এপ্রিল মাসে বাঙ্গালীরা একটি উৎসব বড় করে উদযাপন করে, তা হলো ১৪ই এপ্রিল। অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ । ভারতে মুসলিম শাসনামলে হিজরী পঞ্জিকা অনুসারেই সকল রাজকীয় কাজকর্ম পরিচালিত হতো কিন্তু বঙ্গ এলাকায় চাষাবাদ ও এ জাতীয় অনেক কাজ ঋতুনির্ভর।যা আরবী বৎসর বা মাসের সাথে মিল হতো না। এজন্য সম্রাট আকবার তার দরবারের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিদ আমির ফতুল্লাহ শিরাজীকে হিজরী চান্দ্র বর্ষপঞ্জীকে সৌর বর্ষপঞ্জীতে রূপান্তরিত করার দায়িত্ব প্রদান করেন।
সম্রাটের সিংহাসনে আরোহনের বছর ৯৬৩ হিজরী সাল থেকে বঙ্গাব্দ গণনা শুরু হয়। বঙ্গে প্রচলিত মাসের শুরু হতো চৈত্র মাস দিয়ে কিন্তু ৯৬৩ হিজরী সালের মুহাররাম মাস ছিল বাংলা বৈশাখ মাস, এজন্য বৈশাখ মাসকেই বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস এবং ১লা বৈশাখকে নববর্ষ ধরা হয়।
মোগল সময় থেকেই পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কিছু অনুষ্ঠান করা হতো। প্রজারা চৈত্রমাসের শেষ পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করতেন এবং পহেলা বৈশাখে জমিদারগণ প্রজাদের মিষ্টিমুখ করাতেন এবং কিছু আনন্দ উৎসব করা হতো। এছাড়া বাংলার সকল ব্যবসায়ী ও দোকানদার পহেলা বৈশাখে ‘হালখাতা’ করতেন। পহেলা বৈশাখ এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এটি মূলত: রাষ্ট্রিয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক বিভিন্ন নিয়ম-কানুনকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে কাজ-কর্ম পরিচালনার জন্য নির্ধারিত ছিল। এ ধরনের কিছু সংঘটিত হওয়া মূলত ইসলামে নিষিদ্ধ বলার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।
তবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো কাজ থেকে বিরত থাকা সকলের উচিত।