একটা বৈঠক করছিলেন। এমন সময় পাশ দিয়ে
যাচ্ছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি
আনান। হঠাৎ তিনি পাশ কেটে বললেন-
আপনারা কি নিয়ে আলোচনা করছিলেন?
কথার উত্তরে বুশ - ভাবছি আমরা ইরাকে টন
টন বোমা ফেলে ৫ লক্ষ লোক হত্যা করবো,
আর একটা সাইকেলের টিউব ফুটো করে
দিবো। কফি আনান অবাক হয়ে বললেন-
সাইকেলের টিউব ফুটো করার রহস্যতো
বুঝলাম না!!!
বুশ হাস্যকরভাবে ব্লেয়ারকে উদ্দেশ্য করে -
বলেছিলাম না, সাইকেলের টিউব কেন ফুটো
করব সবাই এটার রহস্য সন্ধানে নেমে যাবে,
কিন্তু কেন ৫ লক্ষ লোক হত্যা করলাম এটা
নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলবে না। ইন্ডিয়া পানির
ব্যারেজ খুলে দেয়ার সাথে সাথে
একটি হাতিও নামিয়ে দিলো। মিডিয়া এখন
হাতি নিয়ে ব্যস্ত, হাতি ৩ দিন পানিতে
সাতার কাটছে, হাতি না খেয়ে ক্লান্ত হয়ে
গেছে, হাতির পেছনে ছুটছে
ভারতীয়রা! ........... আর
এদিকে হাজার হাজার মানুষ অভুক্ত,
অর্ধভুক্ত
থেকে দিন কাটাচ্ছে টিনের চালে,
মিডিয়ার
সেদিকে কোন পাত্তাই নেই! মিডিয়াও
হাতি উদ্ধারে লাইভ সম্প্রচার করে কিন্তু
হাজার হাজার বন্যাপ্লাবিত মানুষের লাইভ
সম্প্রচার করে না!!! ইন্ডিয়ার হাতির মুল্য
আছে, আমাদের দেশের মানুষের মুল্য নেই!!
(উপরের লেখাটুকু সংগৃহীত,)
এবার আমার কথাটা সংক্ষেপে বলে ফেলিঃ-
তখনও কিছু মানুষের হাতের বিরিয়ানির গন্ধ পুরোপুরি যায়নি। যেই হাতে একদিন আগেই জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকীর শোক দিবসকে উৎসবে পরিণত করে হাজার হাজার গরু জবাইয়ের মাধ্যমে বিরিয়ানি উৎসব করেছে সেই হাতেই বঙ্গবাহাদুরের জন্য চোখের পানি মুছতে হবে তারা হয়ত ভাবেনি। এই চোখের পানি কিন্তু মোটেও শোকের না বরং মেকি এবং আরেকবার বিরিয়ানির পর হাত চাটার আনন্দের।
"বঙ্গবাহাদুর"
১৯৭১ সালের পর এতো সাহসী উপাধি আর কেউ পেয়েছে বলে মনে হয় না। এইসব সাহসী উপাধি অর্জন করতে কি পরিমাণ সাহস আর দেশপ্রেমর দরকার সেটা একবার চোখ বন্ধ করে ভাবুন তো!
জী, যেটা হয়ত আপনার কল্পনার অতীত সেটাই বানের জলে ভেসে আশা একটা ভারতীও হাতি আমাদের মিডিয়াকে নাচিয়ে-কুদিয়ে অর্জন করে নিয়েছে।
তাই টিভি চ্যানেল, নিউজ পেপার, অনলাইন পোর্টাল, ফেসবুক স্ট্যাটাস সর্বত্র শোক আর শোক। ইহলোক থেকে কেঁদে ভাসিয়ে "বঙ্গবাহাদুর"এর প্রস্থানের গল্প।
আবার এখন সুপ্রিম কোর্টের একজন সম্মানিত আইনজীবী বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করেছে। রিট আবেদনে হাতিটির মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কাছ থেকে এক কোটি টাকা আদায় করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করার নির্দেশনা চেয়েছেন। এবং ওই হাতিটি জীবিত উদ্ধারে ব্যর্থ কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চেয়েছন।
অবশ্য একজন সহকারী বন সংরক্ষক এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত দল হাতিটির মৃত্যুর মূল কারণ অনুসন্ধানে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
এখন এই হাতি নিয়ে যদি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের এক ধাপ হয়ে যায় তাতেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না কারন এটা ভারতীয় হাতি।
যাইহোক, বন্যায় উন্মাতাল মানুষের জন্য কাঁদার মানুষ কম। "বঙ্গবাহাদুর"এর জন্য কাঁদার মানুষ বেশি। শোকে মুহ্যমান মনুষ্য পশু সমাজ। উত্তরবঙ্গে বানের পানিতে কত মানুষ, গরু-ছাগল, হাস-মুরগি, কুত্তা-বিলাই ভেসে আসলো-গেল সেই খবর এই খবরের মাঝে কোথাও জায়গা না পাওয়ারই কথা।
কারন বঙ্গবাহাদুরের মৃত্যু বলে কথা।
তারপরও বাঙ্গালির কপাল ভাল যে, আরেকটা নতুন শোক দিবসের ঘোষণা আসে নাই।
শেষ কথা হচ্ছে ভারতের হাতি হয়ে জন্মানো সৌভাগ্যের, কারন হাতির নিউজ মিডিয়ায় দুই মাস কাভারেজ পায়, এই দেশে মানুষ হইয়া জন্ম নেয়া পাপ আর গরিব হয়ে জন্ম নেয়া আজন্ম পাপ,
হোক সে হেফাজতি অথবা শাহবাগী।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৩৮