somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওই লোকের জায়গায় আমি থাকলে হয়তো রংপুরের দুর্ঘটনা আজ ঘটতো ন। (একটি সচেতনতা মূলক পোস্ট)

২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওই লোকের জায়গায় আমি থাকলে হয়তো রংপুরের দুর্ঘটনা আজ ঘটতো না:

১) মিশরে যখন ছিলাম তখন প্রায়ই গভীর রাতে মাইক্রোবাসে চড়া হত। আর রাতের কায়রোর সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য অধি কাংশ সময়ে ড্রাইভারের পাশের সিটে বসতাম। মিউজিকের তালে তালে ১৩০/১৪০ কিমি গতিতে যখন মাইক্রোবাস চলতো তখন মাঝেমাঝে গাড়ি দোলা দিতো। সেই দোলা খুব ভাল লাগতো। কিন্তু যেহেতু গভীর রাত সেহেতু ড্রাইভারের গতিবিধির উপর সব সময়েই নজর রাখতাম। যদি কখনো কোন ড্রাইভারকে ঘুম ঘুম চোখে দেখতাম তখন ড্রাইভারের সাথে সারাক্ষন কথা বলতাম। একের পর এক কথা উঠায়ে তাকে বিজি রাখতাম যাতে ঘুম চলে না আসে। কখনো যদি দেখতাম ড্রাইভার বেশি কথা বলতে চাচ্ছে না, তখন বিষয়টা আরো ভয়ঙ্কর মনে হতো। এর মানে ড্রাইভারের চোখে ঘুম/তন্দ্রার পরিমান বেশি কাজেই কথা বলার রুচি নাই, এবং এইটাই আমাদের যাত্রীদের জন্য বেশী ভয়ের কারণ। তখন আমি জোরে জোরে বলে উঠতাম এই তুমি ঘুমাইতাছ কেন? চোখে পানি দিয়ে আসো, চোখে পানি দিয়ে আসো। এইভাবে যতখন ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে চোখে মুখ ধুয়ে পরিস্কার করে না আসতো ততক্ষন আমি চেচামেচি করতাম এবং গাড়ীর অন্যান্য যাত্রীদের মনযোগ আকর্ষন করতাম। ড্রাইভার ঘার তেরা হলে তখন বাকি যাত্রীদের জানায় দিতাম আর বলে দিতাম ড্রাইভার ঘুমে ঘুমে গাড়ি চালাচ্ছে, আমি চোখ ধুইতে কি ধোয় না। তখন সবাই মিলা বললেই ড্রাইভার ঘুম না আসলেও বাধ্য় হয়ে চোখ মুখ ধুয়ে একটা সিগারেটে টান দিয়ে আবার ড্রাইভিং শুরু করতো। এমন পরিস্থিতি আমি অনেক সৃষ্টি করেছি। তাই আমি দেশে আসলেও কখনো রাতে গাড়িতে চড়তে হলে ড্রাইভারের পাশে বসার চেষ্টা করি। যাতে ড্রাইভারের দিকে নজর রাখা যায়।


২) আজ রংপুরে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া এক যাত্রী বলেছে তাদের গাড়ীর ড্রাইভার নাকি ঘুমাচ্ছিলো। নিউজটা পড়ে আমার মিশরের ওই দিন গুলির কথা মনে পরে গেল। ওই ড্রাইভারকে ঘুমাতে দেখা লোকটির জায়গায় আজ যদি আমি থাকতাম হয়তো দুর্ঘটনা হত না। কারন, আমি যদি একবার দেখতাম ড্রাইভারের চোখে ঘুম তাহলে আমি কখনই ড্রাইভারকে আর ঘুমাইতে দিতাম না, বা ঘুমন্ত অবস্থায় গাড়ি চালাতে দিতাম না। ড্রাইভারকে ঘুমাতে দেখা ওই লোকটি যথেষ্ট সচেতন ছিলেন না, তাই তিনি যথেষ্ট পদক্ষেপ নিতে পারেন নাই, বা নিতে চান নাই বা নেয়ার প্রয়োজন বোধ করেন নাই। হয়তো বা তিনি মনে মনে ড্রাইভারকে ঘৃনা করেছেন কিংবা কিছু বলতে চাইছেন কিন্তু লজ্জায় বলতে পারেন নই। আর এই লজ্জার কারণ আমাদের সমাজ ব্যবস্থা। আমাদের দেশের সচেতন কেবল আপুর উড়না (আপু আপনার উড়না হোন্ডা /রিক্সার চাক্কায় পেচাইলো) পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। অর কথাও এই সচেতনতা দেখা যায় না। চোখের সামনে নেতারা এসে গরিব দোকানদারের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে যাচ্ছে, কেউ কিছু কয় না। রিক্সাওয়ালাকে বখাটেরা মারছে কেউ কিছু কয় না, একাকী মেয়েকে টিজ করছে কেউ কিছু কয় না, ব্যাংক লোট হয়ে যাচ্ছে কেউ কিছু কয় না, সর্বোপরী দেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে কেউ কথা কয় না।

এই কথা না কওয়া রোগ বা অসচেতনতা থেকে মুক্ত হতে হবে সবার, ঘুম থেকে ডেকে তুলতে হবে ঘুমন্ত সকলকে। ড্রাইভারকে, শিক্ষককে, ধুপাকে কিংবা প্রয়োজনে সরকারকে। মানুষ যত বেশি সচেতন হবে তত বেশি দুর্ঘটনা থেকে মুক্তি পাবে। সেটা বাস প্লেন নৌকা হোক, কিংবা হোক কোন বিল্ডিং কিংবা রাষ্ট্র ধস। বলা হয়, নবাব সিরাজুদ্দৌলাকে যখন বন্দী করে নিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো তখন মাঠে ঘাটের লোকজন তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিল, কেও কোন কথা কয় নাই। যদি তাদের একজন মানুষও আওয়াজ তুলতো, ধর ধর আমাদের নবাবরে বাঁচা, আমাদের নবাবরে বাঁচা তাহলে একজনের দেখাদেখি সবাই এগিয়ে আসতো, এবং নবাবকে সেখানেই মুক্ত করতে পারতো, এবং এটা করতে পারলেই ভারত বর্ষ ২০০ বছরের ইংরেজি গোলামী থেকে মুক্তি পেতো।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৩৫
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এতো কাঁদাও কেনো=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৬




আয়না হতে চেয়েছিলে আমার। মেনে নিয়ে কথা, তোমায় আয়না ভেবে বসি, দেখতে চাই তোমাতে আমি আর আমার সুখ দু:খ আনন্দ বেদনা। রোদ্দুরের আলোয় কিংবা রাতের আঁধারে আলোয় আলোকিত মনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। পৃথিবীকে ঠান্ডা করতে ছিটানো হবে ৫০ লাখ টন হীরার গুঁড়ো

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০২




জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে বেড়েছে তাপমাত্রা। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তাই উত্তপ্ত এই পৃথিবীকে শীতল করার জন্য বায়ুমণ্ডলে ছড়ানো হতে পারে ৫০ লাখ টন হীরার ধূলিকণা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×