১. ২০০৮ - এর নির্বাচনে অবিশ্বাস্য ফলাফলে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করল। তখনকার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা তখন হিরো, রোল মডেল। কাউরে পরোয়া করেন না, কাউরে ভয় পান না টাইপ ইসি। কোন এক উপ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী (সম্ভবত আলী রাজু) গিয়ে প্রার্থীর পক্ষে প্রভাব ও প্রচারণা করেছিলেন যা ছিল নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন। বেকুব জনগণের পাশাপাশি বেকুব সাংবাদিকরাও শামসুল হুদার কাছে এইটার ব্যপারে তেনার পদক্ষেপ দেখার আগ্রহ জানাল। তিনিও বলেছিলেন, যেই হোক না কেন আইন লঙ্ঘন হলে তার শাস্তি হবে। কিন্তু না। ক্ষমতাসীন দলের একজন মন্ত্রীকে তিনি কিছুই করতে পারেননি...
২. সাকা চৌধুরী তার সাফাই সাক্ষী হিসেবে নাম দিয়েছিলেন এক বিচারপতির। সেই বিচারপতি আবার সাংবিধানিক কারণে সাক্ষ্য দিতে পারেননি। - এই ব্যপারটা নিয়ে টক শো-তে জাফর উল্লাহ বলেছিলেন, বিচারপতি তো সাক্ষ্য দিতে পারতেন। এটা কি বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদা হলো না? ব্যস। এই কথা টা ট্রাইবুন্যাল -এর নজরে আদালত অবমাননা। পরে জাফর উল্লাহকে কোর্টে গিয়ে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল। এরকম অনেক আদালত অবমাননার কারণে অনেক জনকে জেল খাটতে হয়েছে অথবা কোর্টে যেতে হয়েছে...
৩. গত কয়েকদিন ধরে ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে রায়ের পর আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এম পি, নেতারা যেভাবে বাজে ভাষায় প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্তব্য করছেন তাতে দেখা যাচ্ছে কোন আদালত অবমাননা হচ্ছে না! হয়তো বা ক্ষমতাসীন দলের কারো দ্বারা আদালত অবমাননা হয় না - এরকম কোন অঘোষিত আইন বিদ্যমান আছে। নাহলে, প্রধান বিচারপতি এখন পর্যন্ত একজনকেও ডেকে আনছেন না কেন কোর্টে? একবার পড়েছিলাম, হাইকোর্টের বিচারপতি রা যেখানেই যান সেখানে কোর্ট বসতে পারে। তাহলে এখন পর্যন্ত কোন ব্যক্তিকে কেন তলব করা হচ্ছে না? সাহস করে তো সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তাহলে আরেকটু সাহস করে সমন জারি করলেই পারেন...
৪. ফিরে যাই শিরোনামের কথায়। আইন না মানলে কোন দেশে শান্তি আসে না, সুশাসন আসে না। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের ছেলে মদ খেয়ে গাড়ী চালানোর পরও গ্রেফতার হয়েছিল আর অভিভাবক হিসেবে টনি ব্লেয়ারকে গিয়ে ছাড়িয়ে আনতে হয়েছিল ছেলেকে। সৌদি আরবের প্রিন্স আর প্রিন্সেসের শিরচ্ছেদের কথা তো অনেকেরই জানা। আইন মানলে ও সঠিক প্রয়োগ হলে দেশে সুশাসন হবে আর না হলে দেশ রসাতলে যাবে...
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:০৮