হযরত নূহ (আঃ) ইসলামের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের বর্ণনা অনুসারে একজন নবী ছিলেন। কুরআনে নূহ শিরোনামে একটি পূর্নাঙ্গ সূরা নাযিল হয়েছে যেখানে তার এবং সমকালীন বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বলা হয়েছে। মুসলমানগন তাকে হযরত নূহ আলাইহিসালাম নামে সম্বোধন করেন। খ্রিস্ট ধর্মের মূল ধর্মীয় গ্রন্থ বাইবেলও তার সম্পর্কে বিশদ বিবরণ পাওয়া যায়।ইসলাম ধর্মের বর্ণনা অনুসারে নূহ আল্লাহর আদেশে বিশাল এক নৌকা নির্মাণ করেন এবং প্রত্যেক প্রানীকুল এক জোড়া করে এবং তার সময়ের ঈমানদার অর্থাৎ যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল তাদের নিয়ে সাগরে রওনা দেন। তারপর আল্লাহ তার গোত্রে মহা প্লাবনের সৃষ্টি করেন। আর তাতে পাহাড় পর্বতও পানির নিচে তলিয়ে যায়। এবং কাফের সহ সব প্রানীকুল ধ্বংস হয়ে যায়। পরে আল্লাহর নির্দেশে প্লাবনের পানি কমে গেলে নবী তার সহযাত্রীদের নিয়ে আবার নতুন করে জীবন ধারণ করা শুরু করেন ।
ইসলামের বর্ণনায় হযরত আদম (আঃ) এর ব্বংশের নারী পুরুষরা তার প্রকৃত শিক্ষা অনুসারে এক আল্লাহর ইবাদত এবং অন্যান্য আচার পালন করতে থাকে।আদম (আঃ) এর সন্তানদের মধ্যে অনেক ধার্মিক ব্যাক্তি ছিলেন যাদেরকে তার সমপ্রদাদের মানুষ সম্মান ও মান্য করত। বলা হয় যে সেসকল সম্মানিত ব্যাক্তিদের মৃত্যুর পর তাদের সম্প্রদায়ের অনেকে তাদের শোক এবং হতাশা থেকে সেসব মানুষদের স্মরনে মূর্তী তৈরী করে।কালক্রমে তাদের পরবর্তী ব্বংশধররা সেসকল মূর্তী তৈরীর আসল কারন ভুলে গিয়ে শয়তানের প্ররচনায় তাদের পূজা করতে শুরু করেন। সেসব পথভ্রষ্ট মানুষদের সঠিক দিক নির্দেশনা দেওয়ার দায়িত্ব দিয়ে আল্লাহ হযরত নূহ (আঃ)কে তাদের মাঝে পয়গম্বর হিসাবে প্রেরন করেন। পবত্রি কোরানে ৪৩ বার হযরত নূহ (আঃ) এর কথা বলা হয়েছে। ৭১ নম্বর সূরা তার নামে নামকরণ করা হয়েছে। বাইবেলে বর্ণিত নোয়াহ ছিলেন প্লাবন পূর্ব যুগের দশম শ্রদ্ধেয় নেতা। তার পিতা ছিলেন একজন গোত্রপতি। মাতার পরিচয় জানা যায়নি। নোয়াহর বয়স যখন পাঁচশত বছর তখন সেম, হামম এবং যাপেট নামে তার তিন পুত্রের জন্ম হয়।বুক অব জেনেসিসের ৬-৯ পরিচ্ছেদে নূহের প্লাবনের বিশদ বর্ণনা আছে। বর্ণনায় করা হয়েছে পৃথিবীর মানুষের বিশাল পাপের কারণে ঈশ্বর পৃথিবীতে মহাপ্লাবনের মাধ্যমে পৃথিবী ধ্বংস করেন।নূহের নৌকায় তুলে নেওয়া পৃথিবীর সমস্ত প্রানীর জোড়া থেকে পুনরায় তাদের সৃষ্টি করেন। ঈশ্বর এই মর্মে প্রতিজ্ঞা করেন যে তিনি আর কোন প্লাবন সৃষ্টি করবেন না।
নূহের নৌকার সাহায্যে সৃষ্টিকর্তা জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে নূহ (আঃ) তার পরিবার এবং পৃথিবীর প্রাণীকূলকে রক্ষা করেন। সৃষ্টিকর্তা নূহ (আঃ) কে আর্ক বা নৌকা নির্মানের পূর্ণাঙ্গ নির্দেশণা দিয়েছিলেন। এটা গফার কাঠ দ্বারা নির্মিত এবং বাইরে পিচ দেওয়া যাতে তিনটা ডেক এবং অন্তঃস্থ প্রকোষ্ঠ ছিলো। এটা ৪৫০ ফুট লম্বা, ৭৫ ফুট চওড়া এবং ৪৫ ফুট উঁচু। এর প্রবেশ পথ একদিকে।বাইবেলীয় বর্ণনায় ভাসমান প্রকোষ্ঠটিকে বলা হয়েছে আর্ক নোহা'স আর্ক, যা দ্বারা নূহের সিন্দুক বোঝায়। আল কোরআনে আর্কের জায়গায় সাফিনা বলা হয়েছে । যদিও বিশ্বব্যাপী প্লাবণ বা মহাপ্লাবণের কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।তবুও অনেকেই নূহের নৌকার খূঁজতে প্রত্বতাত্ত্বিক অনুসন্ধান চালিয়েছেন। নূহের আর্কের কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তথ্যসত্র ইন্টারনেট ।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:২৯