একা! চরম বাস্তব এক শব্দ। জাগতিক সত্যি এক বাস্তবতা! জন্ম একা, মৃত্যু একা, জমজ হয়ে জন্মালেও পৃথিবীতে আসা হয় একটু আগে নয় একটু পরে, সেই একাই! তার পর জীবনের যতই উত্থান পতনই হোক না কেন, যত ঘটনাই ঘটুক না কেন এই ক্ষুদ্র জীবনে, ঘূরে ফিরে সেই একাই! একা থেকে মুক্তির জন্য মানুষ অনেক ব্যস্ততার সৃষ্টি করে, হাজারো কাজের তাল বাহানা বের করে। আসলে কাজ হয় না কোন, ঘুরে ফিরে বৃত্তের কেন্দ্রে সেই একাকিত্তে।
শত রকমের কাজের মাঝে এই ব্যস্ততা কিছুটা সময় হয়তো ভুলিয়ে রাখে! দূরে রেখে অনেক অনেক কিছু থেকে – জগৎ, সংসার, জাগতিক সব কর্মজজ্ঞ। কিন্তু শেষ-মেশ শেষ হয় গিয়ে সেই একাতেই। মানুষ তার উন্নতির শিখরে কিংবা সমৃদ্ধির চরমে হয়তো উঠে আবার সময়ের সাথে ঘূরে ফিরে তাকে ফিরে আসতেই হয় সেই নিজস্ব বলয়ে। অন্যদিকে দারিদ্ররতার কড়াল গ্রাসে চলে যায় হয়তো অনেক অনেক নীচেঁ – দূরে... কুড়েঁ কুড়েঁ খায় শুন্যতা, তারপরও আবার ঘূরে ফিরে সেই একই জায়গায়... একাকিত্তের মাঝে! যার যার মত তার একাকিত্তের নিজস্বতায়! একা।
সুস্থ্যতার সময় কিংবা অসুস্থ্যতায়, ঘরে কিংবা বাইরে অথবা হাসপাতালে গেলেও সেই একা। একসাথে দলবেঁধে কেউ হাসপাতালে ভর্তি হতে যায় না! মানুষ একসাথে আনন্দ করতে পছন্দ করে, দুঃখ করতে না! অসুস্থ্যতায় ভুগতে হয় একাই, যেতে হয় ডাক্তার দেখাতে কাউকে সাথে নিয়ে। তারপর হয়তো ক্লিনিক বা হাসপাতাল , সেই একাই! ফল ফলাদি বা হরলিক্স নিয়ে আত্মীয় বন্ধু বান্ধব লোকজন দেখতে আসে, কিছুক্ষন থেকে সান্ত্বনা দেয় একটু। ভাল হয়ে যাবেন শুনতে হয়, কষ্টের একটু হাসি দিতে হয়। তারপর চলে যায় সবাই, চলে গেলেই যেই কি সেই – একা!
যখন কেউ বিছানায় পরে যায়, কাছের মানুষেরা কেউ কেউ হয়তো কাছে থাকে কিছুক্ষন বা কিছুদিন। আর যদি নড়া চড়ার ক্ষমতা গেল, একবারে অচল হলে হয়তো দুই চারদিন সাথে, তারপর ধীরে ধীরে মানুষটাকে ছেড়ে দেয়া হয় আলাদা করে, কিংবা ভাঁড়া করা নার্সের হাতে। আবার সেই একা! তারপর যদি না ফেরার দেশে যেতে হয়, আবার সেই একলা একটা মানুষকেই সাদা কাপড়ে পেঁচিয়ে, দোয়া দরুদ পড়ে কবরে নামিয়ে রেখে আসা হয়। আবার সেই একা! একাকিত্তের অমানিশায় .।.।.।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৩