গরুটিকে অন্য কোথাও পাচার, বা কেটে খাওয়া যাবে না। দুখু মিঁঞা মা কালীর মত এক হাত লম্বা জিভ কেটে বলল, আল্লার কসম,
আপনার গরু বহাল তবিয়তে থাকবে। ওর গায়ে একটা আঁচড়ও পড়বে না ।

দেশটার নাম ভারতবর্ষ । এখানে মানুষ বুকে যতই ‘সেকুলার’ খোদাই করে ঘুরুক, মনের ভিতরে রাম ও রহিমের সহবাস কখনই পছন্দ করে না। দুখু মিঁঞা আল্লার কসম খেয়েছিল। ও কথা রেখেছে।
গরুটির গায়ে একটি আঁচড়ও পড়েনি । কিন্তু ওর আল্লা ওকে বাঁচাতে পারেননি । গরুটি নিয়ে যাবার সময়, একদল উগ্র হিন্দুবাদী ঘিরে ধরে দুখু মিঁঞাকে। গরু পাচার সন্দেহে ওকে রাস্তাতেই বেধরক
পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। এভাবে একটা পরিবারকে ভেঙে হিন্দু ঈশ্বরের একদল অন্ধ দালাল গো-মাতাকে রক্ষা করে !

পুরো ঘটনায় বড়ই ব্যথিত হন বংশলোচন । ঠিক করেন, সব নষ্টের গোড়া লম্বহর্ণকে তিনি নিজেই বিদায় করবেন । বিকেলবেলায় বাড়ির সকলে যখন নিজেদের কাজে ব্যস্ত, বংশলোচন কাউকে কিছু
না বলে গরুটিকে নিয়ে চুপি চুপি অন্য রাস্তা দিয়ে হাঁটা লাগালেন । যেখানে তাকে প্রথম খুঁজে পেয়েছিলেন, সেখানেই ছেড়ে দিলেন লম্বহর্ণকে। তবে ছাড়ার আগে চতুষ্পদটির গলায় ঝুলিয়ে দিলেন
একটা নোটিশবোর্ড । তাতে লেখা ‘একদিন খালের ধারে গরুটিকে পেয়েছিলাম। প্রতিপালন করতে না পেরে ওকে ছেড়ে গেলাম। ঈশ্বরের দিব্যি ওকে কেউ মারবেন না’। এতটুকু লিখে হঠাৎ কী খেয়াল
হল, যোগ করলেন আরও দুটি বাক্য --- ‘ওর জন্য অন্যকেও মারবেন না। গরুটির কোন ধর্ম নেই’।

বাঁধন-ছাড়া গরু খালের ধারে দিব্য ঘাস চিবোয় । আর এই ফাঁকে বুকে স্বজন হারানোর একদলা ব্যথা নিয়ে বংশলোচন হাঁটা লাগায় বাড়ির পথে । পিছন ফিরে একবারও তাকায় না। পাছে গরুটির মায়ায়
ফের আটকা পড়ে! চলতে চলতে বিনা পূর্বাভাসে হঠাৎ আকাশ ঘন কালো করে ধেয়ে এল মুষল বৃষ্টি । সেই সঙ্গে পৃথিবী-চেরা বিদ্যুৎ! কড় কড় কড়াৎ! এক বিকট গর্জনে পথের মাঝেই সংজ্ঞা হারালেন
বংশলোচন। জ্ঞান ফিরলে দেখতে পেলেন, মানিনীর কোলে তাঁর মাথাটি পরম যত্নে সুরক্ষিত। শ্রীমতি ব্যানার্জি পতিভক্তিতে গদগদ হয়ে তালপাতার পাখায় বাতাস বইছেন। প্রাথমিকভাবে বংশলোচনের
সবকিছুই কেমন স্বপ্ন মনে হল! অনতিদূরে হঠাৎ দেখতে পেলেন লম্বহর্ণ দাঁড়িয়ে । তড়াক করে লাফিয়ে উঠে প্রায় তেড়ে যাবার উপক্রম, তুই হতভাগা আবার এখানে?
মানিনী দেবী দু’হাতে বিরত করলেন বংশলোচনকে, আহাহা ও কী করছ? ওর জন্যই তো তোমাকে ফিরে পেলাম গো । ওই তো এসে তোমার খবর দিল। সাক্ষাৎ দেবদূত !
বংশলোচন কিছুই বুঝে উঠতে পারেন না । এ জগৎসংসারে সব কিছুই ওঁর কাছে বড় বিচিত্র ঠেকে । তবে মনে মনে ভাবেন, লম্বহর্ণ বুঝি সত্যই ভোলানাথের আশির্বাদপুষ্ট। না হলে মানিনীরও ভোল
পাল্টে যায়!

গরুটি বাড়িতেই থেকে গেল । ওর কদর এখন পরিবারে সকলের ঊর্দ্ধে; বলা যায় রীতিমত ভিআইপি! ওর শিং দুটো কেমিক্যাল সোনা দিয়ে বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে । মাঝে মাঝে হাওয়া বদলের জন্য
এতকালের সবেধন নীলমণি সবুজ এম্বাসাডরের পরিবর্তে বংশলোচন লম্বহর্ণের গাড়িতে চড়ে বসেন । গরুর গাড়ির ছাদে লাল বাতি জ্বলে আর মন্ত্রী-আমলার বাহন কিংবা এম্বুলেন্সের মত সাইরেন
বাজিয়ে গান গায় । বংশলোচন বুঝতে পারেন দিন বদলেছে। ইদানিং অ্যাম্বাসাডরের তুলনায় গরুর গাড়িতেই কৌলিণ্য বাড়ে অধিক । গরুর সৌজন্যে উকিলবাবুর কপাল খুলে গেছে । গরুটির গোবর
ঘুঁটে হয়ে যাবার পর ওগুলিকে বাজারে সোনার থেকে বেশি দামে বেচেন । এতে নয় নয় করে বেশ ভালই উপুরি আয় হয় । বংশলোচনের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স ফুলেফেঁপে ওঠে ।

মানিনী দেবীর চালচলনেও বেশ একটা অদ্ভুত পরিবর্তন এসেছে । আজকাল কিটি পার্টি, বিয়ের অনুষ্ঠানে সোনার গয়না পরেন কম, সাজেন বেশি ঘুঁটের অলঙ্কারে । দশজনে ওঁর দিকে বেশ সম্ভ্রমের
চোখে তাকায় । মিসেস আগরওয়াল আর আগের মত ট্যাঁকশ ট্যাঁকশ কথা শোনায় না । আজকাল ওঁর সামনে কেমন একটা ভিজে বেড়ালের মত ঘুরে বেড়ায় । মানিনী মনে মনে বংশলোচনের তারিফ
করেন । লম্বহর্ণই ওঁকে কয়েক ডজন গোলে জিতিয়ে দিয়েছে! রাতের বেলা বিছানায় শুয়ে বংশলোচনের স্নেহময় বিপুল বুকে আঙুলের ডগায় বিলি কাটেন, ভাগ্যিস সেদিন বাড়িতে গরুটা এনেছিলে!
আমি তোমার সঙ্গে কী দুর্ব্যবহারই না করেছি! আমায় ক্ষমা করে দাও ।

মানিনীর সোহাগে বংশলোচনের ময়দা-মাখা থলথলে চেহারায় চোরা সুরসুরি লাগে। পুলকিত চিত্তে খিলখিল করে ওঠেন, আরে ছি ছি, কী যে বলো! সবই ভোলানাথের কৃপা!
নিন্দুকে জানলা এঁটে বলে, বিচিত্র দেশ ভাই! সবার উপর গরু সত্য, তাহার উপর নাই!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪৬
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দীপনের দীপ নেভে না

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯


ছবিঃ সংগৃহীত
আজকে সামুর অন্ধকার ব্লগার নামে খ্যাত ফয়সাল আরেফিন দীপনের মৃত্যু দিবস। ২০১৫ সালে আজকের এই দিনে জঙ্গি হামলায় দীপন মারা যান নিজ প্রকাশনীর কার্যালয়ে । যে ছেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বজলুল হুদাকে জবাই করে হাসিনা : কর্নেল (অব.) এম এ হক

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৯

মেজর বজলুল হুদাকে শেখ হাসিনা জবাই করেছিলেন।

(ছবি ডিলিট করা হলো)

শেখ মুজিবকে হত্যার অপরাধে ২৮শে জানুয়ারী ২০১০ এ মেজর (অব.) বজলুল হুদা সহ মোট ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×