somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার প্রিয় পাগলা সাদ্দাম এখন না ফেরার দেশে

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তুই কি আমাকে স্বার্থপর ভাবিস তোর খোঁজ-খবর ঠিকমত নেইনা দেখে? ভাবতে পারিস--সেটা তোর ব্যপার। কিন্তু স্বার্থপরতার সাথে মিশে থাকা আমার অভিমান টুকু কেন তোর চোখে পড়েনা ? এইতো সেইদিন ১৯৯২ইং ইরাক কুয়েতের যুদ্ধের পর পর ই পৃথিবীতে


আগমন তোর, সে থেকেই তোর-আমার রক্তওআত্নার বন্ধন।সেই নাদুস নুদুস পিচ্চি বাবুটি ই আজকের সাদ্দাম। ১০(দশ)ভাই-বোনের সবার ছোট ছিলে তুই, স্বাভাবিক ভাবেই সবার আদরের মধ্যমনি্ ছিলে।
মনেপরে তোর?
তোর প্রথম স্কুল জীবনের একদিন ... ক্লাশের অন্য বন্ধুদের সাথে খেলাধুলায় টেবিল থেকে পড়ে তোর ঠোট কেটে যায়?....তোর এ অবস্থা দেখে বাবা যা করলেন!মোরগীর ছানাকে আক্রমন করলে মোরগী যা করে তেমন ই করলেন স্কুলের শিক্ষকদের ....বাবা যদিও শিক্ষক,সেই দিন পিতৃত্বের কাছেও হার মানে তার পেশাদারীত্ব।এরপর কখন যে সময় গড়িয়ে গেল জানিনা। ভাই ছাড়াও কখন যে তুই আমার অনেক বেশি আপন হয়ে গেলি। আমিও কি তোর আপন হয়েছিলাম? এর উত্তর টা আমি জানি রে। হয়ত আমার লেখাটা তোর হাতে পৌছবেনা,পড়লে প্রতিবাদ করবি রাগ করবি আমাকে একরোখা,স্বেচ্ছাচারী বলবি কিন্তু আমি জানি,আমি সত্যি বলছি তুই কখনই আমাকে তোর ভাই ছাড়া কাছের কোন বন্ধু ভাবতে পারিসনি।কিন্তু আমি চেষ্টা করেছি, এই যে...কিছুদিন আগেও তোকে আনমনা দেখে বাইকে করে বাড়ী থেকে শহরে নিয়ে কোন এক চা স্টলে,১টি গোল্ডলীফ ১টি বেনসন নিয়ে,বেনসনটি তোর হাতে দিয়ে বলেছিলাম ছেলে বড় হলে বন্ধু হয়ে যায় !তুই কি সমস্যায় আছিস আমাকে বল....?হঠাৎ হঠাৎ মন খারাপ করা বিষন্ন দিনগুলোতে তুই-আমি ছিলাম কতটা কাছাকাছি!তখনো কিছু বলিসনি।
এত বেশি অর্ন্তমুখী ছিলাম আমি সবসময়! কিংবা কেন জানি তোর-আমার চিন্তা-ভাবনা গুলো একই সরলেখা না হয়ে বক্ররেখা হয়ে যেত! আমি তোর উপর বিরক্ত হতে পছন্দ করতাম,তোর সাথেই চিৎকার করতাম,ঝগড়া করতাম আবার আলতো ভালবাসার পরশে তোকেই কিন্ত কাছে টেনেছি বারবার ।
কেমন আছিস তুই ? জানি আমাদের ছেড়ে একটু ও ভাল নেই। ভাল থাকতে ই পারিসনা। কারন আমরা যে তোকে খুব মিস করছি । তুইও আমাদের মিস করছিস।জানিস আমরা একটুও ভালো নেই । আমি বাবা-মা,ভাই-বোন এমন কি বাড়ীর পিচ্চিরা ও। তুই এমন পাষাণ কেন ?তোকে নিয়ে কত স্বপ্ন" দেখেছিলাম ! কতকিছু ঠিক করে রেখেছিলাম।
মনেপরে তোর?
কোন এক ১লা বৈশাখে জেমস্ এর কনর্সাট আছে ফ্যান্টাসী কিংডমে ফোন করে তোকে নিয়ে আসলাম কুমিল্রা থেকে। দু’ভাই নেচেগেয়ে কি উপভোগ ই করলাম।আমার পছন্দের কিংবা আমার ভাললাগা সবকিছু তুই অনুসরন করতে ,এটা যেমন আনন্দ দিত আমাকে! তেমনি আমার ভাললাগা সবকিছু আজ আমি ঘৃনা করি।জানিস সাদ্দাম, বাবা-মা কি চেয়েছিলেন ? তোর দ্বারা মানুষের অনেক কল্যাণ হবে ! কিন্তু তুই কিভাবে বাবা মা এর এই স্বপ্নটাকে চিরতরে নিজের হাতে কবর দিলে ? আমরা তো এটা চাইনি ! আমরা তো তোর মতো স্বার্থপর হতে পারলাম না ! আসলে তুই আমাদের ভাল ই বাসিস নি অভিনয় করেছিলে মাত্র ! কিভাবে পারলে আমাদের ছেড়ে ঐ সুদূরে একা একা যেয়ে থাকতে ? তোর কি আমাদের জন্য একটুও মন খারাপ হয়না ? আসলে কি জানিস আমরা কেউই চাইনি তুই একা একা অত দূরে?বিশ্বাস কর সাদ্দাম! তুই চলে যাবার পর কোনদিন আর মা আর হাসে নি, হয়ত কোনদিন হাসবেও না ! জানিস পাগলা তোর খাটে এখন মা কাউকে ঘুমাতে দেয়না,মা নিজেই ঘুমান। আমরা চেয়েছিলাম তুই আমাদের কাছেই থাকবি। কোথাও যাবেনা আমাদের ছেড়ে ।তুই থাকিস নি ..মনে করেছিস তুই আমাদের ছেড়ে থাকলে ভালো থাকবে ! না রে ভাই, না ! আমাদের ছেড়ে তুই ভাল নেই ! ভালো থাকতে পারিস না ! তুই কি এখনো কান্না করিস? এখনও কি ঘুমেরমাঝে কেঁদে ওঠিস ? মা 'কে খুঁজে বেড়াস ভাই আমার ? তোর তো অনেক ঠাণ্ডা লাগতো ,হাঁচি আসতো ,নাক বন্ধ হয়ে যেতো ! এখনও কি হয় ? ওখানে নাকি খুব শীত? সব সময় গরম কাপড় পড়ে থাকবি, বুঝেছিস।জানিস পাগলা! মা তোর ছবিগুলো রোজ দেখে আর নিজে নিজে বলে, তুই আগের থেকে অনেক রোগা হয়ে গেছিস নাকি। ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করিসনা ? আরও কি বলে জানিস?আমার দিব্যি রইল, ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করিস বাবা।তোকে ত আমি হাড়েহাড়ে জানি....তোর রান্না করার খালাকে বলবি তোর তরকারীতে ঝাল কম দিতে। ঝাল তো তুই একেবারেই খেতে পারতিস না। তোর মনে আছে? সেই যে তুই তখন স্কুলে পড়িস? তরকারীতে একটু ঝাল হয়েছিল বলে তোর সেকি রাগ! কঁড়াইটা ধরে ছুঁড়েই ফেলে দিয়েছিলি। কি করবো বল ? আমরা তো আর তোকে খেয়াল রাখতে পারিনা ।ভাই আমার, তুই কি জানিস?
আর আমি ? আমি তোর সাথে খু......উ......ব রাগ করে আছি।


কেউ এখন আর আমার সাথে ঝগড়ার অাড়ি দেয় না ,আমাকে নতুন ষ্টাইলের পোলো র্শাট, র্টি-র্শাট চেয়ে কেউ জ্বালায় না। তোকে ছাড়া কার ভাল লাগে বল ? তুই কি আমার সাথে রাগ করে চলে গেলে পাগলা ? একদিন আমার কাছে হোন্ডার চাবি চেয়েছিলে ,দেইনি বলে 'রাগ করে চলে গেলে আমাদের এত কষ্ট দিয়ে! আমার সঙ্গে দেখা হবার আগেই তুই চলে গেলি পাগলা।আমার প্রিয় সাত ভাইয়ের সবার অাদরের ছোট্ট ভাইটি কিনা চলে গেলো না ফেরার দেশে!তোকে হারনোর কষ্ট,আর চলে যাবার সময় তোকে না দেখতে পাওয়ার কষ্ট অনন্ত কাল আমাকে কুড়েকুড়ে খাবে।সাদ্দাম, তোর অভাব আমাদের সংসারে কোনোদিন পূরণ হবার নয় ।বাবা-মা প্রতিদিন নামাজ পড়ে জোড়ে জোড়ে কাঁদে । আল্লাহর কাছে তোর জন্য ক্ষমা চায় ।আজও আমরা সবাই তোর অপেক্ষায় রয়েছি ।জানি তুই আর কোনোদিন আমাদের মাঝে আসবিনা ,তা জেনেও আমরা ত আর তোকে দূরে রাখতে পারছিনা ভাই ! তুই আমাদের মাঝে ফিরে আয়। আর যদি বেশি অভিমান করেই থাকিস তবে যেখানে অাছিস সুখে থেকিস ! আজ আমরা তোকে দোয়া ছাড়া আর কিছুই দিতে পারবো না। তুই আমাদের খুব আদরের ছিলি , সেই তুই আজ সবার আগে বিদায় নিলে ,এই সুন্দর পৃথিবী থেকে ! তাইতো কবির ভাষায় বলতে হয়.........
“সবচেয়ে যে শেষে এসেছিল , সেই গিয়েছে সবার আগে চলে ” তোর মৃত্যু আমরা কেউ ই মেনে নিতে পারিনি ভাই ! আর তোকে নিয়ে আমাদের স্বপ্ন পুরন হলনা ।তুই পরবাসে ভাল থাকিস ,আল্লাহ তুমি আমাদের কলিজার টুকরা ভাইকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করো
ইতি
তোর বড়
বিলু ভাইয়া
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:২৪
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×